Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জ্যাক মা ভালো আছেন, হংকংও ভালো থাকবে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২১, ৪:৫৭ পিএম

চীনের ধনকুবের ও আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা এখন কিছুটা নিভৃত জীবন কাটাচ্ছেন। আপাতত প্রচারের আলোয় আসতে আগ্রহী নন তিনি। চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার সহপ্রতিষ্ঠাতা জো সাই জানিয়েছেন, রোজই জ্যাক মার সঙ্গে কথা হয় তার। জ্যাক মা খুব ভালো আছেন। প্রিয় কাজ ছবি এঁকে সময় কাটাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি জো সাই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, মহামারী, অর্থনৈতিক মন্দা এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও, ‘হংকং ভাল হতে চলেছে।’

গত নভেম্বরে চীনা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আলিবাবার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর পর থেকেই জ্যাক মাকে প্রকাশ্যে খুব কম দেখা যাচ্ছে। একটা সময় পর্যন্ত জ্যাক মা ছিলেন চীনের সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি। কিছু বিশ্লেষক বলছেন, আলিবাবার মতো একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এতই ক্ষমতাশালী হয়ে উঠছিল যে তাকে ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নেয় বেইজিং। পাশাপাশি জ্যাক মার স্পষ্টভাষীতাও ক্ষমতাসীনদের চিন্তার কারণ হয়ে উঠছিল। প্রযুক্তিবিষয়ক এক সম্মেলনে জ্যাক মা চীনের ঐতিহ্যবাহী ব্যাংকগুলোর সমালোচনা করেন। তিনি সেখানে ডিজিটাল ব্যাংকিং পদ্ধতির প্রশংসা করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে চীনের আর্থিক খাতেরও নানা সমালোচনা করেন তিনি।

এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক প্রযুক্তি খাতের শিল্পগুলোর ওপর কঠোর নীতি আরোপ করে চীন। দেশটির সবচেয়ে বড় ডিজিটাল পেমেন্ট গেটওয়ে আলিপের কার্যক্রম সঠিক নয় বলে দাবি করা হয়। আলিপে মূলত আলিবাবার শাখা প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘনেরও অভিযোগ আনা হয়। তবে ধারণা করা হয়, চীনা আর্থিক খাত নিয়ে জ্যাক মার সমালোচনাই এসবের পেছনের কারণ। একপর্যায়ে আলিবাবার বিরুদ্ধে প্রতিযোগতা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে চীন। বলা হয়, বছরের পর বছর ধরে বাজারে নিজের অবস্থানের অপব্যবহার করেছে আলিবাবা। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে ২৮০ কোটি ডলার জরিমানা করা হয়। এর পর থেকেই মূলত আড়ালে চলে যান জ্যাক মা। এখন জানা গিয়েছে, তিনি ভালো আছেন, ছবি এঁকে সময় কাটাচ্ছেন।

হংকং নিয়ে জো সাই বলেন, ‘যেহেতু তারা জাতীয় সুরক্ষা আইন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাই এখন সবকিছু স্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।’ তিনি কয়েক মাসের ঐতিহাসিক গণ-বিক্ষোভের পরে গত বছর নগরীতে প্রণীত একটি বিতর্কিত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে এই কথা বলেছিলেন। এই আইন বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, বিচ্ছিন্নতা এবং উপদলকে নিষিদ্ধ করেছিল এবং এই অঞ্চলে চীনা রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা পরিচালনা করার অনুমতি দিয়েছে। তার পর থেকে বেশ কয়েকজন বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বিদ্যালয়গুলিকে তাদের পাঠ্যক্রম থেকে সমালোচনামূলক বই সরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ ব্যাপকভাবে গণ-বিক্ষোভকে সীমাবদ্ধ করেছে।

হংকংয়ের বিলিয়নেয়ার ব্যবসায়ী জো সাই এই সঙ্কটের সময়ে তার অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করে বলেছিলেন যে, ‘২০১৯ সালে যখন মানুষ রাস্তায় প্রতিবাদ করছিল তখন আমি রাস্তায় যেতে ভয় পেতাম।’ তাইওয়ানে বেড়ে ওঠা জো সাই যোগ করেছেন, ‘এই প্রতিবাদকারীদের সাথে আমি আসলে শারীরিকভাবে হুমকির মধ্যে পড়েছি।’

তিনি যুক্তি দেখিয়ে বলেন যে, অচলাবস্থা থাকা সত্ত্বেও হংকংয়ে এখনও একটি স্বল্প মাত্রার কর থেকে শুরু করে উন্মুক্ত বাজার পর্যন্ত বৈশ্বিক ব্যবসায়ের কেন্দ্র হিসাবে বজায় থাকার জন্য অনেক প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি একটি মুক্ত বাজার অর্থনীতি, আপনি আজ হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে টাকা রেখেছেন...হংকংয়ের ডলারে, কাল আপনি এটি মার্কিন ডলারে নিতে পারবেন। এখানে মূলধনের একটি অবাধ প্রবাহ আছে।’

হংকংকে দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব এবং পশ্চিমের সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা কেন্দ্র হিসাবে দেখা হচ্ছে। ১৯৯৭ সালে ব্রিটেন থেকে চীনে এই নগরটির হস্তান্তর হওয়ার পরেও, এটি কয়েক দশক ধরে এর অবস্থান ধরে রেখেছে, হস্তান্তরের তারিখ থেকে ৫০ বছর ধরে তার অর্ধ-স্বায়ত্তশাসিত অবস্থা বজায় রাখা হবে বলে বেইজিং অঙ্গীকার করেছিল। তবে সম্প্রতি, হংকংয়ের আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের মতে, ‘গত কয়েক বছরে অভূতপূর্ব সংখ্যক প্রবাসী এই শহর ছেড়ে চলে যাওয়ায় বা শহর ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে’ আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার হিসাবে এর অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। সূত্র: সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ