বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজশাহীতে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রনে নগরীতে সর্বাত্বক লকডাউন দিয়েও মৃত্যু আর সংক্রমনের হার তেমন কমেনি। তারপরও রাজশাহীতে সংক্রমনের হান তেমন কমেনি। নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার বাড়তির দিকে। মৃত্যুও দশ থেকে তেন জনের মধ্যে ঘুরফির খাচ্ছে। কিছুটা কমলে পরের দিনই তা আবার বেড়ে যাচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে সংক্রমন কমেছে।
রাজশাহীতে এখন আরটি-পিসিআর, র্যাপিড এন্টিজেন এবং জিন এক্সপার্ট টেস্ট করা হচ্ছে। গড়ে সংক্রমনের হার ২২ থেকে ২৫ শতাংশ। তবে শুধু পিসিআর ল্যাবে সংক্রমনের হার এখও ৪০ শতাংশের উপরে। জনস্বাস্থ্যবিদরা পিসিআর ল্যাবে করা নমুনা পরীক্ষাকেই সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য বলছেন। দুটি ল্যাবে পিসিআর মেশিনে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে একটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগে। অন্যটি রামেক হাসপাতালে। দুটি ল্যাবের নমুনা পরীক্ষায় গড় সংক্রমনের হার একদিন ৩০ শতাংশে নামলে পরদিন ৪০ এ উঠে যাচ্ছে। রাজশাহীতে সর্বাত্বক লকডাউন শুরু হয়েছে গত ১১জুন বিকাল থেকে। মেয়ার শেষ হবে ২৪ জুন। কিন্তু পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। গত তিন সপ্তাহে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। লকডাউন আরো বাড়বে কিনা তা এখনো বলা যাচ্ছেনা।
পিসিআর ল্যাবে সংক্রমনের হার বেশি থাকলেও কম হচ্ছে র্যাপিড এ্যান্টিজেন টেস্ট এবং জিন এক্সপার্টে। ফলে সংক্রমনের গড় হার কমে যাচ্ছে। ১৯জুন এই হার ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ। তবে পিসিআর ল্যাবের হারকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। যাদের উপসর্গ আছে তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে র্যাপিড টেস্ট করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে র্যাপিড এ্যান্টিজেন টেস্ট হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়েও এই টেস্ট করানো হচ্ছে। পরিসংখানে জানাযায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর ৬০ শতাংশ গ্রাম থেকে আসছেন। যাদের অধিকাংশই কৃষক ও গৃহিনী। যারা নগরী থেকে আসছেন তাদের অধিকাংম ব্যবসায়ী। রাজশাহী নয় উপজেলার মধ্যে হটস্পট হিসাবে পাঁচ উপজেলাকে চিহিৃত করা হয়েছে। নবাবগঞ্জ সংলগ্ন গোদাগাড়ী তানোর থেকে বেশি রোগী আসছে। এর পরের স্থানে আছেন দূর্গাপুর, বাগমারা ও চারঘাট থেকে আসা রোগী। সিটি কর্পোরেশন এলাকার বোয়ালিয়া থানার বেশি রোগী আসছে। যাদের অধিকাংশ ব্যবসায়ী। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা নিয়ে হিমসিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় থামানো যাচ্ছে না করোনার সংক্রমণ। তাই এখন রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই রেকর্ড ভাংছে। তবে এখনো সময় ফুরিয়ে যায়নি জানিয়ে, সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই এই মহামারি মোকাবেলা সম্ভব।
রাজশাহীর জনস্বাস্থ্যবিদ ডা: চিন্ময় কান্তি দাস বলেন, এখনও অনেক মানুষের মাঝে করোনার টেস্ট করাতে অনীহা রয়েছে। ফলে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে তাদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে চিকিৎসা শুরুর আগেই। এর ফলে মৃত্যু কমানো যাচ্ছেনা। তাই আরও বেশি যেন টেস্ট হয় সেটা তদারকি করতে হবে। তিনি মনে করেন, রাজশাহীতে এখন এলাকাভিত্তিক করোনার সামাজিক সংক্রমন ঘটেছে। এ কারনে একদিন কম অন্যদিন সংক্রমনের হার বেশি হচ্ছে।
বিষয়টি স্বীকার করলেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: হাবিবুল আহসান তালুকদার। তিনি বলেন, ধরুন আজ শহরের কোর্ট স্টেশন এলাকার নমুনা বেশি টেস্ট হয়েছে। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সংক্রমনের হার কম। কিন্তু পরদিন যখন সাহেববাজার এলাকার নমুনা বেশি টেস্ট হচ্ছে তখন দেখা যাচ্ছে সংক্রমনের হার বেশি। তবে লকডাউনের ফলে সংক্রমনের হার কিছুটা কমেছে বলেই মনে করেন। ডা: বলেন, লকডাউন শুরুর সময় তো সংক্রমনের হার ৫০ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। এখন সেটা কোনদিন ৩০, কোনদিন ৪০ হচ্ছে। তাহলে একটু কমেছেই।
অন্যদিকে প্রকৃত চিত্র বুঝতে অন্তত ১৪দিন অপেক্ষা করার কথা বলছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী। তিনি বলেন, এখন যারা শনাক্ত হচ্ছেন তারা আগেই আক্রান্ত হয়েছে। কোয়ারেনটাইনের নিয়ম হচ্ছে ১৪দিন। তাই ১৪দিন পরই প্রকৃত চিত্রটা বোঝা যাবে। এজন্য লকডাউনটা ভালভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।