Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আফগানিস্তানের অনভিজ্ঞতায় জেতালো বাংলাদেশকে

প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৪৩ এএম, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

বাংলাদেশ : ২৬৫/১০(৫০.০ ওভারে)
আফগানিস্তান : ২৫৮/১০( ৫০.০ ওভারে)
ফল : বাংলাদেশ ৭ রানে জয়ী।
শামীম চৌধুরী : কি বড় বাঁচাই না বেঁচেছে বাংলাদেশ! আড়াই বছর আগে ফতুল্লায় বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয়ার স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়ে, তার চেয়েও শক্তি সঞ্চার করে এসেছে তারা এবার বাংলাদেশ সফরে, গড়তে এসেছে নুতন ইতিহাস। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক আসগর স্ট্যানিকজাই’র সে হুংকারটাই বুঝি প্রতিফলিত হচ্ছে সিরিজের প্রথম ম্যাচেÑএমন শঙ্কাটাই ভর করেছে অনেকটা সময়। বাংলাদেশের ২৬৫/১০’র চ্যালেঞ্জ নিয়ে যেভাবে ইনিংসের মাঝামাঝি সময়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সফরকারীরা, তাতে আর একটি অঘটনের মুখোমুখিই হতে হয়েছিল মাশরাফির দলকে। ৪০তম ওভার পর্যন্ত আফগানদের হাতের মুঠোয় ছিল ম্যাচটি। তৃতীয় উইকেট জুটির (রহমাত শাহ-হাসমাত উল্লাহ) পাহাড় হয়ে দাঁড়ানো ১৪৪ রানে বড় ধরনের শঙ্কার আলামত পেয়ে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম ছেড়ে গ্যালারির প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছিল ফাঁকা। যেভাবে সেøা পীচে বাংলাদেশ বোলারদের শাসন করছে আফগানিস্তানের ওই জুটিÑতাতে ৬০ বলে ৭৭ রানের লক্ষ্যমাত্রটা তখন আফগানদের পক্ষে দূরূহ মনে হয়নি। তবে দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্য থেকে ম্যাচে নাটকীয় মোড় নিয়েছে শেষ ১০ ওভারে। তাতেই নাভিশ্বাস উঠিয়ে ছাড়া আফগানিস্তানকে ৭ রানে হারিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার কাছে হেরেছে অনভিজ্ঞ আফগানরা।
ম্যাচে নাটকীয় আবহের শুরুটা ৪১তম ওভার থেকে। সাকিবকে আফগান টপ অর্ডার রহমাত শাহ হাফ পিচে এসে খেলতে যেয়ে সেই যে ভুলের ফাঁদে দিয়েছেন পা, ৯৩ বলে ২ চার ৩ ছক্কায় ৭১ রানে বাংলাদেশকে ভোগানো সেই রহমাত শাহ’র উইকেটেই ম্যাচে ফেরার উপায় খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ দল। ওয়ানডে ক্রিকেটে রাজ্জাকের বোলিং সাফল্য (২০৭ উইকেট) ছাড়িয়ে বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে এভারেস্টে পা দিয়েছেন (২০৮ উইকেট)। দেশের হয়ে তিন ভার্সনের ক্রিকেটের সব ক’টিতে সর্বাধিক উইকেটে অনন্য রেকর্ডটাও রহমত শাহ’র উইকেটের মধ্য দিয়ে করেছেন উদযাপন সাকিব। ২৪ বলে আফগানিস্তানের টার্গেট যখন ২৮, তখন ৪৭তম ওভারে আফগানিস্তানের চ্যালেঞ্জ কঠিন করে দিয়েছেন এই সাকিবইÑ১ রানের বেশি খরচা করেননি তিনি। রানের চাপে পড়া আফগানদের লক্ষ্যটা যখন ১৮ বলে ২৭ রান, তখন তাসকিন ম্যাজিকে ছিন্ন ভিন্ন আফগানিস্তান। বোলিং নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আইসিসি’র ছাড়পত্র পেয়ে মুক্তির আনন্দে যে নিশ্বাস ফেলেছেন তাসকিন ২ দিন আগে, ১০ মাস পর ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশের প্রত্যাবর্তন ম্যাচে খলনায়হ হতে পারতেন সেই পেস বোলার। প্রথম তিনটি স্পেলে অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেই অপবাদই নিতে হয়েছিল তাসকিনকে। তবে ব্রিসবেনে বায়ো মেকানিক্স পরীক্ষায় কৃতকার্য তাসকিন বাংলাদেশ স্কোয়াডের বাইরে থেকে টীম ম্যানেজমেন্টের হস্তক্ষেপে দলে ঢোকায় ছিলেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আস্থার প্রতিদান দিতে বেছে নেয়া ২ ওভারের শেষ স্পেলকেই (২-০-১১-৪) নিয়েছে বেছে। ৪৮তম ওভারের ৪র্থ বলে মোহাম্মদ নবীকে লং অফে, ৬ষ্ঠ বলে স্ট্যানিকজাইকেও একই পজিশনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করে ম্যাচের দৃশ্যপটে এনেছেন পরিবর্তন। বোলিং নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রত্যাবর্তনকে স্মরনীয় করতে (৪/৫৯) শেষ ওভারে শিকার করেছেন ২ টেল এন্ডার।
১০ মাস পর ওয়ানডে প্রত্যাবর্তন ম্যাচ খেলতে নেমে আসলেই অবতেনমনে চাপ নিয়েছে বাংলাদেশ দল। ব্যাটিংয়ের চিত্রটা সে কথাই বলবে। দিনের ৫ম বলে সৌম্য’র ফিরে আসার পর দু’দুবার ইমরুলের জীবন ফিরে পাওয়া ৩৭ রানের ইনিংস। তারপরও ব্যাটিংয়ে নেতৃত্ব দেয়া তামীমের ৮০ রানের ইনিংস,ইমরুলকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৮৩ রানে অবদান রাখার দিনে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে তিন ভার্সনের ক্রিকেট মিলে ৯ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদ প্রাপ্তির দিনটিকে মাটি করতে দেননি দুই মিডল অর্ডার মাহামুদুল্লাহ(৬২) এবং সাকিব। তবে পরিচিত শ্লো উইকেটে প্রতিপক্ষ দলের লেগ স্পিনার রশিদ খানের গুগলিতে হতভম্ব হয়ে (২/৩৭) এবং শেষ স্পেলে আফগান পেসার দৌলত জাদরানের ভেল্কিতে (৩-০-২১-৩) ২৬৫ তে থেমে যাওয়ায় ছিল আক্ষেপ। শ্লগের ১০ ওভারে ৭ উইকেট হারানোয় আইসিসি’র সহযোগী সদস্য দেশটির বিপক্ষে স্কোরটা যে হয়নি প্রত্যাশিত।
এই পুঁজি নিয়ে লড়তে নেমে ইমরুল কায়েস, মাহামুদুল্লাহ, মুশফিকুরের ক্যাচ ড্রপে যে শংকা করেছিল ভর, সে দূর্ভাবনা কাটিয়েছে বাংলাদেশ দল শ্লগেই। শেষ ৬০ বলে ৬৯ যোগ করতে প্রতিপক্ষের ৮ ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দিয়ে অভিজ্ঞতা আর অনভিজ্ঞতার মধ্যে ব্যবধানই যে নির্নিত করেছে মাশরাফির দল। গত বছরে ১৮ ওয়ানডে ম্যাচে ১৩ জয়ে অন্য এক উচ্চতায় উঠে আসা বাংলাদেশ এ বছরের ওয়ানডে যাত্রা করেছে জয় দিয়ে। নাভিশ্বাস উঠিয়ে ছাড়া আফগানদের বিপক্ষে জয়ের নায়ক সাকিবের হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।



 

Show all comments
  • মাসুদ ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১১:৪১ এএম says : 0
    এই জেতার পেছনে তাসকিনকে অবশ্যই ক্রেডিট দিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • ইউসুফ ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১১:৪১ এএম says : 0
    আগামী ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে আরো ভালো করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • আল আমিন ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১১:৪৩ এএম says : 0
    আবারও প্রমাণিত হলো যে, সাকিব সেরা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তানের অনভিজ্ঞতায় জেতালো বাংলাদেশকে
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ