বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জলিশা ঝাটরা হাসানিয়া হাই মাদ্রাসার জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুবুর রহমান তালুকদার সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে। এদিকে মাদ্রাসার নামে ১২ একর ৬৭ শতাংশ জমির মধ্যে ৬ একর ১৮ শতাংশ জমি পায়রা বন্দরের জন্য অধিগ্রহণের ফলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণের ৩ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা বেহাত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন। সোমবার দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
ঝাটরা জলিশা হাসানিয়া দ্বি-মূখী ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল বারী লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে জানান, পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার ঝাটরা জলিশা হাসানিয়া দ্বি-মূখী মাদ্রাসাটির পূর্ব নাম ছিল জলিশা ঝাটরা হাসানিয়া হাই মাদ্রাসা। ১৯৬৩ সালে তৎকালীন দাতা সদস্য হাজী আফসার উদ্দিন মুন্সি কলাপাড়া উপজেলার ইটবাড়িয়া মৌজায় এস.এ ৯৩ নং খতিয়ানে চাইনুল মগনী, বাচ্চু মগ ও মুচিং মগের কাছ থেকে ১২ একর ৬৭ শতাংশ জমি মাদ্রাসার নামে ক্রয় করেন। ওই জমি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কয়েক যুগ ধরে ভাগে দখল করছে। বিগত ২০১০ সাল থেকে কলাপাড়া উপজেলার প্রভাবশালী এবং রাজনৈতিক ক্ষমতাধর মোঃ আবু সালেহ, গাজী আব্বাস উদ্দিন, গাজী মোঃ রিয়াজ ও মোঃ সাইফুল ইসলাম সরদার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বর্গাদারকে ভাগে দখলে বিঘ্ন সৃষ্টি ও হুমকি প্রদান করে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাদের দখলীয় ভূমি রক্ষায় ০৩.০৮.২০১০ তারিখে উপরোক্ত ব্যক্তিদেরকে বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
০৬.০৯.২০১৫ তারিখে মির্জাগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে বিজ্ঞ সহকারী জজ জনাব মোঃ নাসির উদ্দিন ফরাজী মাদ্রাসার পক্ষে রায় ও ডিক্রি প্রদান করেন। তবুও ঐ প্রভাবশালীরা জমি অবৈধ ভাগে দখল করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখে গত ০১.১২.২০১৫ তারিখে বিজ্ঞ জেলা আদালতে আপিল দায়ের করেন। গত ০৯.০৫.২০১৬ তারিখে যুগ্ম জেলা জজ ২য় কোর্ট মাদ্রাসার পক্ষে ঘোষিত রায় ডিক্রি বলবৎ রেখে আদেশ জারি করেন।২০১৫ ও ২০১৬ সালে ২ টি দেওয়ানি মামলার রায় প্রমাণ করে কলাপাড়া উপজেলায় রাজনৈতিক
ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালীরা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অন্যায়ভাবে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে মাদ্রাসার জমি ভাগে দখল করার অপচেষ্টা, ইসলামি শিক্ষা, দেশ, জাতি ও ঝাটরা জলিশা হাসানিয়া দ্বি-মূখী ফাজিল মাদ্রাসার ক্ষতি সাধনের চক্রান্তে লিপ্ত আছে। ২০০৯ সালে পটুয়াখালী-৩ আসনের তৎকালীন সাংসদ মাহাবুবুর রহমান তালুকদার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ভূমি অফিসের কর্মচারী মোঃ রফিকুল ইসলাম মিয়ার যোগসাজশে কুচক্রী মহলের মোঃ. আবু ছালেহ ও গাজী আব্বাছ উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়া লাঠিয়াল বাহীনি সাইফুল সরদার ও গাজী রিয়াজ এর অবৈধ সহযোগীতায় জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কতিপয় কাগজপত্র তৈরি করে। বি.এস, রেকর্ডের সময় জরিপ কর্মচারীদের অন্যায়ভাবে বাধ্য করে মোঃ মাহাবুবুর রহমান, আবু ছালেহ, গাজী
আব্বাছ উদ্দিন ও রফিকুল ইসলাম মিয়ার নামে রেকর্ড করেন। যার আদৌ কোন ভিত্তি নাই। এদিকে মাদ্রাসার স্বত্ব দখলীয় ইটবাড়িয়া মৌজার এস.এ ৯৩ নং খতিয়ানের ১২ একর ৬৭ শতাংশ জমি হতে ৬ একর ২২ শতাংশ জমি এল.এ কেস নম্বর ১৪/ ২০১৯-২০ পায়রা বন্দরের জন্য অধিগ্রহণের নোটিশ জারি করেন।
বিগত ৩১.০৫.২০২১ খ্রি. তারিখ পটুয়াখালী এল.এ শাখার ১৩০৪ নং নোটিসের মাধ্যমে ৬ একর ১৮ শতাংশ জমির অনুকূলে ৩,৬৮,৯৭,৫২৪.৩১ টাকা ক্ষতি পূরণের জন্য বরাদ্দ করা হয়। উক্ত টাকা যাতে বে-আইনিভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতাধর সম্পন্ন কেউ উত্তোলন না করতে পারে তাই মাদরাসার পক্ষে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে মে, আবদুল বারী জেলা প্রশাসক, পটুয়াখালী বরাবর বিগত ০২.০৬.২০২১ খ্রি. তারিখ আপত্তি দাখিল করা হয়। যার এল, এ. শাখার রেজিস্ট্রি নং -২৯৩। মিস কেস নম্বর- ২৭২।
মোঃ আবু ছালেহ ও গাজী আব্বাছ উদ্দিন বিজ্ঞ আদালত পটুয়াখালী এর রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে যার নম্বর- ২১১৫/২০১৬। মামলাটি হাইকোর্টে চলমান আছে। হাইকোর্টের উক্ত ২১১৫/২০১৬ এবং পটুয়াখালী জেলা ১ ম আদালতের ২৭.০৬.২০২১ খ্রি. তারিখ দেওয়ানি মোকদ্দমা নম্বর- ২০৪/২০২১ চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত জমির টাকা যেন কেউ উত্তোলন করতে না পারে সেজন্য জেলা প্রশাসক সহ পটুয়াখালী এল.এ শাখার সংশ্লিষ্টদের এবং জমি নিষ্কণ্টক করতে প্রশাসনের দৃষ্ট আকর্ষণ করেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।