Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন বেড়েছে

গত বছরের প্রথম আট মাসের তুলনায় এ বছরে বেড়েছে ১৬৬ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

দিন দিন বেড়েই চলেছে ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে ডলার লেনদেনের প্রবণতা। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে (জানুয়ারি-আগস্ট) কার্ডের মাধ্যমে ২ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। যা গত ২০২১ সালের একই সময়ের চেয়ে ১৬৬ দশমকি ২৭ শতাংশ বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে মানুষ বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন করেছে ২ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। আর গত বছরের প্রথম আট মাসে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২০ কোটি টাকা। ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশে ডলার সংকটের মধ্যেই মানুষ ভ্রমণ, চিকিৎসা, শিক্ষা ও ব্যবসার কাজেও বিদেশে ডলার নিয়ে যাচ্ছেন। বিদেশে যারা যাচ্ছেন, তারা কার্ডে ডলার এনডোর্স করে নিয়েই যাচ্ছেন। এসব কারণে কার্ডের মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রা ও ডলারের লেনদেন বেড়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের আগস্টে ব্যাংক কার্ডের মাধ্যমে ৩৬ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। যা গত জুলাই মাসে ছিল ৩৮ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। এ হিসাবে জুলাই মাসের চেয়ে আগস্ট মাসে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনে ১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা কম ছিল। আগস্টে কার্ডভিত্তিক স্থানীয় মুদ্রায় ৩৬ হাজার ৩৪ কোটি টাকা লেনদেন হয় আর বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫২০ কোটি টাকা। আগস্টে স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন কমলেও ডলারে লেনদেনের পরিমাণ ছিল বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক আগেই ক্রেডিট কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের অনুমোদন দেয়। তবে ২০২০ সালের জুনে ব্যাংকগুলোকে গ্রাহকদের হিসাবের বিপরীতে আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ড ইস্যুর অনুমোদন দেয়া হয়।
দ্বৈত মুদ্রার (ডুয়েল কারেন্সি) এসব কার্ড দিয়ে দেশে বসেই বিদেশের হোটেল বুকিং, নির্দিষ্ট পরিমাণের কেনাকাটাসহ নানান খরচ করা যাচ্ছে। আবার বিদেশে যাওয়ার সময়ও অনেকে কার্ডেই বৈদেশিক মুদ্রা এনডোর্স করে নিয়ে যাচ্ছেন। কার্ডে বছরে খরচ করা যাবে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার। নগদে ও কার্ডে দুভাবেই ডলার কেনা যায় ব্যাংক থেকে। তথ্য বলছে, কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন চলতি বছরের প্রথম মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৬ কোটি, মার্চে ২৮০ কোটি, এপ্রিলে ২৪১ কোটি, মে মাসে ৩৫৮ কোটি, জুনে ৩৯৯ কোটি, জুলাইয়ে ৪৪০ কোটি ও আগস্টে ৫২০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। গত আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর মোট ইস্যু করা কার্ডের সংখ্যা ৩ কোটি ৩৩ লাখ ৮০ হাজার ৪২৯টি। এর মধ্যে ডেবিট কার্ড ২ কোটি ৮৩ লাখ ৭২ হাজার ৫৯৪ আর ক্রেডিট কার্ড ২০ লাখ ২২ হাজার ২৫৯ ও প্রিপেইড কার্ডের সংখ্যা ২৯ লাখ ২৫ হাজার ৫৭৬। কার্ডভিত্তিক লেনদেনের সিংহভাগই হয় ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে।
চলতি বছরের আগস্টে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে মোট ৩৩ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩০২ কোটি টাকা আর প্রিপেইড কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ২৯৭ কোটি টাকা। কার্ডভিত্তিক লেনদেন নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, নগদ ডলার না পেয়ে মানুষ বিদেশ ভ্রমণ, চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য কার্ডের মাধ্যমে ডলার লেনদেন করছে। এতে সাম্প্রতিক সময়ে কার্ডের মাধ্যমে ডলারে লেনদেন বেড়েছে। সর্বশেষ গত বৃহষ্পতিবার আন্তঃব্যাংকে ডলার সর্বনিম্ন ১০৪ টাকা ৭৬ পয়সা ও সর্বোচ্চ ১০৫ টাকা ৬৬ পয়সা দরে বিক্রি হয়। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে ৯৭ টাকা দরে। গত মঙ্গলবার ৬ কোটি ২০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নিয়ে চলতি অর্থবছরের এখন পর্যন্ত ডলার বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০ কোটিতে। এর বিপরীতে বাজার থেকে এসেছে ৩৮ হাজার কোটি টাকার মতো। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়। আর রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির ফলে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের উপরে ওঠা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৬ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন বেড়েছে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ