বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মৌলভীবাজার জেলায় মহামারী করোনা সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলছে। একই দিনে কুলাউড়া উপজেলার উত্তর কুলাউড়া ও জয়চন্ডী ইউনিয়নে ১ পুরুষ ও ১ মহিলা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তারা দুজনেই মৌলভীবাজার ও সিলেটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। অপরদিকে কুলাউড়া উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের আকল মিয়ার ছেলে কাতার প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধা সুমন আহমদ ভয়ঙ্কর করোনায় থাবায় মৃত্যু বড়ন করেন। তাদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কুলাউড়ার সর্বত্র।
রোববার ৪ জুলাই সকাল পৌণে ১০টার দিকে সিলেটের উইমেন্স হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুলাউড়া উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের আকল মিয়ার ছেলে সুমন আহমদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, সুমন প্রায় ১৮ দিন থেকে তিনি জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত ছিলেন। স্বাভাবিক সময়ের মতো তিনি স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে ওষুধ সেবন করেন। জ্বর না কমায় স্থানীয় এক চিকিৎসক উনাকে নিউমোনিয়ায় রোগে আক্রান্ত হয়েছেন মনে করে ওষুধ দেন আরও ৭ দিনের। কিন্তু অসুখ না কমায় এক পর্যায়ে তিনি কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন কুলাউড়া সরকারি হাসপাতালে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২৫ জুন মৌলভীবাজারের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হন। এরই মধ্যে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসায় উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৬ জুন তাকে নেয়া হয় সিলেটের উইমেন্স হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। অক্সিজেন লেবেল কমেযাওয়ায় উইমেন্স হাসপাতালের আইসিইউ বেডে লাইফ সাপোর্ট নিয়ে গত এক সপ্তাহ করোনার সাথে লড়াই করেন সুমন মৃত্যু বরণ করেন।
সুমনের ঘনিষ্ট বন্ধু মোক্তাদিরুল ইসলাম তুহিন জানান, গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে দেশে এসে আর ফিরে যেতে পারেনি। যখন প্রবাসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো ঠিক তখন সে করোনায় আক্রান্ত হলো। আমাদেও ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছে।
অপরদিকে কুলাউড়া পৌরসভার উত্তর কুলাউড়ার বাসিন্দা হারিছ খাঁন কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৪ দিন পূর্বে মৌলভীবাজার আল হামরা হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ৩ জুলাই সকালে তিনি মারা যান।
অপরজন জয়চন্ডী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার লৈয়ারহাই গ্রামের বাসিন্দা আজিজ উদ্দিন লবিকের স্ত্রী হেনা বেগম কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১ জুলাই সিলেট নুরজাহান হাসপাতারে ভর্তি হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ৩ জুলাই দুপুরে তিনিও মৃত্যুবরণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুলাউড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার।
জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৮৯ টি নমুনা পরীক্ষায় পাঠালে ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুযায়ী আক্রান্তের হার ২৯ শতাংশ। অপর দিকে এন্টিজেন টেষ্ট ৪৪ জনকে করালে ২১ জনের পজেটিভ আসে। এ পর্যন্ত জেলায় ৩ হাজার ১‘শ ২১ জনের শরিরে করোনা সনাক্ত হয়। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭ শত ১৮ জন। হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৫৫ জন।
সরকারী হিসেবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেন ৩৬ জন। তবে করোনায় আক্রান্ত মৃত্যুবরণকারী পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে প্রাপ্ত তথ্যে বে-সরকাররি হিসেবে জেলার বাহিরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৮ জন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।