Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পশ্চিমবঙ্গের পর ত্রিপুরাতেও পতনের মুখে বিজেপি!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০২১, ২:৫৬ পিএম

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের পরপরই অঞ্চলটিতে ভাঙনের ঢেউ লাগে বিজেপি শিবিরে। দলে দলে তৃণমূলে যোগ দিতে শুরু করে বিজেপি নেতাকর্মীরা। ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়া অনেক নেতাই এখন ফিরতে চাইছেন। আর যারা ফিরছেন না, তারাও বিজেপির নানা সিদ্ধান্তে বিদ্রোহ করছেন। যা নিয়ে রাজ্য বিজেপি পড়েছে চরম অস্বস্তিতে

এরই মধ্যে প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মুকুল রায় তৃণমূলে ফিরেছেন। তাকে কেন্দ্র করে এখন আরেক রাজ্য ত্রিপুরাতেও ভাঙনের মুখে পড়েছে বিজেপি। ভাঙনের ইঙ্গিত পেতেই তড়িঘড়ি মেরামতির ব্যবস্থাও নেয় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু গত দুদিন ধরে যে পথে এগোচ্ছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে বিজেপির আড়াআড়ি বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠতে শুরু করেছে বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরায়।
ত্রিপুরা বিজেপিতে প্রথম থেকেই দ্বন্দ্ব ছিল দুই গোষ্ঠীর। একটি গোষ্ঠী মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের। অপর গোষ্ঠীটি কংগ্রেস ও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সুদীপ রায়বর্মনের। সুদীপ রায়বর্মন আবার মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ। ফলে মুকুলের ঘরওয়াপসির পর সুদীপের নেতৃত্বে ত্রিপুরায় ফের তৃণমূলের সংগঠিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে ত্রিপুরায় কেন্দ্রীয় নেতাদের টিম পাঠিয়েছে বিজেপি। তারপর দিল্লিতে সুদীপ রায়বর্মনকে তলব করে বৈঠক করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। অথচ এতদিন সুদীপ রায়বর্মন দেখা করতে গিয়েও সময় পাননি নাড্ডার। এবার তড়িঘড়ি ডেকে বৈঠকে বসেছেন। সুদীপ এতদিন বিক্ষুব্ধ ছিলেন, তার ক্ষোভ মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
শুধু সুদীপ রায়বর্মন বা তার অনুগামী বিধায়করাই নন, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বৈঠক করেছেন ত্রিপুরায় বিজেপির জোটসঙ্গী আইপিএফটি বিধায়কদের সঙ্গেও। মোট কথা সুদীপ রায়বর্মনের অনুসারী এবং আইপিএফটি বিধায়কদের ধরে রাখতে না পারলে ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার বেকায়দায় পড়ে যাবে, সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। ফলে পতনের সম্ভাবনা তৈরি হবে মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই বছর আগেই।
প্রশ্ন উঠেছে, ত্রিপুরা বিজেপিতে কি মিটমাট করতে সমর্থ হয়েছেন জেপি নাড্ডা? কারণ, নাড্ডার বৈঠকের পরও কিন্তু দলের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান দেখা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন সুদীপ রায়বর্মন ও তার অনুসারী বিধায়করা। বিজেপির ৩৬ জন বিধায়কের মধ্যে অনুপস্থিত ১০ জন। এমনকি অনুপস্থিত খোদ উপ-মুখ্যমন্ত্রীও।
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে গেরুয়া শিবরে ভাঙন ঠেকানো কি সম্ভব হবে? রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার পড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ। সুদীপ রায়বর্মনের অনুসারী বিধায়করা সরে গেলেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে বিপ্লব দেবের সরকার। তারপর যদি আইপিএফটি বিধায়করা বেঁকে বসেন, তবে পতন অনিবার্য হবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিজেপি সরকারের মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের উদ্যোগ খানিকটা প্রলেপ দিতে পারে। মন্ত্রী করা হতে পারে সুদীপ রায়বর্মন গোষ্ঠীর বিধায়ক বা আইপিএফটি বিধায়কদের মধ্য থেকে। কিন্তু বিজেপির সাবেক জাতীয় সহ-সভাপতি ও বর্তমানে তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের চালে কতটা ওলট-পালট হতে পারে, তার ওপরই নির্ভর করছে ত্রিপুরা বিজেপির ভাগ্য। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুল রায়কে নিয়ে ত্রিপুরা বিজেপিকে কোনও ঝটকা দিতে পারেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব আসলে বৈঠক ডেকেছিলেন তার সরকারের প্রতি কতজন বিধায়ক আস্থাশীল তা দেখার জন্য। কিন্তু সেখানে যে চিত্র উঠে এসেছে সেটি তার জন্য সুখকর ছিল না। সুদীপ রায়বর্মন, রামপ্রসাদ পাল, পরিমল দেববর্মন, আশিস দাস, আশিস কুমার সাহা, প্রায় সবাই মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন। তারা গরহাজির ছিলেন বৈঠকে। ফলে জল্পনা বাড়ে আরও।
সুদীপ রায়বর্মন ও তার অনুসারীরা দল ছাড়লে বিপাকে পড়বে ত্রিপুরার বিজেপি সরকার। ফলে চিন্তায় রয়েছেন বিপ্লব দেব। সুদীপ রায়বর্মনরা দল ছাড়লে সংখ্যার বিচারে পিছিয়ে পড়বে বিজেপি। সংখ্যালঘু হয়ে পড়বেন রাজ্যের গেরুয়া সরকার। কেননা, ৬০ আসনবিশিষ্ট ত্রিপুরা বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ৩১। বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা নেমে যাবে তার নিচে। সুদীপ অনুগামী বিধায়কের সংখ্যা ত্রিপুরায় প্রায় ১৫ জন। সূত্র : ওয়ান ইন্ডিয়া



 

Show all comments
  • Bappy Bhuiyan ২৮ জুন, ২০২১, ৪:২৮ পিএম says : 0
    বিজেপি ধর্মন্ধতা তার পতনের কারন
    Total Reply(0) Reply
  • HM Bayzid ২৮ জুন, ২০২১, ৪:২৮ পিএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • Mahbub Rasel ২৮ জুন, ২০২১, ৪:২৮ পিএম says : 0
    পশ্চিম বঙ্গে পতন হল কোথায়। উত্থান হইছে। আগামীতে আরো বাড়বে।
    Total Reply(0) Reply
  • Shaheen Tarafder ২৮ জুন, ২০২১, ৪:২৯ পিএম says : 0
    Good news
    Total Reply(0) Reply
  • Mujibur Rahman ২৮ জুন, ২০২১, ৪:২৯ পিএম says : 0
    ত্রিপুরায় বিজেপি হেরে গেলে কেন্দ্রে বিজেপির বিদায় সময়ের ব্যাপার!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ