Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ৭টি ইউনিয়নের ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০২১, ৬:২৬ পিএম

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় বসবাসরত ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। পানি বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের পূর্ব বিনবিনা চর হতে লক্ষীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলী সংযোগ বেড়ি বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় বাগেরহাট বাজার এলাকাসহ আশ্রয়ণে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে করে এসব এলাকার মানুষও পানিবন্দি হয়েছে । ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগে বালু ভরাট করে রাখলেও তা ভাঙন স্থানে না ফেলায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিপূর্বে ২২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বিনবিনার চরে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে নির্মিত বাঁধটি ভেঙ্গে পূর্ব বিনবিনার চরের মসজিদটি বিলীন হয়ে গেছে। এখন লক্ষীটারীর কেল্লারপাড় চরে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত উপবাঁধটিও ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙনে কোলকোন্দ ইউনিয়নের পূর্ব বিনবিনা ও পশ্চিম ইচলীর ১৭টি পরিবারের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে বেশ কিছু রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ, মসজিদ ও ফসলি জমি।

ইতিমধ্যে বেশ কিছু রাস্তা বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি মানুষগুলো রাস্তাসহ উঁচু স্থানে পলিথিনের ছাউনি তৈরি করে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি ও ঘরের আসবাবপত্র নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে এসব পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছে। উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি, শংকরদহ, বাগেরহাট আশ্রয়ন, পূর্ব ইচলির প্রায় সাড়ে ৩ হাজার, কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, মটুকপুর, চিলাখাল, খলাইরচরসহ নিম্ন এলাকার ৩ হাজার, নোহালীর মিনার বাজার, কচুয়াচর, বৈরাতী বাঁধের ধার, চর নোহালী, বাগডহরা চরের ২শ, মর্নেয়া ইউনিয়নের মর্নেয়াচর, তালপট্টি, আলাল চর, নরসিং চর, গজঘন্টা ইউনিয়নের কালির চর, ছালাপাক, গাউছিয়া বাজার, জয়দেব, মইশাসুর, রামদেব চরসহ আলমবিদিত ও গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের তিস্তা বেষ্টিত নিম্ন এলাকার ১শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

আজ শুক্রবার বন্যা কবলিত এসব এলাকায় সরজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, এসব এলাকায় গত সপ্তাহে বানের পানি ঢুকে পড়লেও দু’দিন আগে পানি অনেকটা নেমে যায়। কিন্তু হঠাৎ আবারও তিস্তার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও এসব এলাকায় বানের পানি ঢুকে প্লাবিত করেছে। বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। তারা ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তার ইউনিয়নের ৩ হাজারের বেশী পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এর আগে দু-দফায় মাত্র সাড়ে ৬শ পরিবারকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে। এখনও অনেক পরিবার ত্রাণ সহায়তা পায়নি। তার ওপর নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি এসব পরিবারের জন্য দ্রুত ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি ফলে ভাঙন ও বন্যার দেখা দেওয়ায় বিনবিনা চরে ৭টি পরিবারের বাড়ি-ঘর বিলীন হয়েছে এবং প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। এই ইউনিয়নে এর আগে ৫শ ৭৫টি পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলীমা বেগম জানিয়েছেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোতে জন্য ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে। প্রক্রিয়া চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রংপুর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ