মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরপশ্চিম ও কানাডার পশ্চিমাঞ্চলজুড়ে বয়ে যাওয়া ভয়াবহ তাপপ্রবাহ এরই মধ্যে কয়েকশ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নজীরবিহীন এ দাবদাহে চলতি সপ্তাহেই কানাডার শীতপ্রধান একটি শহরের তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড ভেঙে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। এর আগে কানাডার তাপমাত্রা কখনোই ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠেনি। দেশদুটির কর্মকর্তারা এখন সামনের কয়েকদিনের তীব্র গরম ও দাবানলের ঝুঁকি মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অরেগনে গরমের তীব্রতা বুধবার থেকে কমে এলেও এরই মধ্যে রাজ্যটিতে তাপপ্রবাহজনিত কারণে ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পোর্টল্যান্ড যে কাউন্টির অন্তর্ভুক্ত, সেই মাল্টনোমা শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত ৪৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যাদের মৃত্যুর জন্য প্রাথমিকভাবে হাইপারথারমিয়াকে (হাইপোথারমিয়ার বিপরীত দশা) দায়ী করেছেন কাউন্টিটির ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। তাকে উদ্ধৃত করে দেওয়া সরকারি এক বিবৃতিতে পরিস্থিতির তুলনা করতে ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অরেগনে হাইপারথারমিয়ায় মাত্র ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলেও জানানো হয়। গত কয়েকদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটির হাসপাতালগুলোতে গরমজনিত অসুস্থতা নিয়ে আসা রোগীর চাপ বেড়েছে বলে জানিয়েছে অরেগনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় পাঁচ দিনে ৪৮৬টি হঠাৎ মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, এই সংখ্যা প্রদেশটিতে সাধারণত এই সময়ে স্বাভাবিক মোট মৃত্যুর প্রায় তিনগুণ বলে বুধবার জানিয়েছে সেখানকার ময়নাতদন্তকারী বিভাগ। “এটা প্রকৃতই স্বাস্থ্য সংকট, যা দেখাচ্ছে, তীব্র তাপপ্রবাহ কতটা প্রাণঘাতী হতে পারে। আমাদের গ্রীষ্মগুলো এখন ক্রমাগত উষ্ণ হচ্ছে, আমার আশঙ্কা আমরা ফের এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হবো,” বিবৃতিতে বলেছেন মাল্টনোমা কাউন্টির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. জেনিফার ভাইনস। কয়েকদিনের মধ্যে এ তাপপ্রবাহ পূর্ব দিকে সরে যেতে পারে বলে ধারণা করা হলেও, আবহাওয়ার যে পরিস্থিতি তাতে অ্যালবার্টা থেকে ম্যানেটোবার বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কানাডার সরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জের জ্যেষ্ঠ জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ডেভিড ফিলিপস। “কিছু কিছু এলাকায়, এ তাপপ্রবাহ সেখানকার আগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গুড়িয়ে দেবে। এটা মারাত্মক, আগে কখনোই এমনটা দেখিনি আমরা,” বলেছেন তিনি। আবহাওয়ার এ রূদ্রমূর্তির কারণ কী, তা অস্পষ্ট হলেও তাপপ্রবাহের এমন স্থায়ীত্ব ও তীব্রতা দেখে এর পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের ভূমিকা আছে বলেই মনে করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বুধবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অটোয়াতে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তাপপ্রবাহে নিহতদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন।তিনি সামনের দিনগুলোতে অগ্নিকান্ডের ঝুঁকি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। “গত কয়েক বছর ধরে আমরা আবহাওয়ার এমন রূদমূর্তি বারবার দেখে আসছি। এবারেরটাই যে শেষ তাপপ্রবাহ নয়, তাও আমরা জানি,” বলেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন থেকে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর গভর্নরদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনই ‘তীব্র তাপ ও দীর্ঘস্থায়ী খরার এমন বিপজ্জনক সংমিশ্রনের’ দিকে ধাবিত করছে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র রেকর্ড সংখ্যক দাবানল দেখতে পারে জানিয়ে, তা মোকাবেলার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে আছে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।