মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ব্রিটিশ খ্যাতনামা সাপ্তাহিক ইকোনমিস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নানা দুর্বলতা তুলে ধরা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সেনা শক্তি গড়ে তুলতে ভারত ব্যর্থ হয়েছে বলে ‘ইন্ডিয়া’স আমর্ড ফোর্সেস : গানস অ্যান্ড ঘি’ বা ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী : অস্ত্র এবং ঘি শীর্ষক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। ইকোনমিস্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, কাগজে কলমে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে চমৎকার বলে মনে হয়। চীনের পরই দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক বাহিনী ভারতের। ২০১০ সাল থেকে অস্ত্র আমদানিকারক দেশগুলোর তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারত। রাশিয়ার যুদ্ধবিমান, ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র, মার্কিন পরিবহন বিমান এবং ফরাসি ডুবোজাহাজ আমদানি করছে ভারত। ভারতীয় রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো তাক লাগানো অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম তৈরি করছে। এরমধ্যে যুদ্ধবিমান, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং কোচি শিপইয়ার্ডে নির্মাণাধীন ৪০ হাজার টনের বিমানবাহী জাহাজ রয়েছে। এ সত্ত্বেও ভারতীয় বাহিনীর বেশিরভাগ অস্ত্রশস্ত্রই হয় সেকেলে আর না হয় ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না।
সামরিক বিষয়ক ভারতীয় বিশ্লেষক অজয় শুক্লা বলেন, তার দেশের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একটি হতবিহবল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। ভারতীয় বিমান বহরের বেশিরভাগই সেকেলে, ১৯৭০-এর দশকের। এগুলো বদলে ফেলে আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর আরো অন্তত ১০ বছর লাগবে বলে অনুমান করেন তিনি। কাগজে কলমে ভারতের বিমান বাহিনী বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম এবং দেশটির বিমান সংখ্যা ২০০০। কিন্তু ২০১৪ সালের ভারতের সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন দেখার অবকাশ পেয়েছিল প্রতিরক্ষা বিষয়ক প্রকাশনা আইএইচএস জেনস।
এতে বলা হয়েছে, সাধারণভাবে ভারতীয় বিমান বাহিনীর মাত্র ৬০ শতাংশ বিমান ব্যবহার উপযোগী থাকে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর ৪৫টি মিগ২৯ যুদ্ধবিমান রয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর বিমান শাখা এগুলো নিয়ে ব্যাপক গর্ব করে। কিন্তু এগুলোর মধ্যে ১৬ থেকে ৩৮ শতাংশ ব্যবহার উপযোগী থাকে। নির্মাণাধীন বিমানবাহী জাহাজ থেকে এ সব বিমানের আকাশে ওড়ার কথা রয়েছে। ১৫ বছর আগে এর নির্মাণাদেশ দেয়া হয়েছে। ২০১০ সালে এর নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল। বিমানবাহী রণতরীর ১১৫০টি সংস্কার করা হয়েছে এবং ২০২৩ সালে আগে এটি চালু হতে পারবে না বলে ভারতীয় সরকারি অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। অবশ্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য এমন বিলম্ব নতুন কিছু নয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী নতুন একটি স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসাল্ট রাইফেল চাচ্ছে ১৯৮২ সাল থেকে। এটি স্থানীয় ভাবে তৈরি করবে বা আমদানি করা হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি। সোভিয়েত আমলের পুরনো যুদ্ধবিমান বদলানোর জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনীকে ১৬ বছর ধরে চেষ্টা করতে হয়েছে। এছাড়া, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কলঙ্ক-প্রবণ বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
অতীতেও এ সমস্যা ছিল। কঠোর প্রহরাধীন সামরিক ঘাঁটিগুলেতে গেরিলারা কি ভাবে বারবার হামলা চালাতে পারে ভাবতে যেয়ে হতবাক হয়ে যান পর্যবেক্ষকরা। সেনাবাহিনীতে পদোন্নতির বিষয় নিয়ে সম্প্রতি ভারতীয় জেনারেলদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বেতন নিয়ে প্রচ- বিতর্ক হয়েছে। ভারতীয় সেনাসদস্যদের সম্প্রতি ওজন কমানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত জুলাই মাসে ২৯ আরোহী নিয়ে ভারতীয় সামরিক পরিবহন বিমান বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ হয়ে গেছে। আজ পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ মেলেনি। আগস্ট মাসে ভারতীয় নৌবাহিনীর নতুন ফরাসি ডুবোজাহাজের বিশদ কারিগরি বিবরণ ছেপেছে অস্ট্রেলিয়ার একটি দৈনিক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় সামরিক বাহিনীর কাঠামোগত গভীর সমস্যা রয়েছে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখাই বেশ যোগ্য । কিন্তু তারা প্রত্যেকেই পৃথকভাবে কাজ করে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
সামরিক পর্যবেক্ষক শুক্লা বলেন, এক বাহিনীর সদস্য অন্য বাহিনীর সদস্যের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেন না। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসামরিক ব্যক্তিরা আবার তাদের সঙ্গে কথা বলেন না। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে কোনো সামরিক ব্যক্তি নেই। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন অভিজিৎ লায়ার-মিত্র। তিনি বলেন, সাধারণ চিকিৎসকই অস্ত্রোপচার মতো জটিল চিকিৎসা করতে পারবেন বলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মনে করছে। তিনি বলেন, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ক্রমবর্ধমান মাংসপেশি আছে ঠিকই কিন্তু এখনও মস্তিষ্কের প্রকট অভাব রয়েছে। পার্সটুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।