পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
চলতি বছরের জুন মাসে দেশের শেয়ারবাজারে রেকর্ড লেনদেন হয়েছে। জুন মাসজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ৪৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে। দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে এর আগে কখনো জুন মাসে এত লেনদেন হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জুন মাসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২২ দিন। এই ২২ দিনে বাজারটিতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪৩ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা। সে হিসেবে জুন মাসের প্রতি কার্যদিবসে গড়া লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। এর আগে ২০১০ সালের জুন মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয় ৩৮ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। চলতি বছরের আগে এতদিন এটাই ছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে জুন মাসের সর্বোচ্চ লেনদেন। ২০১০ সালের জুন মাসেও শেয়ারবাজারে ২২ দিন লেনদেন হয়।
জুন মাসের সর্বোচ্চ লেনদেনের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ২০০৯ সাল। ওই বছরের জুন মাসজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হয় ১৫ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। সে হিসেবে ২০০৯ সালের জুন মাসের তুলনায় চলতি বছরের জুন প্রায় তিনগুণ বেশি লেনদেন হয়েছে। ২০০৯ ও ২০১০ সালে দেশের শেয়ারবাজার বেশ রমরমা হয়ে ওঠে। তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে ও ইউনিটের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়ে। মূল্য সূচক যেমন হু হু করে বাড়ে, তেমনি বাড়ে লেনদেনের গতি। কিন্তু অস্বাভাবিক ফুলে-ফেঁপে ওঠায় ২০১০ সালেই ভয়াবহ ধস নামে শেয়ারবাজারে। সে সময় শেয়ারবাজারের ধস এতটাই ভয়াবহ ছিল বিনিয়োগ করা পুঁজি হারান লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। দরপতনের প্রতিবাদে দিনের পর দিন মতিঝিলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন বিনিয়োগকারীরা। পুঁজি হারানোর ধকল সইতে না পেরে বিনিয়োগকারীর আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটে। এই সকল থেকে শেয়ারবাজারকে বের করে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়। পুনর্গঠন করা হয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে। এমনকি নিয়ন্ত্রক সংস্থার নাম পরিবর্তনও করা হয়।
পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন ধরনের আইন কানুন করার পাশাপাশি কিছু নীতিমালাতেও পরিবর্তন আনা হয়। এরপরও শেয়ারবাজারের গতি ফির ছিল না। তবে গত বছর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামকে নিয়োগ দিয়ে কমিশন পুনর্গঠনের পর বাজার যেন কিছুটা গতি ফিরে পাই। ধীরে ধীরে মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি গতি ফিরতে থাকে লেনদেনে। পতন ভুলে মুনাফা তুলে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে শেয়ারবাজারে এমন ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। তবে সদ্য সমাপ্ত জুন মাসে লেনদেনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা পেয়েছে। এ মাসে লেনদেন হওয়া ২২ দিনের মধ্যে ১২ দিনই দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ৯ জুন। ওই দিন ২৭’শ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর একদিনে সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড।
এদিকে তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুন মাসে সর্বোচ্চ লেনদেনের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ২০১১ সাল। ওই বছরের জুন মাসে ডিএসইতে ১৩ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এছাড়া ২০১৩ সালের জুনে ১৩ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা, ২০১৭ সালের জুনে ১০ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা, ২০১৫ সালের জুনে ১০ হাজার ৬১ কোটি টাকা, ২০১৮ সালের জুনে ৯ হাজার ৬৩৫ কোটি, ২০১৬ সালের জুনে ৮ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা, ২০১৪ সালের জুনে ৭ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা, ২০১৯ সালের জুনে ৭ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা, ২০০৮ সালের জুনে ৬ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা, ২০১২ সালের জুনে ৩ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা, ২০০৭ সালের জুনে ৩ হাজার ৯১ কোটি টাকা এবং ২০০৫ সালের জুনে ৫৮৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।