Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এশিয়ার দখল নিচ্ছে ভারতীয় ডেল্টা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০২১, ১২:০২ এএম

এশিয়ার দেশগুলোতে গত এক সপ্তাহ ধরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ‘ডেল্টা’ ধরনটি। সংক্রমণের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়াতেও। রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে এশিয়ার দেশগুলোতে বাড়তে থাকা ‘ডেল্টা ধরনের’ সংক্রমণের হার তুলে ধরে বলা হয়, পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেক দেশেই বিধি-নিষেধের কড়াকড়ি আরোপসহ টিকাদান কর্মস‚চির গতি বাড়ানো হয়েছে। গত বছর ডিসেম্বরে ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া ‘ডেল্টা ধরনটি’ এরই মধ্যে বিশ্বের ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ধরনটি দ্রুতই করোনাভাইরাসের অন্যান্য ধরনের চেয়ে বেশি ‘দাপুটে’ হয়ে উঠবে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসে দৈনিক সংক্রমণের হার এ বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ওই রাজ্যে শনাক্ত রোগীর বেড়ে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০০ জনে, যাদের বেশিরভাগই ‘ডেল্টা’ ধরনে সংক্রমিত। সংক্রমণ ঠেকাতে দুই সপ্তাহের লকডাউন চলছে সিডনিতে। দেশটির ২৫ কোটি মানুষের এক পঞ্চমাংশের বসবাস এই নগরে। দেশব্যাপী টিকা দেওয়ায় ধীরগতি নিয়ে কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ারও করেছে সিডনি। ফ্লিন্ডার্স ইউনিভার্সিটির কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথের ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক জিল কার বলেন, “আমি মনে করি টিকা পেলে এই রোগ অবশ্যই কমবে, এটা হাসপাতালে ভর্তির হারও কমাবে। কিন্তু তা না হলে যাদের টিকা দেওয়া হয়নি, আমরা আসলে তাদের মধ্যে ভাইরাসটি সংক্রমিত করে দেব।” এশিয়ার অনেক দেশের মত অস্ট্রেলিয়ার মানুষের মধ্যেও মহামারী দমনে টিকা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল। এছাড়া টিকা সরবরাহেও ছিল ধীরগতি। অস্ট্রেলিয়ায় মোট জনসংখ্যার মাত্র ৬ শতাংশকে এপর্যন্ত টিকা দেওয়া গেছে। এশিয়ার দেশ জাপানে করোনাভাইরাসের টিকা পেয়েছেন ১২ শতাংশ মানুষ। বুধবার জাপান জানিয়েছে, টোকিওসহ প‚র্বাঞ্চলে সংক্রমণের এক তৃতীয়াংশের জন্যই করোনাভাইরাসের ‘ডেল্টা ধরন’ দায়ী। জুলাইয়ের মাঝামাঝি তা বেড়ে ৫০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলেও জানিয়েছে দেশটি। টোকিও এবং এর আশপাশের তিনটি এলাকায় ‘আধা’ জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে। সম্প্রতি সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশটির কর্মকর্তারা বিধি-নিষেধ বহাল রাখার সুপারিশ করেছেন। ভাইরাসের ‘ডেল্টা ধরনের’ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জাপানে এ মাসে অলিম্পিক গেইমস নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার টোকিওর গভর্নর ইউরিকো কোইকে আবারও বলেছেন, পরিস্থিতির অবনতি হলে আগামী ২৩ জুলাই শুরু হতে যাওয়া অলিম্পক গেইমসে দর্শনার্থীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা শুক্রবার জানিয়েছেন, শুক্রবার ৮০০ জন নতুন রোগী পাওয়া গেছে সেখানে, যা ৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটির মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশকে এ পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে। সংক্রমণের গড় হার গত ১০ দিন ধরে বাড়তে থাকায় রাজধানী সিউলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধি এখনই শিথিল করা হচ্ছে না। সিউলের ‘এউহা উইমেন্স ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার’ এর শ্বাসতন্ত্রের রোগ বিশেষজ্ঞ চুন ইউন-মি বলেন, “ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট হচ্ছে এমন এক ধরন, যা ব্যাপক মাত্রায় সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। “ইন্দোনেশিয়া, ভারত এবং ব্রিটেনের সংক্রমণ বলছে শুধু কোরিয়া নয় আরও অনেক দেশকেই তাদের টিকা দেওয়ার কৌশল নিয়ে আবারও ভাবতে হবে এবং নতুন করে পরিকল্পনা করতে হবে।” সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়ায় গত শনিবার থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ভারতে অবশ্য সংক্রমণের হার দুই মাসের মধ্যে সবচেয়ে কমে এসেছে। গত মে মাসে দৈনিক সংক্রমণ ৪ লাখ পর্যন্ত উঠেছিল, যে কারণে গণ টিকাদানে গুরুত্ব দিচ্ছে দেশটির সরকার। রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ