Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নোয়াখালীর হাতিয়াবাসী নিজস্ব অর্থায়নে নদীর তীর রক্ষায় হাজার হাজার জিও ব্যাগ ফেলছে

আনোয়ারুল হক আনোয়ার | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২১, ১:২৬ পিএম

দেশের অপার সম্ভাবনাময় দ্বীপাঞ্চল হাতিয়া উপজেলার উত্তরাঞ্চলে নদীভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। হাতিয়া উপজেলায় রয়েছে স্বর্ণদ্বীপ, ভাসানচর ও পর্যটনখ্যাত নিঝুমদ্বীপ। এছাড়া চতুঃপার্শ্বের রয়েছে অর্ধশতাধিক চর-ডুবোচর। কিন্তু হাতিয়া মূলভ‚খন্ডের উত্তরাঞ্চলের ভাঙ্গন অবাহত রয়েছে। হাতিয়ার ঐতিহ্যবাহী আফাজিয়া বাজার অচিরেই মেঘনার করাল গ্রাসে নিমজ্জিত হবার প্রহর গুনছে। এতে করে শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কয়েক হাজার পরিবার গৃহহীন হবার আশঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নদীভাঙ্গরোধে দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে এসেছে হাতিয়াবাসী। যে যার সামর্থ অনূযায়ী আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ভাঙ্গরোধে। হাতিয়া উত্তরাঞ্চলের নলচিরা ঘাটের পূর্বপাশের্^ ৫০০মিটার এবং পশ্চিমপাশ্বের ২০০মিটারসহ ৭০০মিটার এলাকার নদীর তীরে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ১ লাখ ১৫ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হবে। ইতিমধ্যে ১৬হাজার ৫০০ জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে।

নদীভাঙ্গন রোধকল্পে গঠন করা হয়েছে হাতিয়া নদী তীর শাসন ও তীর সংরক্ষণ কমিটি। এতে সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রধান উপদেষ্টা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ মহিউদ্দিন আহমদের সভাপতি ও
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন মুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কার্যকর কমিটি গঠন করা হয়েছে। দাতাদের সুবিধার্থে ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। এ রিপোর্ট লিখা পর্য্যন্ত ৯৭লাখ ২৯হাজার ৩০০টাকা পাওয়া গেছে।


স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষক, প্রবাসী, চাকুরিজীবি, পরিবহন মালিক, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের নিজস্ব অর্থায়নে জিও ব্যাগ ফেলে নদীর তীর রক্ষার কাজ চলছে। প্রাথমিক পর্যায়ে একাজে ব্যয় নির্ধারন করা হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। বিভিন্ন পেশার মানুষ তাদের ভিটেমাটি রক্ষায় এই সংগঠনের নিকট অনুদান দেওয়া শুরু করেছে। এজন্য গাজীপুরের একটি কারখানা থেকে দুই ধাপে আনা হয়েছে ২৪ হাজার জিও ব্যাগ। বালু ভর্তি ও ডাম্পিং এর জন্য রংপুর থেকে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ৫০জন শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। এরআগে ২০২০ সালে নলচিরা ঘাটে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েক হাজার জিওব্যাগ নদীতে ফেলা হয়। এতে ভাঙ্গনরোধে সফলতা পাওয়ায় দ্বীপবাসীর মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। তাই এখন পূরোদমে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন জানান, ইতিপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে প্ল্যানিং কমিশনে প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলে উক্ত প্রকল্পটি বড় পরিসরে ও পর্যালোচনা জন্য ফেরত পাঠানো হয়। উক্ত প্রকল্পটি প্রতিপালন করে পূণরায় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্ল্যানিং কমিশনের অনুমোদন পেলে হাতিয়া উপজেলায় স্থায়ীভাবে ভাঙ্গনরোধে কাজ শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীর উদ্যোগে ভাঙ্গনরোধে নদীতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা একাজে দিক নির্দেশনা প্রদান করছে।

হাতিয়া নদী তীর শাসন ও তীর সংরক্ষণ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী জানান, নদী ভাঙ্গনরোধে জনগণের স্বত:স্ফুর্ত সমর্থন পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে এর সূফল পাওয়া মিলেছে। দলমত নির্বিশেষে হাতিয়াবাসী সহযোগীতা প্রদান করছে। আমি আশা করি জাতীয় অর্থনৈতিক কমিশন (একনেকে) উক্ত প্রকল্পটি অনুমোদন প্রদান করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী ভাঙ্গন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ