Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে মাঠে নেমেছে পুলিশ কঠোর লকডাউন

খলিলুর রহমান | প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০২১, ১১:৪৬ পিএম

করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার আবারও দেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে। এ সময় রিকশা ব্যাতীত সকল গণপরিবহন বন্ধ থানার নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। তাই রাজধানীর প্রত্যেকটি সড়ক এখন রিকশার দখলে। ওই সুযোগে ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশা রাজধানীর অলি-গলিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশা বন্ধ করতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডি, চাঁনখাপুলসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এছাড়া আজ থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক রাস্তায় বের হলেই মামলা করবে পুলিশ। তবে সীমিত আকারে সাধারণ রিকশা চলাচল করতে পারবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে লকডাউনে গণপরিবহণ না থাকায় রিকশার প্রাধান্য বেড়েছে। প্রধান সড়কে কম থাকলে রাজধানীর শাখা সড়ক, অলিগলিতে অবাধে চলছে ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশা। গণপরিবহন সংকটের এই শহরে ঝুঁকি নিয়েই এসব যানে চড়ছেন নগরবাসী। ট্রাফিক পুলিশকে প্রভাবিত করে রিকশা চলাচলে ব্যবস্থা করে দেয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। আজিমপুর, খিলগাঁও, মিরপুর, ধানমন্ডি, পুরান ঢাকাসহ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন শাখা সড়কে দুরন্ত গতিতে ছুটছে তিনচাকার ওই অবৈধ রিকশা। গতির কাছে হার মানছে রিকশা ভ্যান কখনো প্রাইভেটকার।

জানা গেছে, গত ২০ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সড়ক পরিবহন সেক্টর শৃঙ্খলা জোরদার এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত টাস্কফোর্সের তৃতীয় সভায় সড়ক মহাসড়কে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যেসব প্যাডেল চালিত রিকশা ও ভ্যানে ব্যাটারি এবং মোটর লাগানো হয়েছে শুধুমাত্র সেসব রিকশা ও ভ্যান থেকে ব্যাটারি/মোটর খুলে ফেলার একটি সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে এ সিদ্ধান্তটি সংশ্লিষ্ট সবখানে পাঠানো হয়।

তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে ‘লকডাউন’ শুরু হয়। এই সময় থেকে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য কিছু প্রতিষ্ঠানও সীমিত পরিসরে খোলা রাখা হয়। তবে আজ থেকে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে। আর লকডাউন চলাকালে সকল ধরনের গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে শুধু মাত্র রিকশা চলাচল করার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। আর ওই সুবাধে রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো অবাধে চলছে।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান সড়ক বাদে এলাকার অলিগলিতে চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। অলিগলিতে যাত্রীর তুলনায় অটোরিকশার সংখ্যা অনেক বেশি। এদিকে এই রিকশা চলাচলে কোনো শৃঙ্খলা দেখা যায়নি। তবে এ রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্তের পর চালকরা প্রধান সড়কের মুখে না এলেও কিছুটা ভেতরে দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী তুলছিলেন।
রাজধানীর মিরপুর, কামারপাড়া, উত্তরখান, দক্ষিণখান, উত্তরা পাঁচ নম্বরের আহলিয়া, খিলক্ষেত, বাড্ডা, রামপুরা, সূত্রাপুর, ডেমরা, ওয়ারী, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর চাঁদনগর, বেড়িবাঁধের অলিগলিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে।

ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা বলছেন, দেশে লাখ লাখ অটোরিকশা চলছে। এ বাহনের ওপর নির্ভর করে এক একটি পরিবার। আমরা অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছি। কোনো চুরি তো করছি না। এখন যদি সরকার এই রিকশা বন্ধ করে দেয় তাহলে লাখ লাখ মানুষ বেকার হয়ে যাবে। লাখ লাখ পরিবার অসহায় হয়ে পড়বে। তখন আমরা কোথায় যাবো, কি করে খাবো, কারা আমাদের কাজ দেবে?
গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার লকডাউন ভঙ্গ করে বের হলে আইনি ঝামেলায় পড়তে হবে। রিকশা ব্যবহার করা গেলেও কোনো ইঞ্জিনচালিত যানবাহন ব্যবহার করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ