কাশ্মীরে ইয়াম-এ-শুহদা-বা শহীদ দিবসে পাকিস্তান সরকার এবং জনগণ ১৯৩১ সালে শ্রীনগরে ডোগ্রা বাহিনীর সাথে লড়াই করে জীবন দেয়া সেই আইআইওজেকের ২২ কৃতিসন্তানকে শ্রদ্ধা জানান। শহীদরা প্রাণ হারান কাশ্মীরি নেতা আবদুল কাদিরের উপর আরোপিত প্রহসনের ও লজ্জাজনক বিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। ১৯৩১ সালে এই শহীদদের সাহস ও স্বাধীনতার জন্য দৃঢ়সংকল্প একটি অতুলনীয় সংগ্রামকে উৎসাহিত করেছিল, যা আজও অব্যাহত রয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়, কাশ্মীরিদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের স্মরণে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে কাশ্মীরি ও পাকিস্তানি প্রবাসীরা পাকিস্তান ও নিয়ন্ত্রণ রেখার দু'দিকে কাশ্মিরী শহীদ দিবস পালন করে। বেআইনিভাবে ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মিরে, আইওওজেকে ২০১৯ সালের আগস্ট থেকে ৩৯০ এরও বেশি কাশ্মীরি ভারতীয় শহীদ হয়েছেন। শুধু এই বছর (২০২১), ভারতীয় দখলদার বাহিনী অল্প বয়স্ক ছেলেমেয়ে সহ ৮৫ জন নিরীহ কাশ্মীরিকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে; নির্বিচারে ৫৩৭ জন কাশ্মীরিকে গ্রেপ্তার ও আটক করা হয়েছে এবং কাশ্মীরি জনগণের ৩১ টি বাড়ি তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।

প্রেস বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, গত সাত দশক ধরে নিরবচ্ছিন্ন ভারতীয় নিপীড়ন কাশ্মীরি জনগণের স্বাধীনতার চেতনাকে নস্যাৎ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ আমরা নিরীহ কাশ্মীরিদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে আমরা আবারও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষত জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়েছি যে, ভারতীয় দখল বাহিনী কর্তৃক কাশ্মীরিদের ক্রমাগত বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড তদন্ত করা এবং এই জঘন্য অপরাধের অপরাধীদের আনা ন্যায়বিচার।

প্রেস বিবৃতিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সুনির্দিষ্টভাবে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবসমূহে নিশ্চিত করার অদম্য অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত ভারতীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে পাকিস্তান তাদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির সংগ্রামে কাশ্মীরি ভাইদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে। উল্লেখ্য, ১৯৩১ সালের ১৩ জুলাই কাশ্মিরে মহারাজা হরি সিংয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়। এ সময় শ্রীনগর কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে ডোগরা সেনাদের গুলিতে ২২ জন আন্দোলনকারী নিহত হন। তাদের স্মরণে প্রত্যেক বছর ১৩ জুলাই ‘শহীদ দিবস’ পালন করে থাকেন কাশ্মিরের বাসিন্দারা। তারা রাজ্যের গণতন্ত্র, সমতা এবং আজাদির জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন।