মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই প্রার্থী হিলার ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ সময় গতকাল মঙ্গলবার ভোরে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। নিউইয়র্কের হেম্পসটিডের হফস্ট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমে উঠে তাদের বাগ্যুদ্ধ। পরস্পর একে অন্যের দিকে অভিযোগের তীর ছোড়েন। এসব অভিযোগের কতোটা সত্যি আর কতোটা মিথ্যা সেটি যাচাইয়ের চেষ্টা করেছেন সিএনএনের সত্যতা যাচাই দল। ওই দলে রয়েছেন সিএনএন অনলাইনের প্রতিবেদক, গবেষক ও সম্পাদকেরা। দলের সদস্যরা বিভিন্ন ইস্যুতে দুই প্রার্থীর বর্তমান ও আগের অবস্থানের বিশ্লেষণ করেছেন। যাচাই করেছেন তাদের বক্তব্যের সত্যতা। প্রথম বিতর্কে জলবায়ু পরিবর্তন, কর্মসংস্থান, আবাসন, ট্রাম্পের ব্যবসা, ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ প্রভৃতি প্রসঙ্গ উঠে আসে। সিএনএনের যাচাই দলের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, এসব ইস্যুতে হিলারির বক্তব্যের সত্যতাই বেশি। পক্ষান্তরে ট্রাম্প বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উল্টোপাল্টা কথা বলেছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন : জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে দুজনের বক্তব্যের বিশ্লেষণ করেছেন সিএনএনের সংবাদকর্মী লরা কোরান। ক্লিনটন বলেছেন, ট্রাম্প মনে করেন, চীনারা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী। তবে ট্রাম্প তা অস্বীকার করেন। এখন প্রশ্ন হলো দুজনের মধ্যে কে সত্যি আর কে মিথ্যা বলছেন? ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে দেয়া এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি চীনাদের জন্য। ২০১২ সালের ৭ নভেম্বর ট্রাম্প আবারও টুইট করেন, যুক্তরাষ্ট্রের চালাকির কারণেই জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প আবার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আরও চিন্তাভাবনা করা দরকার। দুঃখের বিষয়, চীন এ নিয়ে কোনো ভূমিকা রাখছে না। মার্চ মাসে আবার পাল্টি খান ট্রাম্প। ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা সম্পাদকীয়তে তিনি বলেন, তিনি মনে করেন না মানুষের কর্মকা-ের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। প্রাকৃতিক কারণেই এমন পরিবর্তন হচ্ছে। পরে ফক্স নিউজকে ট্রাম্প বলেন, কৌতুক করে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য তিনি চীনকে দায়ী করেছেন। সিএনএনের যাচাই দল মনে করে, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ট্রাম্প বারবার তার অবস্থান বদলেছেন। চীনকে দায়ী করার বিষয়ে হিলারির অভিযোগ সত্য।
কর্মসংস্থান : বিতর্কে হিলারি বলেন, তার অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় এক কোটি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কিন্তু ট্রাম্পের পরিকল্পনায় সাড়ে তিন লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ হারিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে কিছু বিশ্লেষণ তুলে ধরেছে সিএনএন। মুডির বিশ্লেষক মার্ক জান্দি বলেন, অর্থনীতির গতিশীলতার কারণেই ৭০ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। হিলারি উদ্যোগ নিলে আরও ৩০ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হতে পারে। অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের আরেকটি বিশ্লেষণ বলছে, হিলারির অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০২১ সালে দুই লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ৪০ লাখ চাকরির সুযোগ হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই হিলারির বক্তব্য সত্য। তবে এতে তথ্যগত কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে।
ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ : ট্রাম্পের অভিযোগ, বাণিজ্য চুক্তি ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) অনুমোদন করতে চেয়েছিলেন হিলারি। উত্তরে হিলারি বলেন, তিনি আশা করেছিলেন এটি ভালো চুক্তি হবে। কিন্তু চুক্তি নিয়ে আলোচনার সময় তিনি বুঝেছেন এটি ততটা ভালো নয়। আর চুক্তির দায়ভারও তার নয়। সিএনএনের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ বলছে, ২০১২ সালে টিপিপি চুক্তির পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন হিলারি। কিন্তু ২০১৫ সালে এসে তিনি টিপিপির প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। ওই সময় হিলারি এও বলেন, নির্বাচিত হলে তিনি টিপিপি প্রত্যাখ্যান করবেন। অর্থাৎ ট্রাম্পের অভিযোগের আংশিক সত্য। হিলারি টিপিপির পক্ষে ছিলেন। কিন্তু এ কথা কখনো বলেননি যে তিনি সেটি অনুমোদন করবেন।
ট্রাম্পের ব্যবসা : ট্রাম্প সব সময় দাবি করেন, তিনি আত্মনির্ভরশীল। নিজের চেষ্টায় আজকের অবস্থানে এসেছেন। তার এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন হিলারি। তিনি বলেন, আসলে ট্রাম্প খুবই ভাগ্যবান। তিনি ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। আর এই অর্থ তিনি ধার করেছিলেন তার বাবার কাছ থেকে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাত দিয়ে সিএনএন বলছে, ১৯৮৫ সালে ট্রাম্পের ক্যাসিনো ব্যবসায় নেয়া লাইসেন্স থেকে বোঝা যায়, সে সময় ট্রাম্প তার বাবা ফ্রেড ট্রাম্পের কাছ থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার ঋণ নিয়েছিলেন। আর সে সময়টা ছিল ৮০ এর দশকের শেষে। এটা ঠিক যে ব্যবসা শুরুর সময় ট্রাম্পের কাছে মাত্র ১০ লাখ ডলার ছিল। এর পাশাপাশি এটাও সত্যি যে ট্রাম্প তার বাবার কাছ থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার ঋণ নিয়েছিলেন। সিএনএন, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।