Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, ভাঙনে বিলীন ৫শ’ পরিবার

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০২১, ৬:২৪ পিএম

কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভাঙন কবলিত মানুষজন। গত এক মাসের ব্যবধানে তিস্তা নদী বেষ্টিত উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার, থেতরাই পাঁকার মাথা, গুনাইগাছ আউনিয়নের নাগড়াকুড়া টি-বাঁধ, বজরা ইউনিয়নের চর বজরা,পূর্ব বজরা ও পশ্চিম বজরা এলাকায়সহ তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়েছে ৫ শতাধিক পরিবাবের বসতভিটা, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজারঘাট, পাঁকা রাস্তা ও ফসলি জমি। ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে মসজিদ,স্কুল-মাদরাসা, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ আরো নানান স্থাপনা।

উপজেলায় নদী ভাঙন দেখা দিলেও কয়েক দিন ধরে ভাঙনের মুখে পড়েছে থেতরাই গোড়াইপিয়ার এলাকা। ভাঙনের হুমকির কবলে গোড়াইপিয়ার মুলাধোয়া জামে মসজিদ, গোড়াইপিয়ার পিয়ারি দাখিল মাদরাসা,গোড়াইপিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোড়াইপিয়ার জামে মসজিদ সহ গোড়াইপিয়ার কমিউনিটি ক্লিনিক। এমন ভাঙন অব্যাহত থাকলে দুই একদিনের মধ্যে গোড়াইপিয়ার মুলাধোয়া জামে মসজিদটি ভেঙে যাবে বলে শঙ্কিত এলাকাবাসী। বাপ-দাদার বসতভিটা, ফসলি জমিসহ ওই সব প্রতিষ্ঠান ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করতে এলাকার শিশু,নারী-পুরুষ,বৃদ্ধ, বণিতা গাছের গুল,ডালপালা ফেলে স্রোতের গতি পরিবর্তন করতে শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিস্তা নদীর ভাঙন কবলিত গোড়াইপিয়ার এলাকার আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, চাঁদ মিয়া,আজিজ মন্ডল,আবু বক্কর, আকরাম মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়,গত বছর কুড়িগ্রাম পাউবো কর্তৃক ভাঙন রোধে ৩’শ ৯০ মিটার এলাকায় প্রায় ১৫/১৬ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছিল সেগুলো এখন অধিকাংশই নদীর পানির স্রোতে চলে গেছে। এলাকার লোকজন দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানান।

থেতরাই ইউনিয়নের ১নং ওর্য়াডের সাবেক ইউপি সদস্য নূরন্নবী সরকার (৭০) অশ্রুসিক্ত নয়নে সাংবাদিকের বলেন,আমার কষ্টে অর্জিত সম্পদে গড়া গোড়াইপিয়ার মসজিদ, মাদরাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিক আমার জীবদ্দশায় নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে তা ভাবতেই কষ্টে বুকফেটে যাচ্ছে। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যর্থ হলে ইতিহাস ঐতিহ্যর গোড়াইপিয়ার নাম থেতরাই মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। সেই সাথে আমার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানগুলো নদী গর্ভে বিলীন হবে।

থেতরাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল জলিল শেখ বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙনে এ ইউনিয়নে প্রতিবছর শতশত মানুষজন নদী ভাঙনের শিকার হচ্ছেন। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি, যেন অতি দ্রুত হোকডাঙ্গা পাকার মাথা, গোড়াইপিয়ার এলাকায় ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম সরদার বলেন,কিভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করা যায় এবং এলাকাটি ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন,বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং তাঁরা এলাকাটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। খুব শীঘ্রই ভাঙন রোধে কাজ আরাম্ভ করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন,এলাকাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। অতিদ্রুত ভাঙন রোধে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুড়িগ্রাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ