Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা

প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে করোনায় মৃত্যু ১০ গুণ বেশি ভারতে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

ভারতে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু পর থেকে ব্যাপকহারে মানুষ মারা যাচ্ছে। প্রথম থেকে অভিযোগ সরকার মৃত্যুর তথ্য লুকাচ্ছে। এবার ভারতের বিহার রাজ্যে এ ধরণের তথ্য চুরির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভারতের বিহারে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি হিসাবে জানানো হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা তার চেয়ে ১০ গুণ বেশি। করোনায় মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য লুকনোর অভিযোগ উঠেছে বিহার সরকারের বিরুদ্ধে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন বিপর্যস্ত গোটা দেশ, সেসময় জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে রাজ্যে ৭ হাজার ৭১৭ জন করোনা সংক্রমণে মারা গেছেন বলে দাবি করেছিল বিহার সরকার। কিন্তু ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম’-এ নথিবদ্ধ হিসাব অনুযায়ী, ওই সময়ে বিহারে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মৃত্যুর কোনও কারণ উল্লেখ নেই। কোভিড হানা দেওয়ার আগে ২০১৯ সালের প্রথম পাঁচ মাসের হিসাব অনুযায়ী, বিহারে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। ২০২১ সালে তা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে হয় ২ লাখ ২০ হাজার। অর্থাৎ এক বছরেই ব্যবধান ৮২ হাজার ৯৫১। এর মধ্যে ৬২ শতাংশের মৃত্যু হয় শুধু মে মাসেই। অপরদিকে, ভারতে এবছরের অক্টোবর মাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আরও অন্তত এক বছরের জন্য মহামারি জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে থাকবে। তবে তারা বলছেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের চেয়ে ভালোভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ৩ -১৭ জুনের মধ্যে বিশ্বের ৪০ জন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, ভাইরোলজিস্ট, এপিডেমিওলজিস্ট ও অধ্যাপকদের মধ্যে এই জরিপ চালায় রয়টার্স। এতে উঠে এসেছে, দ্রুত টিকাদানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কারণে নতুন সংক্রমণের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে। জরিপে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞদের ৮৫ শতাংশের (২৪ জনের মধ্যে ২১ জন) মতে ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসবে অক্টোবরে। কিন্তু তিনজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, আগস্ট এবং ১২ জন বলছেন সেপ্টেম্বরেই আসতে পারে তৃতীয় ঢেউ। আর বাকি তিনজন বলেছেন, তৃতীয় ঢেউ আসবে নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারির মধ্যে। ৩৪ জনের মধ্যে ২৪ জন বিশেষজ্ঞ (৭০ শতাংশ) বলছেন, নতুন সংক্রমণ এখনকার চেয়ে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ভারতে প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউ ছিল ভয়াবহ। টিকা স্বল্পতা, হাসপাতালে ওষুধ, অক্সিজন ও বেডের অভাব দেখা দিয়েছে। অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস)-এর পরিচালক ড. রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, করোনার তৃতীয় ঢেউ আমাদের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে। এখন অনেকে টিকা নিয়েছেন। তাছাড়া কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অনেকের দেহে প্রাকৃতিক কারণে প্রতিরোধশক্তি তৈরি হয়ে গিয়েছে। এখন পর্যন্ত ভারতে টিকা নেওয়ার উপযুক্ত বিবেচিত ৯৫ কোটি মানুষেল মধ্যে সম্পূর্ণ ডোজ পেয়েছেন মাত্র ৫ শতাংশ। এতে করে অনেকেই এখনও সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন এই বছর টিকাদান কর্মস‚চিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটবে। দ্রুত বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের বিষয়েও তারা সতর্ক করেছেন। যদিও কয়েকটি রাজ্যে লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়েছে। সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউয়ে ১৮ বছরের কম বয়সীরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ (৪০ জনের মধ্যে ২৬ জন) বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, এ আশঙ্কা রয়েছে। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সেস (নিমহ্যানস)-এর এপিডেমোলজি ডিপার্টমেন্টের প্রধান প্রদীপ বানানদুর বলেন, এখন কমবয়সীদের জন্য কোনও ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি। তাই তাদের সংক্রমিত হওয়ার এই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। টিওআই, রয়টার্স।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা ভাইরাস

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ