পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সরাসরি কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না পারার আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনার কারণে আমি কিন্তু বলতে গেলে এক রকম বন্দি জীবনই কাটাচ্ছি। তার আগে ছিলাম ছোট জেলখানায়। এখন আছি বড় জেলখানায়। কারণ এই গণভবন থেকে আর বের হতে পারি না। হ্যাঁ, একটু বড় জেলখানা এটা হলো কথা। একটু লিবার্টি আছে। দোতলা থেকে নিচে নামতে পারি, মাঠে হাঁটতে পারি এই পর্যন্ত। গতকাল রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহের বার্ষিক কর্মসম্পাদনা চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
পর্যায়ক্রমে দেশের সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে সরকারের উদ্যোগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের কোন মানুষ যেন ভ্যাকসিন থেকে বাদ না থাকে। সেভাবে কিন্তু আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি যে জিনিসটা এখন লক্ষ্য করি, প্রত্যেকটা সরকারি অফিসারদের ভেতরে- আগে যেমন ‘সরকারি মাল দরিয়া মে ডাল’ মনোভাব ছিল, এখন সেটা নেই। আজকে প্রত্যেকে কিন্তু নিজে নিজের কাজকে নিজের বলে গ্রহণ করছেন, আপনার দায়িত্বটা আপনি নিজে গ্রহণ করছেন এবং বাস্তবায়ন করবার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কাজ।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে এ পর্যন্ত আমি যেটা লক্ষ্য করেছি, সর্বক্ষেত্রে আমাদের যারা প্রশাসনে আছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আছেন অথবা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীতে আছেন সকলের ভেতরে কিন্তু এ পরিবর্তন এসেছে। তিনি বলেন, সকলে কিন্তু আমাদের দেশের কাজগুলো যেগুলো জাতির জন্য, যেগুলো মঙ্গলের জন্য, জনগণের জন্য সেই কাজগুলোকে গুরুত্বসহকারে করেছেন। অর্থাৎ আপন বলে গ্রহণ বা দায়িত্ব বলে গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। এভাবে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন বলেই এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২০-২১ এর ভেতরে যে উন্নতিটা, এর ভেতরেই কিন্তু আমাদের অর্জনগুলো হয়েছে। আজকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটা সম্মানজনক অবস্থায় এসেছে। জনগণের সেবা করা সরকারের দায়িত্ব সে কথা স্মরণ করিয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার কে? সরকার হচ্ছে জনগণের সেবা করবে। আমাদের লক্ষ্য যারা সেবা করবে তাদেরকে দক্ষ করে গড়ে তোলা, তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং জনসেবা করা, অর্থাৎ জনগণের সেবামূলক প্রশাসন গড়ে তোলা। সরকারে থেকে শুধু সরকারের সুযোগ সুবিধা ভোগ করবো তা নয়, এখানে আমাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে। তিনি বলেন, দায়িত্বটা হচ্ছে জনগণের প্রতি। জনগণের কল্যাণে, জনগণের স্বার্থে এবং জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করা। সেই কথাটা চিন্তা করে আমরা সকল কর্মকাণ্ড, আমাদের যেমন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ, বাজেট দেই বা প্রশাসনে যে সকল কর্মকাণ্ড আমরা পরিচালনা করি, সেগুলো যেন গতিশীলতা পায়, সেগুলো যেন জনগণের কল্যাণমুখী হয়, জনগণ যেন তার সুফলটা ভোগ করতে পারে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের কল্যাণে কাজ করা, তাদের জীবন মান উন্নত করা, আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষা দেওয়া যান্ত্রিকীকরণ করা কৃষিকে বা শ্রমের মূল্য দেওয়া এটাতো আমাদের দায়িত্ব, তাদেরকে সেভাবে সম্মান দেওয়া এবং সেভাবে কাজ করা, সেটাই তো বড় শিক্ষা এবং বড় দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রী হয়ে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর আর্দশ নিয়েই আমার পথ চলা এবং সেভাবেই আমাদের সংগঠন কাজ করেছে, আমরাও প্রচেষ্টা চালিয়েছি। যখন সরকারে এসেছি বাংলাদেশের মানুষের জন্য সেবক হিসেবে কাজ করেছি। প্রধানমন্ত্রীত্ব আমার জন্য অন্য কিছু না, শুধু একটা সুযোগ। সুযোগটা হলো মানুষের জন্য কাজ করা, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে সেই আদর্শটা বাস্তবায়ন করা। এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ হয়েছে। বাংলাদেশকে আমরা যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম, সেখানে একটা বিরাট ধাক্কা লেগেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এত বাধার মধ্যে এ রকম একটা অস্বাভাবিক পরিবেশের মধ্যে সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন, সে জন্য আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কারণ এইটুকু কাজ যদি আমরা না করতে পারতাম তাহলে হয়তো বাংলাদেশের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে দাঁড়াতো। তিনি বলেন, এটা ঠিক যেহেতু এটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা। এখানে আমাদের একার কিছু করার নাই। তারপরও আমাদের প্রত্যেকের চেষ্টা রয়েছে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ, জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত এবং আর্ত-সামাজিক অবস্থা গতিশীল রাখতে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছি। ভ্যাকসিন আসছে। আমাদের দেশের সকলেই যেন ভ্যাকসিনটা নিতে পারে তার জন্য যত দরকার আমরা তা ক্রয় করবো এবং আমরা সেই ভ্যাকসিনটা দিব। কোন মানুষ যেন ভ্যাকসিন থেকে বাদ না থাকে। সেভাবে কিন্তু আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা চাচ্ছি, আমাদের দেশের মানুষ যেন কোনো রকম ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, করোনার এই পরিস্থিতিতে সকলে যেন স্বাস্থ্যবিধিা মেনে চলেন সেদিক দৃষ্টি দিতে হবে।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃতি কর্মকর্তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।