পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যে পাঁচটি স্তম্ভের উপর ইসলামের বুনেয়াদ প্রতিষ্ঠিত তন্মধ্যে হজ অন্যতম। মহান আল্লাহপাক আল কোরআনে ঘোষণা করেছেন : ‘মানুষের কর্তব্য হলো আল্লাহরই জন্য আল্লাহর ঘরের হজ করা, সেই লোকের যার সেখান পর্যন্ত যাতায়াতের সামর্থ্য আছে।’ (সুরা আল ইমরান : আয়াত-৯৭)।
এই আয়াতে কারিমার ব্যাখ্যায় পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত সহজ ও প্রাণস্পর্শী ভাষায় যা বলেছেন, তা খুবই প্রণিধানযোগ্য। যথা : (ক) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছে : ‘যে ব্যক্তি আল্লাহরই জন্য হজ করল এবং এ সময়ের মধ্যে স্ত্রীর গভীর সান্নিধ্যে গমন করল না, কোনো গোনাহের কাজে লিপ্ত হলো না এবং ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হলো না, সে তার মাতা কর্তৃক ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিনের মতোই হয়ে গেল।’ (সহিহ বোখারি; মুসনাদে আহমাদ)। (খ) হজরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন : যে লোক পথের এমন সম্বল ও যানবাহনের অধিকারী হলো, যা তাকে আল্লাহর ঘর পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দিতে পারে, আর তা সত্ত্বেও হজ করল না, সে ইয়াহুদি হয়ে মরুক, চাই খ্রিষ্টান হয়ে মরুক, তাতে কোনো পার্থক্য হবে না। এ কথাই আল্লাহ তাবারাকাওয়া তায়ালা তার কিতাবে বলেছেন : আল্লাহরই জন্য আল্লাহর ঘরের হজ করা সে লোকদের জন্য অবশ্য-কর্তব্য, যারা সে পর্যন্ত পৌঁছার পথ অতিক্রম করতে সমর্থ হবে।; (জামেয়ে তিরমিজি, মুসনাদে-আহমাদ)।
উপরোল্লিখিত, প্রথম হাদীসটির ব্যাখ্যায় আল্লাম্মা ইবনে হাজার আসকালানী-(রহ.) বলেছেন : ‘যে ব্যক্তি হজ আদায়কালে রাফাস, ফুসুক ও জিদাল বিমুক্ত হয়ে হজ সম্পাদন করল, সে সদ্যজাত শিশুর মতোই নিষ্পাপ হয়ে গেল। এ কথাটি দৃষ্টান্তমূলক। সদ্যজাত শিশু যেমন- নিষ্পাপ ও নির্দোষ, তেমনি স্ত্রী সান্নিধ্য পরিহার করে, সকল প্রকার গোনাহ বিমুক্ত হয়ে এবং ঝগড়া-বিবাদ হতে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখে হজ আদায়কারী ব্যক্তিও নির্দোষ ও নিষ্পাপ হয়ে গেল। তোহফাতুল আহওয়াজী।
আর দ্বিতীয় হাদীসটির ব্যাখ্যায় আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (রহ:) লিখেছেন : এই হাদীসে হজ করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ না করাকে একটি মহাঅপরাধ রূপে গণ্য করা হয়েছে। এরূপ ব্যক্তির ওপর আল্লাহর কঠিন আজাব হওয়ার সংবাদই এতে দেয়া হয়েছে। কেন না, এমন ব্যক্তি যখন হজ আদায় না করে মৃত্যুবরণ করে, তখন তার পরিণতি মুসলামদের মতো হয় না। বরং ইয়াহুদি ও খ্রিষ্টানদের মতো হয়। যারা আহলে কিতাব হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহর বিধান ও সুস্পষ্ট নির্দেশকে উপেক্ষা করেছে ও অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছে, তাদের ওপর আল্লাহর আজাব যেমন অবধারিত, তেমনি হজ আদায় না করার জন্যও শাস্তি ভোগ অপরিহার্য। আল্লাহপাক সামর্থবানদের হজ করার তৌফিক দান করুন- আমীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।