গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। তাদের মধ্যে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বিপুল বিশ্বাস নামে এক বাইসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে রাত সাড়ে ১০টায় চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
উদ্ধারকারী পথচারী যুবরাজ বলেন, বনানীর একটি ফার্মেসিতে বিপুল চাকরি করতেন। ডিউটি শেষ করে দক্ষিণখানের আশকোনার বাসায় সাইকেল চালিয়ে ফিরছিলেন তিনি। কুড়িল বিশ্বরোডের এয়ারপোর্ট সড়কে পৌঁছালে দ্রুতগামী একটি প্রাইভেটকার বাইসাইকেলের পেছনে ধাক্কা দিলে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকেন বিপুল। পরে আমি তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ধাক্কা দিয়েই প্রাইভেটকারটি পালিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, বিপুল দক্ষিণখানের আশকোনার মোল্লারটেক এলাকায় থাকতেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জে।
এছাড়া গতকাল দুপুরে মতিঝিলের ফকিরাপুল কাঁচাবাজারে একটি হোটেল থেকে মো. রাকিব নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের চাচা নিজামুদ্দিন বলেন, আমার ভাতিজা কয়েকদিন আগে রাগ করে বাড়ি থেকে ঢাকায় আসে। ঢাকায় আসার পরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বাড়ি থেকে ফোন দিলে সে কোথায় আছে তা বলত না। গতকাল সকালে খবর পেলাম মতিঝিলের একটি হোটেল থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি আরো বলেন, আমাদের বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার বড়হারজি গ্রামে। তার বাবার নাম মো. হিমু।
মতিঝিল থানার এসআই জহুরুল ইসলাম বলেন, সকালে সাড়ে ১০টায় মতিঝিলের ফকিরাপুল কাঁচাবাজারে নিউ মিতালী হোটেল থেকে আমাদের খবর দেয়া হয়। দ্রæত আমরা ঘটনাস্থলে যাই। আমরা গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করি। পরে তাকে আমরা ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, গত ২৬ জুলাই সে এই হোটেলে রুম ভাড়া নেয়। হোটেলের ৪০৪ নম্বর রুমে সে থাকত। সকালে তার রুমের দরজা বন্ধ পায় হোটেল কর্তৃপক্ষ। পরে আমাদের খবর দেয়। পরিবার জানিয়েছে, ৭-৮ দিন আগে পরিবারের সঙ্গে রাগ করে সে ঢাকায় এসেছে।
এদিকে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না করানোয় রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় এক তরুণী আত্মহত্যা করেছেন। তরুণীর মা বলেন, গত বছর এইচএসসি পাসের পর তাকে সিটি কলেজে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু সে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়নি। বোনের মতো সে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চেয়েছিল। তাকে বললাম, তোমার বাবা তো এখন চাকরি করেন না, এত টাকা দিতে পারবেন না। অভিমানে বুধবার বিকেলে গোসল করতে গিয়ে বাথরুমের ঝরনার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করল।
ওই তরুণীর বাবা বলেন, আমি আগে সরকারি চাকরি করতাম। এখন অবসরে আছি। বড় মেয়ের মতো ছোট মেয়েও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চেয়েছিল। কিন্তু তাকে বেসকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর মতো টাকা আমার কাছে নেই। এ অভিমানে সে বাথরুমে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।