Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চার বছর ধরে কীর্তিনাশার ভাঙনের কবলে, ৫০০ মিটার রাস্তা বিলীন

শরীয়তপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০২১, ১:৫৪ পিএম

পদ্মা নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে শাখা নদীগুলোতেও পানি বেড়ে স্রোত সৃষ্টি হয়েছে। শরীয়তপুর সদর উপজেলার পদ্মার শাখা নদী কীর্তিনাশার তীরে শরীয়তপুর-চন্দ্রপুর-শিবচর সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কারণে সড়কের হাজরাসার ও চরপাতানিধি এলাকা দিয়ে চার বছর আগেই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গত এক সপ্তাহে সড়কের কিছু অংশ ধসে যাওয়ায় পায়ে হেঁটে চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুর জেলা সদর থেকে পাশের মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা সদরে যাতায়াতের জন্য ২০০০ সালে শরীয়তপুর-চন্দ্রপুর-শিবচর সড়কটি পাকা করা হয়। শরীয়তপুর পৌর এলাকার পালং বাজার থেকে চন্দ্রপুর বাজার হয়ে সন্তোষপুর পযর্ন্ত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি শিবচর-মাদারীপুর সড়কের শিলারচর এলাকায় গিয়ে মিলেছে। ওই সড়কের সদর উপজেলার পৌর এলাকার রাজগঞ্জ বালুর মাঠ হতে আড়িগাঁও পযর্ন্ত ২ কিলোমিটার এলাকা কীর্তিনাশা নদীর তীরে অবস্থিত। এ সড়ক দিয়ে সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মানুষ জেলা সদরসহ ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর যাতায়াত করে। ওই সড়কের হাজরাসার ও চরপাতানিধি এলাকার পাঁচ‘শ মিটার অংশ ইতিমধ্যে কীর্তিনাশা নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে।
২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে সড়কের ওই অংশের দুই‘শ মিটার ভাঙনের কবলে পরে। তখন সড়কটি দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও শরীয়তপুর পৌরসভা থেকে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কারণে মোটরসাইকেল, ভ্যান-রিকসা চলাচল করতে পারত।
ভাঙন রোধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় গত চার বছরে সড়কের পাঁচ‘শ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
গত শুক্রবার সড়কের আরো ৫০ মিটার অংশ কীর্তিনাশা নদীতে বিলিন হয়ে যায়। যার ফলে এখন সড়কটি দিয়ে পায়ে হেঁটেও মানুষ চলাচল করতে পারছে না।
পাউবো সূত্র জানায়, কীর্তিনাশা নদীটি নড়িয়ার পদ্মা নদী থেকে মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ নদীতে মিলিত হয়েছে। ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ নদীটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে ১৩ কিলোমিটার ভাঙন রোধ করার জন্য গত বছর শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৩১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।
শরীয়তপুর পৌরসভার চরপাতানিধি এলাকার বাসিন্দা মোকসেদ মল্লিকের বসত বাড়ির ১৮ শতাংশ জমি। গত চার বছরে তার ১০ শতাংশ জমি নদীতে বিলিন হয়েছে। ৮ শতাংশ জমিত আর বসত বাড়িটি ভাঙনের হুমকীতে পরেছে।
মোকসেদ মল্লিক বলেন, চার বছর যাবৎ ভাঙছে,কিন্তু কেউ ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের বসত বাড়ি বিলিন হয়ে গেলে কোথায় আশ্রয় নেব?
সদর উপজেলার ছাব্বিসরশি গ্রামের এমদাদ হোসেন জেলা শহরের একটি টেইলারিং দোকানের শ্রমিক। বাড়ি থেকে প্রতিদিন দোকানে যাতায়াতে শরীয়তপুর-চন্দ্রপুর-শিবচর সড়ক ব্যবহার করতে হয় তাকে।
এমদাদ হোসেন বলেন, চার বছর যাবৎ সড়কটি ভাঙছে। এটা রক্ষা করতে কেউ এগিয়ে আসেনি। ঝুকি নিয়ে আমরা ভ্যান-রিকসায় চলাচল করতাম। গত বছরের ভাঙনে তাও বন্ধ হয়ে যায়। এর পর পায়ে হেটে ওই ৫০০ মিটার অতিক্রম করতাম। এখন তাও বন্ধ। আমাদের কি পরিমান দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে তা বলে বুঝাতে পারব না।

শরীয়তপুর পানি উন্নয় বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম আহসান হাবীব বলেন, কীর্তিনাশার যে সকল স্থানে ভাঙন রয়েছে সেখানে বালু ভর্তি ১৮০০ জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর নদীটির ১২ কিলোমিটার অংশে ভাঙন রোধের স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া নেয়া হবে। ৩১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছে। শিঘ্রই তা অনুমোদনের জন্য একনেকের সভায় উপস্থাপন করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভাঙন

২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ