পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়া বাতিল করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যম-িত ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত চট্টগ্রামের সিআরবি সুরক্ষায় আদেশ চেয়ে আদালতে দেওয়ানী মামলা হয়েছে। এতে ১৪টি সরকারি সংস্থার নির্বাহী প্রধান ও দুইটি পেশাজীবী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বিবাদী করা হয়। গতকাল সোমবার জনস্বার্থে মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু। তিনি জানান, আদালত মামলা গ্রহণ করে বিবাদীদের প্রতি সমন জারির আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় বিবাদীরা হলেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব, চট্টগ্রাম ওয়াসার সচিব, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক স্বাস্থ্য, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক, বিস্ফোরক দ্রব্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক, কর্ণফুলী গ্যাসের সচিব, রেলওয়ের জিএম (পূর্বাঞ্চল) ও এস্টেট অফিসার, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার।
চট্টগ্রামের উন্মুক্ত সবুজ পাহাড়-টিলা ঘেরা সিআরবিতে হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের মত বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের মধ্যেই এ মামলাটি দায়ের করা হলো। গতকাল হাসপাতাল নির্মাণ বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে নাগরিক উদ্যোগ। সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি প্রশাসক, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনের নেতৃত্বে মাথায় গাছের লতা-পাতা বেঁধে সবুজ ধ্বংসের প্রতিবাদ জানানো হয়। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য, প্রকৃতি ধ্বংস করে কাউকে বাণিজ্যিক ফায়দা লুটতে দেয়া হবে না। চাটগাঁবাসীকে সাথে নিয়ে সিআরবি সুরক্ষার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। তিনি সবুজ ধ্বংসের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান। সিআরবি সাত রাস্তার মাথায় নানা প্রতিবাদী কর্মসূচি পালিত হয়। গান-কথামালায় প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা। সচেতন নাগরিক সমাজ, বাসদ, সিপিবি, নারীমুক্তি কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
এদিকে তথ্য গোপন করেই চট্টগ্রাম নগরীর সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ঘেরা সবুজ চত্বর সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের আয়োজন সম্পন্ন হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) রেলের জমিতে হাসপাতাল নির্মাণের ইনভাইটেশন ফর বিড (আইএফবি) প্রকাশ করা হয় তাতে সিআরবির নাম ছিল না। পরে কৌশলে হেরিটেজ অ্যান্ড কালচার ঘোষিত সিআরবির নাম ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এ ধরনের ঘটনাকে আইনের দৃষ্টিতে ফৌজদারি অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন আইন বিশেষজ্ঞ আওয়ামী লীগ নেতা ও বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল।
সিআরবিতে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও ১০০ আসনের মেডিকেল কলেজ এবং একটি নার্সিং ইনস্টিটিউট নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হতেই এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়। প্রতিবাদী কর্মসূচিতে সামিল হন সর্বস্তরের মানুষ। সংরক্ষিত একটি এলাকায় এ ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের প্রক্রিয়ায় বিস্মিত এবং হতবাক সচেতন মহল। সব মহলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে হাসপাতাল নির্মাণ প্রক্রিয়া থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়েছে এবং সেইসাথে বন্দরনগরীর ফুসফুসখ্যাত সিআরবির ইতিহাস-ঐতিহ্য, প্রাণ-প্রকৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধ্বংস করে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ প্রক্রিয়ায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি উঠেছে।
ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, সিআরবির নাম কী করে, কারা এখানে যুক্ত করল, কীভাবে মন্ত্রণালয় চুক্তি করল, তার তদন্ত হওয়া দরকার। পূর্বাঞ্চল রেলের সদর দপ্তর সিআরবিকে ২০০৮ সালে প্রকাশিত গেজেট প্রজ্ঞাপন অনুসারে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী জায়গা (হেরিটেজ) হিসেবে ঘোষণা করেছে। সিডিএর মাস্টার প্ল্যানেও জায়গাটি হেরিটেজ অ্যান্ড কালচার হিসেবে চিহ্নিত। এতে করে আইনগতভাবে প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত জায়গার আকৃতি প্রকৃতি পরিবর্তন করা বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ক ও ২৪ অনুচ্ছেদ কর্তৃক সংরক্ষিত বিধায় পরিবর্তন করা যাবে না। তিনি বলেন, চট্টগ্রামবাসী হাসপাতাল চায়। ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বরের আইএফবি নোটিশ অনুযায়ী রেলওয়ের মালিকানাধীন চট্টগ্রামের যেকোনো জায়গায় হাসপাতালটি হোক। কোনোমতেই সেটি সিআরবিতে করা যাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।