করোনা মহামারির ধাক্কায় বেকার হওয়া ও আয় কমে যাওয়া বাসিন্দাদের ভাড়া দিতে না পারায় আবাসিক বাসভবন থেকে উচ্ছেদ ঠেকাতে উদ্যোগ নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এ ধরনের ভাড়াটিয়াদের যেন ভবন মালিকরা উচ্ছেদ করতে না পারেন, সেজন্য সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তবে গত শনিবার মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে। ফলে লাখ লাখ আমেরিকান বাসা উচ্ছেদ হয়ে গৃহহীন হয়ে পড়ার মুখে রয়েছেন। এ নিয়ে দেশটির অসংখ্য মানুষ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে বসবাস করছেন। খবর নিউইয়র্ক টাইমস ও রয়টার্সের।
কংগ্রেসে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি উঠলেও রিপাবলিকানদের বিরোধিতায় সেটা পাশ করানো সম্ভব হয়নি। কংগ্রেস ভবনের এক নারী কংগ্রেসম্যানসহ কয়েক জন এই দাবিতে অবস্থানও করেছেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
হোয়াইট হাউজ স্পষ্ট করেছে, তারা এককভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। কারণ এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। অ্যাসপেন ইনস্টিটিউট এবং কোভিড-১৯ এভিকশন ডিফেন্স প্রজেক্ট জানিয়েছে, সাড়ে ৬৫ লাখ বাসভবনে দেড় কোটির বেশি বাসিন্দা বাস করেন যাদের ভাড়া বকেয়া রয়েছে। বাড়ির মালিকরা তাদের কাছে ২ হাজার কোটি ডলার পাবেন।
এ অবস্থায় ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদে সরকারি নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ায় বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত বৃহস্পতিবার রাতেও শেষ চেষ্টা হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসকে অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে তারা এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ায়।
করোনার ডেলটা ধরন ছড়িয়ে পড়ায় মানুষকে গৃহহীন হওয়ার ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে এই অনুরোধ করেছেন তিনি।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের অধিবেশন শেষ হয় ভাড়াটিয়াদের সুরক্ষার বিষয়টি আলোচনা না করেই। আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর একটি প্রস্তাব কংগ্রেসে তোলা হলেও রিপাবলিকান দলের সদস্যদের বিরোধিতায় তা আটকে যায়। এ পরিস্থিতিকে ভয়ানক বলে বর্ণনা করেছেন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তিনি বলেন, এর সমাধান না হলে ভাড়া দিতে না পেরে ভাড়াটিয়া বাবা-মাকে তাদের সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় বসতে হবে।
উল্লেখ্য,
করোনা সংক্রমণ বাড়ার পরপর ২০২০ সালের মার্চ থেকে বাসা থেকে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের ওপর এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা চলে আসছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে গত সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) ভাড়াটিয়া উচ্ছেদে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এরপর কয়েকবার এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়। জুনে সিডিসি জানায়, তারা এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়াতে আর প্রস্তাব দেবেন না। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স।