Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উপভোগের মন্ত্রে উজ্জ্বীবিত আমলা

২৭৮ বলে ৩৭ রানের মাস্টারক্লাস

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০৫ এএম

উইকেট বাকি ৮টি। শেষ দিনে ৯৮ ওভার ব্যাট করার চ্যালেঞ্জ। উইকেট-কন্ডিশন বোলিং সহায়ক। সবকিছু প্রতিক‚লে। তার পরও ম্যাচ বাঁচিয়ে ফেলল সারে! কারণ, তাদের আছে একজন হাশিম আমলা। হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচটি আমলার ব্যাটিং মাস্টারক্লাসের প্রদর্শনীতে ড্র করে সারে। চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা আর অনমনীয় দৃঢ়তায় আমলা ২৭৮ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ৩৭ রান করে! বল খেলার হিসাব জানা আছে, এসব ম্যাচের মধ্যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ইতিহাসে ৪০ রানের কম ইনিংসে সবচেয়ে বেশি বল খেলার রেকর্ড এটিই। আগের রেকর্ডটি ছিল ট্রেভর বেইলির। ১৯৫৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেডিংলি টেস্টে ২৭৭ বল খেলে ৩৮ রান করেছিলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান।

প্রায় দুই বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও কাউন্টিতে সারের হয়ে নিয়মিতই খেলছেন আমলা। ৩৮ বছর বয়সী ক্রিকেটার দেখালেন, এখনও তার ব্যাট এখনও কতটা নির্ভরতার প্রতীক।
সাউদাম্পটনে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে হ্যাম্পশায়ার ৪৮৮ রান করার পর সারে অলআউট হয় স্রেফ ৭২ রানে। সেখানে সর্বোচ্চ ২৯ আসে আমলার ব্যাট থেকেই। ফলো অনে পড়ে শুরু হয় সারের ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই। এবারও ৬ রানের মধ্যে তারা হারায় ২ উইকেট। এরপর শুরু হয় আমলার লড়াই। বৃষ্টিতে অনেকটা সময় নষ্ট হওয়ায় শেষ দিনে নির্ধারিত ছিল ৯৮ ওভার। আমলা এক প্রান্তে ব্লকের পর ব্লক করে হতাশ করতে থাকেন হ্যাম্পশায়ারকে।
এক পর্যায়ে ১০৮ বলে আমলার রান ছিল ৩! প্রথম বাউন্ডারি মারেন তিনি ১২৫ বল খেলার পর। পরে ১৫০ বলে তার দাঁড়ায় তার ১৮, ২০০ বল খেলার সময় রান ২৬। আরেক প্রান্তে রায়ান প্যাটেল (৮৬ বলে ১৬), জেমি স্মিথ (৬০ বলে ১৪), বেন গেডস (৫৪ বলে ১৫) আমলাকে সঙ্গ দিলেও পরে আউট হয়ে যান। কিন্তু আমলা হাল ছাড়েননি।
সারের সপ্তম উইকেটের যখন পতন হয়, ম্যাচের তখনও ১৮.৩ ওভার বাকি। লোয়ার অর্ডারদেরও আগলে রেখে আমলা পার করে দেন সময়টুকু। শেষ পর্যন্ত ১০৪.৫ ওভারে সারে ৮ উইকেটে ১২২ রান তুলে ড্র করে ম্যাচ। দুই উইকেট বাকি ছিল বলে ম্যাচে শেষ ডেলিভারির প্রয়োজন হয়নি।
নিজের বর্ণাঢ্য টেস্ট ক্যারিয়ারে ম্যাচ বাঁচাতে ২৪৪ বলে ২৫ রানের ইনিংস আছে আমলার (যে ইনিংসে এবি ডি ভিলিয়ার্স করেছিলেন ২৯৭ বলে ৪৩)। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি অবশ্য শেষ পর্যন্ত ড্র করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতেই বিপক্ষেই আরেক টেস্টে করেছিলেন ১৫৯ বলে ২৫। সেবারও হার এড়াতে পারেনি দল। কোনোবারই তিনি টিকতে পারেননি শেষ পর্যন্ত। তবে এবার আমলা টিকেছেন, ম্যাচ বাঁচাতে পেরেছে সারে। ম্যাচ শেষে তার কণ্ঠে তাই ছিল তৃপ্তির সুর, ‘আমি খুবই উপভোগ করেছি। এটা ছিল সত্যিকারের লড়াই। মাঠে নেমে সবাই রান করতেই চায়, কিন্তু এ দিন আমাদের অন্য লক্ষ্য ছিল। খেলা এমনভাবে গড়িয়েছে যে, আমাদের ম্যাচ বাঁচাতে হতো। প্রতিটি ব্যাটসম্যানই উইকেটে গিয়েছে একই পরিকল্পনা নিয়ে। এসব ক্ষেত্রে অনেক কিছুই পক্ষে আসতে হয়, বিশেষ করে এরকম উইকেটে যেখানে বল উঠা-নামা করেছে এবং অফ স্পিনারদের জন্য ক্ষতও ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি স্রেফ ব্লক করে যেতে। জানতাম না, এভাবে কতদ‚র যাওয়া যাবে। তবে চেষ্টার কমতি রাখিনি এবং শেষ পর্যন্ত আমরা পেরেছি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাশিম আমলা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ