বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দক্ষিণাঞ্চলে কোভিড-১৯ সহ যেকোন রোগীর চিকিৎসার নির্র্ভরযোগ্য সরকারী প্রতিষ্ঠান শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা বাড়িয়েও রোগীর চাপ সামাল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালটির ২২টি আইসিউ বেডে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত রোগী ছিলেন ২৩ জন। গোটা হাসপাতালে ৭৩টি হাইফ্লোন্যাজাল ক্যানাল’র ৫৩টিই করোনা ওয়ার্ডে স্থাপন করা হয়েছে। ১টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ছাড়াও ১০৫টি সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনের সাহায্যে সরবারহ অব্যাহত থাকার কথা বলেছেন পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম। তবে এর বাইরে ১ হাজর শয্যার এ হাসপাতালে গড়ে চিকিৎসাধীন দেড় হাজার রোগীর জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডর রয়েছে মাত্র ৩১০টি।
চিকিৎসকের মারাত্মক সংকটের মধ্যেও গত বছর ১০ মার্চ থেকে মঙ্গলবার ৬ জুলাই পর্যন্ত এ হাসপাতালের আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে ৫ হাজার ৫০ রোগী ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু তারমধ্যে মারা গেছেন ৭৮৯ জন। গত ১৬ মাসে এ বিপুল সংখ্যক মৃতদের মধ্যে করোনা পজিটিভ নিয়ে এ হাসপাতালে ২১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আইসোলেশন ওয়ার্ডে মৃত ৫৬১ জনের মধ্যে ২৯ জনের নমুনা পরিক্ষার ফলাফল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে করোনার ভয়াবহ বিস্তারের মধ্যে এর চিকিৎসা নিয়ে নতুন দুঃশ্চিন্তা তৈরী হয়েছে। এ অঞ্চলে গত ১৬ মাসে ১৯ হাজার ৫৩২ জনের করোনা সংক্রমনের পাশাপাশি ৩২৬ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। দক্ষিণাঞ্চলে এখনো মৃত্যুহার ১.৬৭%। আর গত ১৬ মাসে সর্বমোট ১ লাখ ২২ হাজার ১৭১ জনের নমুনা পরিক্ষায় সনাক্তের গড়হার ১৬.২০% হলেও গত ২৪ ঘন্টায় শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজে ১৮৮ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৭৩.৯৩% করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে।
গতবছর ১২৫ বেড নিয়ে করোনা ওয়ার্ড চালু করা হলেও ক্রমান্বয়ে শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য ২৭৮টি জেনারেল বেডে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রোগী ছিলেন ২১৩। ২২টি আইসিউ’তে ২৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিশাল হাসপাতালটির এ ওয়র্ডে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা ১২টি। মঙ্গলবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় এ ওয়ার্ডে রেকর্ড সংখ্যক ৫৭ জন নতুন রোগী ভর্র্তি হলেও ছাড়া পেয়েছেন ৩২ জন। এর বাইরেও আইসোলেশন ওয়ার্ডে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আরো ১৯০ জন সহ মোট ২৩৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল সূূত্রের মতে ৬ জুলাই পর্যন্ত এখানের করোনা ওয়ার্ডে ভর্র্তিকৃত সর্বমোট ১ হাজার ৪৫৫ জনের মধ্যে ১ হাজার ১৯৩ জন ছাড়পত্র লাভ করেছেন। মৃত্যু হয়েছে ২১৮ জনের। দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমনে এপর্যন্ত সর্বমোট মৃত ৩২৬ জনের মধ্যে এ হাসপাতালেই ২১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অপরদিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে প্রথমে হাসপাতালটির আইসোলেশন ওয়ার্ডে যে ৩ হাজার ৫৯৫ জন ভর্তি হয়েছেন, তারমধ্যে মারা গেছেন ৫৬১ জন। ফলে গত ১৬ মাসে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দড়িয়েছে ৭৭৯ জনে। যারমধ্যে ২১৮ জন কোভিড-১৯ নিয়ে মৃত্যুবরন করলেও অপর ৫৩২ জনের নমুনা পরিক্ষার ফল ছিল নেগটিভ। আর ঐ দুটি ওয়ার্ডে ভর্র্তিকৃত ৫ হাজার ৫০ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত ২ হাজার ২৪৭ জনের কোভিড টেষ্টে করেনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে ৬৯০ জনের।
শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলামের সাথে আালাপ করা হলে তিনি জানান, চিকিৎসক সংকট সহ বেশকিছু সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমরা চেষ্টা করছি রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিতে। তরমতে, শুধু বরিশাল বিভাগের ৬ জেলাই নয় বাগেরহাট,মাদারীপুর,শরিয়তপুর ও গোপালগঞ্জের কোভিড রোগীরাও এ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসছেন বলে জানান তিনি। এত রোগীর চাপ সামাল দিয়ে আমরা চেষ্টা করছি সম্ভব সব ধরনের চিকিৎসা সহাতার। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মন উন্নয়ন সহ সার্বিক ব্যবস্থায় গনমাধ্যম সহ সবার সহযোগীতা কামনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।