মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তানের সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ণ শুরু হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখনও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে এ বিষয়ে আলাপ করেননি। তবে, ইমরান খান সম্প্রতি অ্যাক্সিওসের কাছে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি পাকিস্তানে সি.আই.এ.-এর ঘাঁটি স্থাপনের বিপক্ষে।
তাহলে আমেরিকার সাথে পাকিস্তানের সম্পর্কের ভবিষ্যত কী?-এ প্রশ্নের জবাবে গত বুধবার ভিডিও কলে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ, যেমন ভারতের চেয়ে পাকিস্তানের যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সবসময়ই নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে এবং তারপর ৯/১১-এর পর পাকিস্তান আবারো সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ত্যাগের পর, এখন মূলত পাকিস্তান একটি সভ্য সম্পর্ক চাইবে, যা আপনাদের দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে এবং আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নত করতে আগ্রহী।’
সভ্য সম্পর্কের দ্বারা তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান খান বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে, এই সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের সময় সম্পর্কটা খানিকটা একচেটিয়া ছিল। কারণ যুক্তরাষ্ট্র মনে করেছিল যে, তারা পাকিস্তানকে সহায়তা দিচ্ছে। তারা মনে করেছিল যে, পাকিস্তানকে তখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চেষ্টা করার ক্ষেত্রে পাকিস্তান যা করেছে তার জন্য প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানকে বহু মানুষের প্রান বিসর্জন দিতে হয়েছে। সত্তর হাজার পাকিস্তানি মারা গেছে এবং অর্থনীতিতে ১শ’ ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। কারণ সারা দেশে আত্মঘাতী বোমা হামলা ও বোমা ফুটেছে। এখান থেকেই সমস্যার শুরু। যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের কাছে আরো বেশি প্রত্যাশা রেখেছিল এবং দুর্ভাগ্যক্রমে, পাকিস্তান সরকারগুলো যাতে সক্ষমই ছিল না, তা সরবরাহ করার চেষ্টা করেছে।’ ইমরান আরো বলেন, ‘সুতরাং দুই দেশের মধ্যে অবিশ্বাস ছিল এবং পাকিস্তানের লোকেরা অনুভব করেছে, যে তারা এ সম্পর্কের জন্য একটি প্রচণ্ড ভারী মূল্য পরিশোধ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ভেবেছে যে, পাকিস্তান তা পর্যাপ্ত পরিমাণে করেনি। ভবিষ্যতে আমরা যা চাই তা হ’ল, আস্থা এবং সাধারণ লক্ষ্যগুলোর ভিত্তিতে একটি সম্পর্ক। এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আসলে আমাদের সম্পর্ক তাইই, আমি বলতে চাইছি, আফগানিস্তানে আমাদের উদ্দেশ্যগুলো বর্তমানে ঠিক একই।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের বিরুদ্ধে ভারতকে এ অঞ্চলে একটি চেক হিসাবে দেখে। চীনের সাথে সম্পর্ক পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত উভয়ের সাথে অপরিবর্তনীয় মতবিরোধের মধ্যে ফেলেছে কি না, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আচ্ছা, প্রথমত আমি অবশ্যই বলব যে, আমি এটি খুব, খুব অদ্ভূত বলে মনে করি যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন কেন এমন চরম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে? এটি তাৎপর্যপূর্ণ নয়, কারণ দুটি মহাশক্তি, অর্থনৈতিক মহাশক্তি, সত্যিই পরস্পরের সাথে মিলিত হয়ে বাণিজ্য করলে বিশ্ব প্রকৃতই উপকৃত হবে। সুতরাং এটি আমাদের সবার জন্য উপকারী হবে।’
ইমরান বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, কেন আমাদের যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের পক্ষ বেছে নিতে হবে? আমি মনে করি আমাদের সবার সাথে সম্পর্ক থাকা উচিত। চীন আমাদের সাথে অত্যন্ত ভাল করেছে, এ অর্থে যে, সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের পর, বা সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের সময় আমরা এদেশে সত্যিকারের হিমশিম খাচ্ছি।’
এর পাশপাশি পাকিস্তানের প্রধানমস্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ঋণ বেড়ে গেছে, একটি দেশ যুদ্ধের পরিস্থিতিতে থাকলে যা ঘটে। ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপ স্থবির হয়ে গেছে। প্রদেশ এবং উপজাতি অঞ্চলগুলো যুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়েছে। সুতরাং চীন এমন একটি দেশ যা পাকিস্তানকে সহায়তা করেছে এবং স্পষ্টতই চীনের সাথে আমাদের দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে।’
ইমরান খান বলেন, ‘সুতরাং এক নম্বর, আমি দেখছি না, কেন যুক্তরাষ্ট্রের মনে করা উচিত যে, ভারত চীনের বিপক্ষে প্রাচীর হতে চলেছে। ভারত যদি এ ভূমিকা গ্রহণ করে তবে আমি মনে করি, এটি ভারতের জন্য ক্ষতিকারক হবে। কারণ চীনের সাথে ভারতের বাণিজ্য ভারত এবং চীন উভয়ের পক্ষে লাভজনক হতে চলেছে। ’ সূত্র : দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।