Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকার দুই সিটির পরিচ্ছন্নতা কর্মী রাতদিন যাদের রাস্তায় কাটে প্রয়োজনে তাদের নেই কোন ঠাঁই

প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি মেয়রের ক্লিন ও গ্রীণ ঢাকা কর্মসূচীতে কাজ করছে অন্তত ৮ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মী। কিন্তু দায়িত্বরত অবস্থায় তাদের পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায়। ঝড়-বৃষ্টিতে কিংবা বিরূপ আবহাওয়ায় রাস্তার পাশে তাদের আশ্রয় নেয়ার কোন ব্যবস্থা নেই।
সরিজমিনে দেখা যায়, পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা প্রতিদিন ভোর ৪টার মধ্যে হাতে ঝাড়ু, বেলচা ও ট্রলি নিয়ে রাস্তা, গলিপথ পরিষ্কারের অভিযানে নামেন। ভোর ৪টা থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা নিয়োজিত থাকেন শহর পরিচ্ছন্ন রাখার কাজে। এসব পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সাপ্তাহিক ছুটি নেই বলেও জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারিতে রয়েছেন, ঢাকার দুই সিটির ৭ হাজার ৯৫৯ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণে ৫ হাজার ২১৬ জন এবং ঢাকা উত্তরে ২ হাজার ৭৪৩ জন। ডিউটিতে শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নেয়া হয়েছে বিশেষ কৌশল। ঢাকা দক্ষিণে কর্পোরেট মোবাইল সিমে ডিজিটাল সার্ভারের মাধ্যমে ভোর রাত থেকে কর্মস্থলে হাজিরা নিশ্চিত করা হচ্ছে। আর ঢাকা উত্তরে নির্ধারিত এলাকায় ডিউটিতে হাজির থাকা বাধ্যতামূলক রয়েছে।
সূত্র মতে, দুই সিটির পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের অর্ধেকের বেশি মহিলা ও বয়স্ক কর্মী রয়েছেন। ডিটিকালে ঝড় বৃষ্টিতে একটু আশ্রয় নেয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এমনকি পায়খানা, প্রশ্রাবে বেগ হলে তা সারার মতো কোন ব্যবস্থা নেই। অথচ ঢাকার দুই সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তাদের জন্য রয়েছে নানা সুযোগ-সুবিধাসহ পরিপাটি অফিস।
সূত্র মতে, চাকরির শেষ বয়সে অধিকাংশ পরিচ্ছন্নতা কর্মী কঠিন এবং জটিল রোগে আক্রান্ত হেয়ে থাকেন। কিন্তু অর্থের অভাবে অনেক সময় স্বাভাবিক চিকিৎসাও গ্রহণ করতে পারেন না তারা। এদের মধ্যে দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মীর সংখ্যা বেশি। চাকরি শেষ পেনশন কিংবা গ্রাচ্যুইটির কোন সুযোগ নেই। এমনকি মৃত্যুর পরও তাদের পরিবার মেয়রের বিশেষ তহবিল থেকে কিছু টাকা নিয়ে বিদায় হন।
এদিকে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সংগঠন স্ক্যাভেঞ্জার্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ এবং ঢাকা উত্তরের সভাপতি আবুল কালাম বলেন, বর্তমান সরকার এবং ঢাকার দুই মেয়র কর্মচারীবান্ধব।
সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করেই গত ২৪ মে এক প্রজ্ঞাপণের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দৈনিক মজুরি দ্বিগুণ করেছে। দক্ষ পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের মজুরি দৈনিক ২৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা এবং অদক্ষ পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের মজুরি দৈনিক ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে সরকারের এই আদেশ ঢাকার দুই মেয়র বাস্তবায়ন করেছেন।
পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ওই দুই নেতা আরো বলেন, সরকার এবং দাতা সংস্থার আর্থিক সহায়তায় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে ছোট আকারে টিন সেডের স্থাপনা তৈরি করে দিলে ঝড় বৃষ্টিতে আমরা পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা একটু আশ্রয় নিতে পারব। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে সরকারের অনেক খালি জায়গা পড়ে আছে।
এই বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা নৌবাহিনীর কমোডর ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য রাস্তার পাশে ছোট ছোট স্থাপনা তৈরির জায়গা আছে কি-না তা আমার জানা নেই। এই বিষয়ে আরও খোঁজ-খবর নিয়ে দেখতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণের অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের এই বিষয়টি নিয়ে মেয়র মহোদয়ের সাথে কথা বলতে হবে। যেখানে সুবিধাজনক জায়গা পাওয়া যাবে সেখানে চেষ্টা করা হবে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার। তিনি বলেন, মেয়র মহোদয় সব সময় কর্মচারীদের প্রতি সদয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকার দুই সিটির পরিচ্ছন্নতা কর্মী রাতদিন যাদের রাস্তায় কাটে প্রয়োজনে তাদের নেই কোন ঠাঁই
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ