Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাফনের ১১১ দিন পর নোয়াখালী সদরের শুল্লুকিয়ায় কবর থেকে গৃহবধূর লাশ উত্তোলন

নোয়াখালী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২১, ৬:৩৭ পিএম

নোয়াখালী সদরে লাশ দাফনের ১১১দিন পর ময়না তদন্তের জন্য এক গৃহবধূর লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে। পুত্রবধূ হত্যার অভিযোগে স্বামী ও সৎ ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক নারী।

রোববার দুপুরে উপজেলার উত্তর শুল্লুকিয়া গ্রামের জগাবন্ধুদের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে জেলা প্রশাসেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তারিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে সুধারাম মডেল থানার পুলিশ গৃহবধূর লাশ উত্তোলন করে ।

জেলা প্রশাশসেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তারিকুল ইসলাম জানান, আদালতের নির্দেশে ৩ মাস ২১দিন পর গৃহবধূ মারজাহান বেগমের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে আজই পুনরায় একই স্থানে লাশটি দাফন করা হবে।

সুধারাম মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নুরনবী জানান, সৎ ছেলে মো. সোহাগের স্ত্রী মারজাহান বেগমকে হত্যার অভিযোগে গত ১৬ জুন নোয়াখালীর আমলি আদালতে স্বামী আবদুল খালেক, সৎ ছেলে মো. সোহাগ ও রাজু এবং সৎ মেয়ের স্বামী জামাল উদ্দিনকে আসামি করে মামলা করেন রহিমা বেগম।

গত ৩ এপ্রিল রাতে সৎ ছেলে মো. সোহাগের স্ত্রী মারজাহান বেগমকে হত্যার পর বিষপানে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ করেন মামলার বাদি রহিমা বেগম। তার দাবি, হত্যার বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করায় তাকে দুই মাসের বেশি সময় ঘরে আটকে রাখা হয়। পরে কৌশলে স্বামীর বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি আদালতে মামলাটি করেন।
এজাহারে বলা হয়, স্বামী, দুই সৎ ছেলে এবং সোহাগের স্ত্রী মারজাহান ও তার তিন শিশু সন্তান নিয়ে রহিমার সংসার। হত্যার কয়েক মাস আগে সোহাগের পরকীয়ার সম্পর্ক নিয়ে স্ত্রী মারজাহানের সঙ্গে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। এ নিয়ে মারজাহানকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতনসহ মেরে ফেলার হুমকি দিত সোহাগ।
গত ৩ এপ্রিল দুপুরে পুত্রবধূ মারজাহানকে বাড়িতে রেখে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান রহিমা। মারজাহান বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে রাত ২টা দিকে মোবাইল ফোনে তাকে জানান স্বামী আবদুল খালেক। পরদিন সকালে বাড়িতে ফিরে তিনি জানতে পারেন সোহাগের পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় আসামিরা মারজাহানকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, মারজাহানের গলা, হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতে চিহ্ন দেখতে পান তিনি। ওই সময় প্রতিবাদ করলে স্বামী ও ছেলেরা তার মুখ চেপে ধরে ঘরে নিয়ে বলে, এসব বললে পুলিশ এসে তাকেসহ সবাইকে থানায় নিয়ে যাবে। এসব বললে তাকে মেরে ফেরার হুমকিও দেয়া হয়।
রহিমা অভিযোগ করেন, শিশু সন্তানদের জমি ও নগদ টাকা দেয়ার শর্তে স্থানীয়ভাবে মারজাহানের বাবা-মায়ের সঙ্গে সমঝোতা করেন আসামিরা। পরে থানায় খবর না দিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করা হয়। মারজাহানের মরদেহ ধোয়ার সময় নারীরা আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা জানালে তাদের সঙ্গেও সমঝোতা করা হয় বলে অভিযোগ করেন রহিমা।

এদিকে, গত ৬ জুলাই ওই মামলার প্রধান আসামি মো. সোহাগকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে সুধারাম থানার পুলিশ। মামলার অপর তিন আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়েছেন।
এ মামলার সুষ্ঠ তদন্ত করে অভিযুক্ত আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন মামলার বাদি রহিমা বেগম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাশ উত্তোলন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ