গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি রুখতে এবার কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় কয়েকটি সিন্ডিকেট এবং জালিয়াত চক্র নতুন নতুন কৌশলে জালিয়াতি এবং অসদুপায়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়। পরীক্ষায় বিভিন্ন ডিভাইস নিয়ে প্রবেশের মাধ্যমে ঘটে ডিজিটাল জালিয়াতি। এবছর এসব জালিয়াতি রুখতে প্রতিটি পরীক্ষাতেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল (শুক্রবার) প্রথম পরীক্ষাতেই ভর্তি পরীক্ষার প্রতিটি কেন্দ্রেই মোবাইল ফোনসহ সকল টেলিযোগাযোগ ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। নিষেধাজ্ঞা সত্তে¡ও বিগত বছরগুলোর মতো কোন শিক্ষার্থী যাতে এসব নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে সেবিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রবেশ পথে আর্চ ওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে দেহ তল্লাশি করে ভর্তিচ্ছুদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়। গতকাল প্রথম দিনে মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের (খ ইউনিট) ভর্তি পরীক্ষায় ক্যাম্পাস ও বাইরের মোট ৭৩ কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষায় অংশ নেয় ৩৪ হাজার ৬১৬ জন শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবছর জালিয়াতি ঠেকানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রগুলোতে মোতায়েন ছিলেন ২৭০ জন পুলিশ সদস্য। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি বিপুলসংখ্যক সদস্য এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন। পরীক্ষা চলার সময় প্রস্তুত ছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অসুদপায় অবলম্বন করে ধরা পড়লে কেন্দ্র থেকে পাঠানো হবে সরাসরি জেলে। তবে খ ইউনিটের পরীক্ষায় কোন ধরনের জালিয়াতির খবর না পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। গত বছর ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ক্রেডিট কার্ডের মতো দেখতে একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রসহ এক ভর্তিচ্ছু ধরা পড়েন। পরে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাকে দুই বছরের কারাদÐ দেয়া হয়।
ব্যাংকের এটিএম কার্ডের মত দেখতে ওই যন্ত্রের সঙ্গে এই জালিয়াতিতে ব্যবহার করা হয় তারবিহীন ‘বøুটুথ’ ইয়ারপিস। যাতে সিম যুক্ত করে মোবাইল ফোনের মত ব্যবহার করা যায়। আকারে ছোট হওয়ায় অন্য কারও দৃষ্টি আকর্ষণ না করে সহজেই তা কানের সঙ্গে আটকে রাখা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বদরুন্নেছা মহিলা কলেজে ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র হয়েছে এবার। সকালে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ফটকে অবস্থান নিয়ে আছেন পুলিশ সদস্যরা। প্রবেশপত্র দেখে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে পরীক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে।
পরীক্ষার হল পরিদর্শন শেষে প্রফেসর আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘কলাভবন ও কার্জন হলসহ বড় কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। সেখানে ১/২ জন করে ভতিচ্ছু অনুপস্থিত রয়েছে।’ পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রফেসর এম আমজাদ আলী বলেন, এবার পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোনো ধরনের জালিয়াতি ঘটনা ঘটেনি। ডিএমপি পুলিশ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করেছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, জালিয়াতি ঠেকাতে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করেছে, যাতে কোনো ধাতব ডিভাইস নিয়ে কেউ হলে ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে। জালিয়াত চক্রের প্রলোভনে সাড়া না দেয়ার আহŸান জানিয়ে অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এমসিকিউ উত্তরপত্র কম্পিউটার ছাড়া কেউ পড়তে পারবে না। সুতরাং খাতা জালিয়াতির সুযোগ নেই।
শাহবাগ থানা পুলিশের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, পরীক্ষা হলে যাতে নাশকতা না ঘটে এবং পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনো ডিভাইস নিয়ে হলে যেতে না পারে, সেজন্য পুলিশ মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করেছে। জনস্বার্থেই এ ব্যবস্থা। পরীক্ষার সময় দায়িত্ব পালন করা নির্বাহী ম্যাজিট্রেট আয়েশা হক বলেন, অসদুপায় যারা অবলম্বন করতে চায়, আগে তারা বই বা চিরকুট নিয়ে হলে যেতে। এখন জালিয়াতির ধরন বদলে গেছে।
এখন তারা ইলেট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে অপরাধ করেছে। পরীক্ষায় জালিয়াতি আইনে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদÐ এবং অর্থদÐের বিধান আছে। তারপরও তারা শিক্ষার্থী বলে অপরাধে ধরন বিচার করে আমরা সাজা দিয়ে থাকি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।