নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
১৪ বছরের পথচলা। বাংলাদেশের ক্রিকেটের অনেক উত্থান-পতন, কত বাঁক বদলের স্বাক্ষী। দেশের ক্রিকেটের এগিয়ে চলার নায়কদের একজনও। বর্ণাঢ্য সেই ক্যারিয়ারে এবার দারুণ একটি মাইলফলকে পা রাখতে চলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে পূর্ণ করতে যাচ্ছেন ২০০ ম্যাচ। শেষ মুহূর্তে কোনো চোট বা কিছু বাধা হয়ে না দাঁড়ালে আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ হবে মাহমুদউল্লাহর ২০০তম ওয়ানডে।
২০০৭ সালের ২৫ জুলাই কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে তার ওয়ানডে অভিষেক। একশ ওয়ানডে পূর্ণ হয় ৭ বছর পর, ভারতের বিপক্ষে মিরপুরে। আরও ৭ বছর পর হতে যাচ্ছে দুইশ। ম্যাচ খেলার ডাবল সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের পঞ্চম ক্রিকেটার হবেন তিনি। দেশের অন্য চার সিনিয়র ক্রিকেটার এখানে পৌঁছেছেন আগে। ২২৭ ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশের হয়ে সবার ওপরে মুশফিকুর রহিম। দেশের হয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তামিম ইকবালের ম্যাচ ২১৮টি, সাকিব আল হাসানের ২১৪টি।
শুধু ম্যাচ খেলায় নয়, রেকর্ড বইয়ের অন্যান্য পাতায়ও বাংলাদেশের ওপরের দিকেই আছেন মাহমুদউল্লাহ। ১৯৯ ওয়ানডেতে ৪ হাজার ৪৬৯ রান তার, দেশের যা চতুর্থ সর্বোচ্চ। উইকেট ৭৬টি, এখানে তিনি দেশের সপ্তম। ফিল্ডিংয়েও তিনিই সফলতম। তার ৬৯ ক্যাচের চেয়ে বেশি নেই বাংলাদেশের আর কারও। বাংলাদেশের হয়ে ৯২টি ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। এখানে তিনি পঞ্চম। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম দুই সেঞ্চুরিই তার। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তার অসাধারণ সেঞ্চুরিতে বড় আসরে প্রথমবার সেমি-ফাইনালে ওঠার পথে এগিয়েছিল বাংলাদেশ।
তবে মাহমুদউল্লাহ মানে এসব রেকর্ড-পরিসংখ্যানের চেয়েও বেশি কিছু। বাংলাদেশের ‘ক্রাইসিস ম্যান’ তিনি, বরাবরই বিপদের ভরসা। বিপর্যয় থেকে ব্যাট হাতে দলকে উদ্ধার করেছেন অনেকবার। বল হাতে ভীষণ প্রয়োজনের সময় এনে দিয়েছেন ব্রেক থ্রু। অসংখ্যবার তার অনেক ছোট অবদান দলে রেখেছে বড় ভূমিকা। বহুবার হয়েছেন দলের পার্শ্বনায়ক, কিন্তু তিনি না থাকলে নায়ক হতে পারতেন না কেউ। বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহ তাই মহামূল্য একজন।
বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে একশর বেশি ওয়ানডে খেলেছেন কেবল আর মোহাম্মদ আশরাফুল (১৭৫) ও রুবেল হোসেন (১০৪)। আশরাফুলের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থমকে আছে ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে। সেখানে নতুন গতি পাওয়ার সম্ভাবনা সামান্যই। বয়স পেরিয়ে গেছে তার ৩৭। রুবেলের বয়স ৩১। পেস বোলার হিসেবে তার ক্যারিয়ারও আরও অনেক দূর যাওয়ার সম্ভাবনা কমই। মাহমুদউল্লাহর পর দুইশ ওয়ানডে খেলা আর কাউকে পেতে তাই অনেক দিন অপেক্ষা করতে হবে বাংলাদেশকে।
হঠাৎই সফরের একমাত্র টেস্টের মাঝেই সাদা পোষাকের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন পঞ্চপান্ডবের এই অভিজ্ঞ সেনানী। ম্যাচটি দাপটের সাথে জিতেই তাকে বিদায় জানিয়েছে সতীর্থরা। দেড়শ’ রানের ইনিংস খেলে নিজেও ছিলেন উজ্জ্বল। এবার আরেকটি মাইলফলকের ম্যাচের সামনে দাঁড়িয়ে সেই মাহমুদউল্লাহ। সতীর্থরাও নিশ্চয়ই তার জন্য ভেবে রেখেছেন বিশেষ কিছু! আর সেটি যে জিম্বাবুয়ের মাটিতে জিম্বাবুয়েকে ওয়ানডেতে প্রথম হোয়াইটওয়াশ তা কি আর বলে দিতে হচ্ছে!
একমাত্র টেস্টটির পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজও হেসে খেলেই জিতেছে বাংলাদেশ। প্রায় একযুগ পর এমন উপলক্ষ সফরকারীর ভ‚মিকায় থেকে সিরিজ জয় বাংলাদেশের জন্য স্বস্তিদায়ক বটে। এবার সেটিকে ‘ধবলধোলাই’- এর নাম দিতে চায় বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলেয়ে শেষ ম্যাচে জয় এনে দিতে দারুণ অবদান রাখা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের কণ্ঠেও শোনা গেল সেই সুর। গতকাল তরুণ এই পেস অলরাউন্ডার জানালেন, আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের কথা মাথায় রেখে শেষ ম্যাচকেও সমান গুরুত্বের সাথে দেখছে দল, ‘প্রত্যেক ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ভাই চোট নিয়ে এই সিরিজ খেলছে কারণ সুপার লিগে পয়েন্টের ব্যাপার আছে। প্রত্যেক খেলোয়াড়ই এটা মাথায় রেখে গুরুত্ব সহকারে খেলছে।’
ঘরের মাঠে বলেই জিম্বাবুয়েকে হালকাভাবে নিতে নারাজ সাইফউদ্দিন। তিনি জানালেন, হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্যেই মাঠে নামবে টাইগাররা, ‘জিম্বাবুয়েকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই যেহেতু ঘরের মাঠে সব দলই দুর্দান্ত। এজন্য বেশি মনোযোগ রেখে খেলছি, শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করছি। প্রত্যেক সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য থাকবে। প্রসেস ঠিক থাকলে ৩-০ ব্যবধানে জিতব ইনশাআল্লাহ।’
তৃতীয় ম্যাচে জয়ের জন্য বাংলাদেশ কতটা মরিয়া তা বোঝা গেল সাইফের কথাতেই। সিরিজ জয় প‚র্ণ হলেও বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা পরিশ্রমকে জানাননি বিদায়। একটুখানি গা এলানোর সুযোগ নেই, কারণ সামনে যে অনেক খেলা! সাইফউদ্দিন বলেন, ‘মাত্র ২৫ দিনে ১৬টা ম্যাচ খেলেছি, লম্বা সফর করে এখানে আসলাম- শরীরের ওপর একটু ধকল গিয়েছে। গতকাল ম্যাচ গিয়েছে, তবু দিনভর ঘুমানোর সুযোগ নেই। সকালে নাস্তা করে এসে জিম করে নিয়েছি। সামনে অনেক খেলা আছে। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেকে ফিট রাখতে হবে। পারফরম্যান্স হয়ত একদিন হবে একদিন হবে না। কিন্তু ফিট থাকলে কামব্যাক করতে পারব। ফিটনেস নিয়ে প্রত্যেক খেলোয়াড় সকাল-বিকাল কাজ করছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।