Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সড়কে ঝরল ১৩ প্রাণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০৫ এএম

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী সেলফি পরিবহন নামের একটি বাস মিঠাপুকুর থেকে বলদীপুকুর এলাকায় পৌঁছলে রংপুর থেকে ঢাকাগামী জোয়ানা পরিবহন নামের অপর একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে সেলফি পরিবহনের চালকসহ ঘটনাস্থলেই ৬ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় কমপক্ষে ৫০ জন। অন্যদিকে, নাটোরের বড়াইগ্রামে বিয়ের পর দিন শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে বাসে তুলে দিয়ে ফেরার পথে দ্রুতগামী ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে শাহীদুজ্জামান সুমন (৩০) নামে এক স্কুল শিক্ষক নিহত হয়েছেন। এছাড়া, যশোর শহরে ট্রাক, পিকআপ ও প্রাইভেটকারের ত্রিমুখী সংঘর্ষে দুইজন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন। রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৭ টার রংপুর মহানগরী থেকে কিছু দূরে মিঠাপুকুর থানাধীন বলদীপুকুর এলাকায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আহতদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা অত্যন্ত শঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।

বড়াইগ্রাম (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গত শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বনপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত শাহীদুজ্জামান সুমন পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার উত্তর বটকাজল গ্রামের আব্দুস সাত্তার মিয়ার ছেলে। এ সময় সুমনের মামা শ্বশুর জাকির হোসেনও আহত হন। নিহত সুমন জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি দয়ারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় জমি কিনে বাড়ি করেছিলেন।
আহত জাকির হোসেন জানান, শুক্রবার দয়ারামপুরের নিজ বাসায় বাউফলের দশমিনা এলাকার কনে লামিয়া জেবিনের সঙ্গে সুমনের বিয়ে সম্পন্ন হয়। শনিবার রাতে তিনি বনপাড়া বাইপাস মোড় থেকে তার শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে বরিশালগামী বাসে উঠিয়ে দিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। পথে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে মহাসড়কের পাশে দাঁড়ালে একটি দ্রুতগামী ট্রাক তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি খন্দকার শফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রাকটি চিহ্নিত করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
বেনাপোল অফিস জানায়, গতকাল রোববার সকালে যশোর শহরের আরবপুর দিঘিরপাড় এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। নিহতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মেজেরহুদা গ্রামের আব্দুল আলিম (৩২) এবং গোয়ালহুদা গ্রামের জহুরুল ইসলাম (৫০)। আর আহতদের মধ্যে দুইজন যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ ও নিহত জহুরুলের ভাই সিহাব জানান, গরু কেনার জন্যে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে ১২ জন ব্যাপারী একটি পিকআপে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে সকাল ৬টার দিকে যশোর শহরের আরবপুর দিঘিরপাড় এলাকায় পৌঁছালে বিপরীতমুখী একটি ট্রাকের সাথে তার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এরপর একটি প্রাইভেটকার ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে দুইজন নিহত এবং ৯ জন আহত হন।খবর পেয়ে যশোর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার এম আব্দুর রশিদ বলেন, দুর্ঘটনার শিকার দুইজন হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে ভর্তি দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। যশোর কোতোয়ালী থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, মরদেহ দুইটি যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
অভয়নগর (যশোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, যশোরের অভয়নগর উপজেলার তালতলা মাইলপোস্ট নামক এলাকায় রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে চুর্ণবিচুর্ণ হয়েছে গরুবোঝাই একটি নসিমন। মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন দুইজন গরু ব্যবসায়ী। নিহতরা হলেন, উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের নওশের আলী শেখের ছেলে শহিদ শেখ (৪০) ও কাদিরপাড়া গ্রামের কাবিল ইসলামের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৫৫)। তাছাড়া ঘটনাস্থলেই মারা গেছে তিনটি গরু। রোববার সকালে মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৮টার সময় গরু বোঝাই একটি নসিমন রেলক্রসিং পার হচ্ছিল। এসময় খুলনা থেকে ছেড়ে আসা রূপসা ট্রেনটির সাথে নসিমনের সজোরে আঘাত লাগলে নসিমনে থাকা ৩টি গরু ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এসময় গুরুতর আহত নসিমনে থাকা তিনজন গরু ব্যবসায়ী। তাদের উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সাদিয়া জাহান বলেন, তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পরিবারসূত্রে জানাগেছে, খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় দুপুরের দিকে গরু ব্যবসায়ী শহিদ শেখ ও রফিকুল ইসলামের মৃত্যু ঘটে। আহত অপর ব্যবসায়ী মো. রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গোদাগাড়ী ( রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা ২ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার রাতে এই দুর্ঘটনা দুটি ঘটে। রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে বসন্তপুর এলাকায় শ্রী অসিম উরাও (৩০) নামে এক পথচারী হেঁটে যাওয়ার সময় লেগুনার ধক্কায় গুরুত্বর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহত শ্রী অসিম উরাও হলেন মাটিকাটা ইউনিয়নের প্রেমতলী এলাকার শংকরপুর উদপুর গ্রামের মৃত শ্রী বিলাশ উরাও এর ছেলে।
অপরদিকে, গত শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে উপজেলার কামারপাড়া এলাকায় রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে শ্রী মিনু মন্ডল ঘুগা নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। নিহত শ্রী মিনু মন্ডল ঘুগা উপজেলার বাসুদেবপুর ইউনিয়নের অভায়া কামারপাড়া এলাকার গোপালপুর গ্রামের মৃত শ্রী পালানু মন্ডলের ছেলে।
গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, রবিবার সকালে রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে বসন্তপুর এলাকায় এক পথচারী হেঁটে যাওয়ার সময় পিছন থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ গামী একটি লেগুনা ধাক্কা দিলে শ্রী অসিম উরাও নামে এক পথচারী নিহত হয়। তবে লেগুনাটি জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে রাতে কাজ শেষ করে বাড়ী যাওয়ার সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ গামী অজ্ঞাত নামা একটি ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে শ্রী মিনু মন্ডল ঘুগা নামে এক পথচারী ঘটনাস্থলে নিহত হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঝরল ১৩ প্রাণ

১৯ জুলাই, ২০২১
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ