Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জলবায়ু মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান

প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পৃথিবীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আর্তি
ইনকিলাব ডেস্ক : আমাদের হাতে নষ্ট করার মতো সময় নেই। জলবায়ুর মানবসৃষ্ট পরিবর্তনের কারণে বিপন্ন হয়ে ওঠা পৃথিবীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি এভাবেই আর্তি জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিদায়ী মহাসচিব বান কি মুন। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের ইস্যুতে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে মুন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন। সংবাদ সম্মেলনে জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে নতুন করে ৩১টি দেশের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়ার কথা জানান তিনি। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় সংখ্যক দেশের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন নিয়ে চলতি বছরেই জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়ন করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তবে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা গেছে, মহাসচিবের আশা আর বিশ্বের বাস্তবতার মধ্যে ফারাকটা মোটেও কম নয়। চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে তাই এখনও রয়েছে সংশয়। গত বুধবার জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন জানান, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এ বছরের এপ্রিলে বিশ্বনেতাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হওয়া প্যারিস সমঝোতা চুক্তির আওতায় কাজ করতে এরইমধ্যে ৫৫টিরও বেশি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে। চুক্তিটি বাস্তবায়নের ব্যাপারে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে নতুন করে ৩১টি দেশ তাদের অনুমোদনপত্র জমা দিয়েছে বলে জানান তিনি। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি অনুমোদনকারী দেশের সংখ্যা ৬০টিতে দাঁড়িয়েছে। আর বিশ্বে গ্রিনহাউজ গ্যাসের ৪৭.৫ শতাংশই এ ৬০টি দেশ থেকে নির্গত হয়ে থাকে। তবে নতুন দেশগুলোর যোগদানের পরও চুক্তিটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরও সাড়ে সাত শতাংশ কার্বন নির্গতকরণের জন্য দায়ী দেশগুলোর অনুমোদন প্রয়োজন। কেননা, গত ২২ এপ্রিল স্বাক্ষরিত হওয়া ওই চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশ্বের ৫৫ শতাংশ কার্বন নির্গতকরণের জন্য দায়ী এমন অন্তত ৫৫টি দেশের অভ্যন্তরীণ অনুমোদন প্রয়োজন। আর চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ৫৫টি দেশের অনুমোদনের ৩০ দিন পর চুক্তিটি কার্যকর করা যাবে।
আইপিসিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সেই শিল্পায়নের যুগ থেকে মুনাফার স্বার্থে মানুষ প্রকৃতির দিকে খেয়াল না করেই পুড়িয়ে যাচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানি, বায়ুম-লে জমা করেছে কার্বনের অভিশাপ। বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত প্রমাণ হাজির করেছেন, শিল্পোন্নত দেশগুলোর এই মুনাফার উন্মাদনার কারণেই বৈশ্বিক তাপমাত্রা মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে গেছে। হারিয়ে গেছে ঋতু বৈচিত্র্য। ওজোন স্তরে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ফুটো। গলতে শুরু করেছে দুই মেরুতে জমে থাকা বরফ। জলবায়ুর প্রভাবজনিত কারণে বেড়ে গেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা, কৃষিতে নেমে এসেছে বিপর্যয়। ক্রমাগত জলবায়ু-উদ্বাস্তুতে রূপান্তরিত হচ্ছে মানুষ। জলবায়ু ইস্যুতে ২০১৪ সালে সবশেষ প্রতিবেদন জমা দেয় জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্তঃরাষ্ট্রীয় প্যানেল (আইপিসিসি)। ওই পঞ্চম মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বিশ্বের জলবায়ু পরিস্থিতিকে কেবল বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি বরং পৃথিবীকে নিরাপদ রাখতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দেয়া হয়। ২০০৬ সালে করা স্টার্ন রিভিউ-এর আলোকে ২০১৪ সালের আইপিসিসি প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। স্টার্ন রিভিউতে জলবায়ু পরিবর্তনের অর্থনৈতিক প্রভাবকে মূল্যায়ন করা হয়েছিল। এতে অর্থনৈতিক মডেলিং-এর মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছিল যে, জলবায়ু বিরূপ প্রভাবের সঙ্গে অভিযোজিত হওয়া (অ্যাডাপটেশন) এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব কমিয়ে আন তথা মিটিগেশনের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এ খরচ বাড়বে। আর তাই যতো দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেয়াটা আবশ্যক বলে প্রতিবেদনে জোর দেওয়া হয়েছিল। এর ২ বছর পরে এসে জাতিসংঘ মহাসচিব বললেন, সত্যিই নষ্ট করার মতো সময় নেই আমাদের হাতে। জলবায়ুর অব্যাহত পরিবর্তনে সাগরবর্তী এলাকাগুলোতে নেমে আসছে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়। বিবিসি, রয়টার্স, ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জলবায়ু মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ