মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী শনিবার বলেছেন যে, জাতীয় জবাবদিহিতা ব্যুরো (এনএবি) সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারীর সাথে সংশ্লিষ্ট জালিয়াতি মামলায় এযাবৎ ৩৩০০ কোটি রুপি উদ্ধার করেছে। তিনি আরো যোগ করেন যে, মামলায় প্রকৃত আর্থিক অনিয়মের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি।
সিন্ধু প্রাদেশিক সরকার এবং পিপিপি নেতৃত্বের প্রচ্ছন্ন সমালোচনা করে মন্ত্রী টুইট করেন যে, ‘ন্যাবের হাতে ৩৩০০ কোটি রুপি (প্রায় ২০ কোটি ডলারের সমান) উদ্ধারে যে কেউ কল্পনা করতে পারে যে, দেশে দুর্নীতির মাত্রা কতটা’। তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটি ইঙ্গিত দেয় যে, শাসকরা নির্মমভাবে সিন্ধু ও পাকিস্তানকে লুট করেছে’।
এই প্রথম নয় যে, ফেডারেল মন্ত্রী দুর্নীতির জন্য সিন্ধু সরকারকে একটি বিস্তৃতভাবে গুলি ছুড়লেন। তার সাম্প্রতিক করাচিতে সফরকালে চৌধুরী সিন্ধু শাসক এবং শীর্ষস্থানীয় পিপিপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের জন্য সরকারি তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগ করেছিলেন।
তিনি ‘তৃতীয় পক্ষের’ মাধ্যমে সিন্ধুতে ফেডারেল সরকার প্রদত্ত জন তহবিলের ব্যবহার পর্যবেক্ষণেরও পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন যে, সিন্ধু সরকারের সম্পত্তির অর্থ দুবাই, কানাডা এবং ইউরোপ থেকে আদায় করা হচ্ছে।
জাল অ্যাকাউন্টস কেস
২০১৫ সালে জাল অ্যাকাউন্টের মামলাটি প্রথম প্রকাশিত হয় যখন ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) একটি সংবাদের ভিত্তিতে পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন লাওয়ায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল, যাকে বহুলাংশে সাবেক প্রেসিডেন্ট জারদারির ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়।
তদন্ত চলার সাথে সাথে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্ট মামলাটির ধীরগতিতে তদন্তের সুয়ো-মোটো নোটিশ গ্রহণ করে এবং এফআইএকে এ বিষয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।
আসিফ আলী জারদারী, তার বোন ফারিয়াল তালপুর, লাওয়াই এবং ওমনি গ্রুপের আনোয়ার মাজিদসহ একাধিক বিগ-উইগকে এই মামলায় মনোনীত করা হয়েছিল। এছাড়া সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহ এবং পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারিও এ তদন্তে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
পরে তদন্তের জন্য এফআইএর অনুরোধে পরবর্তীতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে একটি যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি) গঠন করা হয়েছিল, যা সুপ্রিম কোর্টের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলেছিল যে, জারদারি গ্রুপ, ওমনি গ্রুপ এবং বাহরিয়া টাউন- এ ত্রয়ির মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পাওয়া গেছে। এবং জেআইটির রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে যে, প্রাথমিকভাবে কমপক্ষে ২৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জাল হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে, যেগুলোতে ৪২শ’ কোটি রুপি অর্থ পাচারের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল।
জেআইটি তার প্রতিবেদনে অভিযোগ করেছে, দু’টি গ্রুপ সরংক্ষণ, সরকারী তহবিল, কিকব্যাকস এবং অপরাধের তদারকির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেছিল। পরবর্তীতে শীর্ষ আদালত জারদারি গ্রুপ, ওমনি গ্রুপ, বাহরিয়া টাউন, ফরিয়াল তালপুর এবং ঠিকাদার/ বিল্ডারসহ অন্যদের জেআইটির রিপোর্টে তাদের মন্তব্য সংযুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল।
এসসি-তে জমা দেয়া ১৭ পৃষ্ঠার দীর্ঘ লিখিত জবাবে জারদারি বলেছিলেন যে, ‘জেআইটি রাজনৈতিক নির্যাতনের উপায় হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে’। তিনি আরো যোগ করেন যে, কাউকে প্রমাণ না দেখিয়ে অভিযুক্ত করা সংবিধানের ১০ অনুচ্ছেদের (সঠিক বিচারের অধিকার) পরিপন্থী। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটি ন্যাবকে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট জাল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ পাচারের অভিযোগে তার জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করার সাথে সাথে মামলার শুনানি চলতে থাকে।
ইতোমধ্যে, জবাবদিহিতা আদালত বাহরিয়া টাউনের অ্যাকাউন্ট থেকে ৮৩০ কোটি রুপির সন্দেহজনক লেনদেন সম্পর্কিত একটি মামলায় সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও তার কথিত ফ্রন্টম্যান মোশতাক আহমেদকে ১৫ জুন তলব করেছে।
এনএবি’র সূত্র অনুসারে জনাব জারদারি তার অবৈধ অর্থ দিয়ে ক্লিফটনের পালাতিয়াল হাউসটি কিনেছিলেন, কিন্তু তা বৈধ অর্থে কেনা বলে দাবি করলেও প্রমাণ দিতে না পারেননি। রেফারেন্সে বলা হয়, মোশতাক নির্মাণের জন্য ১৫ কোটি রুপি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ন্যাব জানিয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হাউসের সরকারি কর্মচারী মোশতাকের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৮৩০ কোটি রুপি অবৈধ লেনদেন হয়েছে এবং এ টাকা বাহরিয়া টাউনকে দেওয়া হয়েছিল।
মামলার অপর সন্দেহভাজন, বাহরিয়া টাউন সত্ত্বাধিকারী মালিক রিয়াজের জামাই জাইন মালিক ইতোমধ্যে এনএবির সাথে একটি দর কষাকষির চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন এবং জাতীয় কোষাগারে প্রায় ৯০০ কোটি রুপি জমা দিয়েছেন। সূত্র : ডন অনলাইন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।