নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মিরপুরের ¯øথ উইকেটে প্রথমে বলহাতে দাপট দেখাল অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা। জস হ্যাজেইলউড, মিচেল স্টার্ক ও অ্যান্ড্রু টাইয়ের মাপা লেন্থের বোলিংয়ের সামনে আফিফ হোসেনকে ছাড়া সবাইকে দেখাল অসহায়। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৩১। পাওয়ার হিটিং ব্যাটিংয়ের যুগে এ রানটাকে টি-টোয়েন্টি সুলভ মনে হলো না। হারটাও হয়তো স্বাগতিকদের জন্য শুধুই সময়ের ব্যাপারই মনে হচ্ছিল। কিন্তু যারা টাইগার স্পিনারদের ওপর আস্থা রেখেছিলেন, তাদের কথা ভিন্ন। সমর্থকদের হতাশ করেননি সাকিব আল হাসান, নাসুম আহমেদ ও মেহেদী হাসানরা। ইটের বদলে পাটকেলের কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এ খেলাটা দেখার পর নিশ্চয়ই তাকে পেসারের বদলে স্পিনারের লড়াই বলাই যায়। এ লড়াইয়ে শেষপর্যন্ত জয়টা হলো স্পিনারদেরই। জয় পেল বাংলাদেশ। স্বস্তি পেল ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি চোখ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম জয় পেল লাল-সবুজরা।
গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ১৩১ রানে আটকে দেয় অজিরা। জবাবে ১০০ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারিরা। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩১ রানে জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। আজ একই ভেন্যুতে একই সময়ে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামার আগে নিশ্চয়ই এ জয়ই হবে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
টস হেরে শুরুটা অবশ্য ভালো হয়েছিল বাংলাদেশের। মিচেল স্টার্কের দ্বিতীয় বলেই ছয় মেরেছিলেন মোহাম্মদ নাঈম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে ৩০ রান করেই ফিরতে হয় তাকে। হ্যাজলউড এসে বেঁধে রেখেছিলেন সৌম্য সরকারকে। সেই চাপ থেকে বেরুতে গিয়েই শেষ পর্যন্ত আউট সৌম্য। অন্যদিকে সাকিবও রানের জন্য ভুগছিলেন। মাহমুদউল্লাহ এলেন, কিন্তু রান খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনিও। ডিপ কাভারে ক্যাচ দিয়ে অধিনায়ক আউট ২০ বলে ২০ রান করে। হ্যাজলউডের সেøায়ারে সাকিব ইনসাইড এজ হয়ে আউট হয়েছেন ৩৩ বলে ৩৬ রান করে। শামীম হোসেন এবার কোনো ঝড় তুলতে পারলেন না, স্টার্কের ইয়র্কার তার ইনিংস শেষ করে দিল দ্রæত। শেষ দিকে আফিফ চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। স্টার্ককে কাভারের ওপর দিয়ে ও পরে স্কুপ করে দারুণ দুইটি চার মেরেছেন, শেষ পর্যন্ত স্টার্কের ইনিংসের শেষ বলে বোল্ড হয়েছেন ১৭ বলে ২৩ রান করে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে হ্যাজেইলউড সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন। স্টার্কে শিকার ২টি উইকেট। এছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা ও টাই।
এরপর অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ে টাইগার স্পিনারদের জয়জয়কার। প্রথম বলেই উইকেট বাংলাদেশের। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে দুর্দান্ত শুরু এনে দিলেন শেখ মেহেদী হাসান। এই স্পিনারের প্রথম বলে আউট হয়ে গেছেন অ্যালেক্স ক্যারি। এখানেই শেষ নয়, দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশ পেয়েছে আরেকটি উইকেট। সাকিব বল তুলে নিয়েই করেছেন উইকেট উদযাপন। মোয়েসেস হেনরিকসকে বোল্ড করে তৃতীয় উইকেট এনে দিয়েছেন তিনি। অফ স্টাম্পের বল লেগ সাইডে টেনে খেলতে গিয়ে বোল্ডের শিকার এই ব্যাটসম্যান। ফেরার আগে ২ বলে করেন মাত্র ১ রান।
তবে অস্ট্রেলিয়ার ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন আসলে নাসুম আহমেদ। মিরপুরে চলেছে নাসুম-শো। এই বাঁহাতি স্পিনার একের পর এক উইকেট তুলে নিয়ে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়া-বধের। ৪ ওভারের বোলিং কোটা পূরণ করেছেন এই স্পিনার। তার বোলিং ফিগারটা এমন- ৪-০-১৯-৪। শুরুটা করেছিলেন ওপেনার জশ ফিলিপেকে দিয়ে। এরপর তুলে নেন ম্যাথু ওয়েড ও অ্যাশটন অ্যাগারের উইকেট। আর সবশেষে এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট মিচেল মার্শকে তুলে নেন।
মার্শ টিকে থাকায় অস্ট্রেলিয়া আশার আলো দেখতে পাচ্ছিল। কিন্তু নিজের শেষ ওভারে এই ব্যাটসম্যানকেও নাসুম ফেরান শরিফুল ইসলামের হাতে ক্যাচ বানিয়ে। ফেরার আগে মার্শ ৪৫ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় করেন ৪৫ রান। কার্যত তার বিদায়েই নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়। এরপর বাকিটা ছিল সময় শুধুই অপেক্ষার। অবশেষে সেই অপেক্ষা শেষ হয় মুস্তাফিজের বলে স্টার্কের বোল্ড হয়ে ফিরে যাওয়ায়। অস্ট্রেলিয়া ১০৮/১০। নাসুম ৪টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান মুস্তাফিজ ও শরিফুল ইসলাম। এছাড়া মেহেদী ও সাকিব পান একটি করে উইকেটের দেখা।
সিরিজ শুরুর আগে নানা প্রশ্নবানে বিদ্ধ ছিল মাহমুদউল্লাহর দল। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে দল হিসেবে কেমন? বিশ্বকাপে কেমন করবে? দলে কেমন পরিবর্তন দরকার? এ জাতীয় নানান প্রশ্নই উঠেছিল। তবে সব জবাবই টাইগাররা দিল এই জয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।