Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ফল-ফসলের অনন্য মিতালি ছাদবাগানে

দৃষ্টি কেড়েছে ঠাকুরগাঁয়ের ঘোষপাড়ায়

রুবাইয়া সুলতানা বাণী, ঠাকুরগাঁও থেকে | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২১, ১২:০৭ এএম

গাছের প্রতি ভালোবাস মানুষের মনকে সবুজতায় ঢেকে রাখে। একই সাথে মনকে এমনভাবে সুন্দর রাখে যাতে সবসময় মনে হবে প্রকৃতি কাছেই আছে। আর এমন কাজটিই করেছেন ঠাকুরগাঁও শহরের ঘোষপাড়ার মিন্টু আহমেদ। তিনি শখের বসে বাসার ছাদে করেছেন সবুজের বাগান।

সবুজের সাথে প্রতিদিনের মিতালী তাকে দিন দিন আগ্রহী করে তুলে। ছোট বাগান শখে করলেও সেটি এখন অনেক বড় হয়েছে। ছাদ বাগানে আছে অসংখ্য প্রজাতির ফলের গাছ। পাশাপাশি রয়েছে সবজির বাগান। মিন্টু পরিবারের জন্য ফল ও সবজি বাজার থেকে কেনা ছেড়েই দিয়েছেন। পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণের সঙ্গে ছাদের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে আকাশে গড়ে তোলা সবুজের সমারোহ।
ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের সবার দৃষ্টি কেড়েছে ঘোষপাড়ায় মিন্টু আহমদের ছাদ বাগান। অনেকেই বলছেন তরা বিকালের দিকে ঘোষপাড়ায় ঘুরে যান ওই বাগানের জন্য। বাসার ছাদে এমন বাগান দেখে সবার মন ভালো হয়ে যায়। এই বাগান থেকে আশেপাশের লোকজন নির্মল বাতাস পাচ্ছে।

বাসার ছাদ বাগানে কমপক্ষে ৭০ প্রজাতির বিভিন্ন ফলের গাছ রয়েছে। বাগানে উৎপাদিত ফল পরিবারের চাহিদা পূরণ করে। পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশ দের মাঝেও বিতরণ করেন মিন্টু আহমেদ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ইনকিলাবকে বলেন, বাগান দেখার জন্য অনেকেই আসেন। কেউ কেউ বলেন, ছাদে এমন বাগান দেখার পর তাদের মন ভালো হয়ে যায়। আর এমন কথা তাকে উৎসাহ দেয়।

তিনি জানান, কম খরচে বিভিন্ন দেশ থেকে গাছের চারা এনে ছাদ বাগানকে সুন্দর করেছেন। বাগান পরিচর্যা কি একাই করেন? এমন প্রশ্নে মিন্টু বলেন, প্রথম দিকে তিনি একাই বাগানে কাজ করতেন। কিন্তু দিন দিন বাগান বড় হওয়ায় একা করার প্রশ্নই আসে না। সবচেয়ে বড় সাহায্যকারীর দায়িত্ব পালন করছেন স্ত্রী ফৌজিয়া সুলতানা দীনা। তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে সকাল ও বিকাল বাগানের পরিচর্যা করেন।

মিন্টু প্রথমে ইউটিউবে ছাদ বাগান দেখে উৎসাহী হন। চিন্তা করতে শুরু করেন কী করে নিজের বাসার ছাদে বাগান করা যায়? এমন বাগানের স্বপ্ন দেখেন যেটি পরিবারের পুষ্টির অভাব দূর করবে। আবার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাও করবে। এমন চিন্তা থেকেই ২০১৫ সালে প্রথম দেশের বাইরে থেকে ফলের তিনটি চারা এনে বাসার ছাদে টবে লাগান। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে মিন্টুর বাগানে গাছের সংখ্যা। এক বছর পর বাসার পুরো ছাদ সবুজে ছেয়ে। পরিপূর্ণভাবে গড়ে উঠেছে একটি বাগান।

মিন্টু আরো জানান, ছাদ বাগানে আল্লাহর অশেষ রহমত রয়েছে। ফল ও সবজির ফলন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে বাগানে উৎপাদিত ফল ও সবজি বাজারে বিক্রি করার চিন্তা করছেন।
বাগানে আছে ১৪ ধরনের আম, ৪ ধরনের কমলা, ৩ ধরনের মাল্টা- আঙ্গুর, ২ ধরনের জামরুল, পেয়ারা, বড়ই ও লেবু, লিচু, কাঁঠাল, কামরাঙ্গা, আমড়া, জলপাই, সফেদা, সরিফা, আমলকী, বেদেনা, জাম্বুরা, বেল, আতা, করম-চা, আপেল, নাশপাতি, ড্রাগন ফল, ডালিমসহ দেশি-বিদেশি প্রায় ৭০ প্রজাতির ফলের গাছ।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আবু হোসেন বলেন, মিন্টু আহমেদ তার বাসার ছাদে বিভিন্ন ফল ও সবজির চারা দিয়ে অসাধারণ একটি বাগান করেছে। এমন একটি উদ্যোগ বেকারদের জন্য উদহারণ। চাকরির পিছনে না ছুটে মিন্টু আহমদের ছাদ বাগানের দিকে তাকালে নিজেরাও সামনের দিকে পথ চলার সহজতর রাস্তা পাবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাগান

৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ