Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কৃষ্ণাদের বিস্ময়কর সাফল্যে স্বপ্ন ছুঁয়েছে আকাশ

খেলাধুলায় এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েরা-১

প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রক্ষণশীল সমাজের গন্ডি থেকে বেরিয়ে এসে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে একটার পর একটা সাফল্যের ইতিহাস রচনা করছে নারী ক্রীড়াবিদরা। মেয়েদের সাফল্যে উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা। খেলাধুলায় মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার চিত্র ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে আজ থেকে
শামীম চৌধুরী : একেই বলে বৈপরীত্য? ২০০৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ‘বি’ গ্রুপে তিন ম্যাচে ২৯ গোল হজম করেছে আ¤্রা চিং মারমার দল। ১১ বছর পর এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবলের বাছাইপর্বে কৃষ্ণারা সেখানে অপরাজেয়। প্রতিপক্ষের জালে গোল দিয়েছে ২৬টি! ২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে মেয়েদের অভিষেকটা ছিল দুঃসহ এক অভিজ্ঞতার। জাপানের কাছে ২৪-০ গোলে হারে মেয়েদের ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিল অশনি সংকেত। শঙ্কা কাটিয়ে এখন মেয়েরা সেখানে গুনে গুনে কিরগিজস্তানকে দিয়েছে ১০ গোল, শক্তিশালী ইরান (৩-০), চাইনিজ তাইপে (৪-২) পায়নি পাত্তা! গোলবন্যায় ভাসিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (৪-০), সিঙ্গাপুরকেও (৫-০)! দেশের মাটিতে এমন সাফল্যে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টে চূড়ান্ত পর্বের টিকিট পেয়েছে বাংলাদেশের কিশোরীরা। এমন সাফল্যে পুরস্কার আর সংবর্ধনায় ভাসছে মেয়েরা। আর এক ধাপ পেরুলেই অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের টিকিট পেয়ে যাবে মেয়েরা। কৃষ্ণা, সানজিদা, তহুরাদের স্বপ্ন এখন ছুঁয়েছে আকাশ।
অথচ কি জানেন, বাংলাদেশে মেয়েদের ফুটবল প্রবর্তনের ইতিহাসটা মোটেও মসৃণ ছিল না। ২০০০ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে নারী ফুটবল দল এসেছিল ২টি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সফরের দ্বিতীয় ম্যাচটি আয়োজনই করতে পারেনি সে সময়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। যশোরে অনুষ্ঠিত একমাত্র প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচে বাংলাদেশ নারী দল গড়তে ১১ জনকেই  জড়ো করতে পারেনি দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলা ক্রীড়া সংস্থা! বাধ্য হয়ে স্বাগতিক দলের একাদশ সাজাতে সফরকারী দলটি নিজেদের খেলোয়াড় ধার দিয়েছে! এমন বিস্ময়কর তথ্য দিয়েছেন মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদিকা কামরুন নাহার ডানাÑ‘পশ্চিমবঙ্গ থেকে দলটি যখন এলো, তখন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হলো। হ্যান্ডবল, ভলিবল থেকে ক’জনকে ডেকে আনলাম, কিন্তু তাতেও যে ১১ জন নারী ফুটবলার জড়ো করতে পারলাম না। আমরা চাচ্ছি, মেয়েদের ফুটবলটা শুরু হোক, সফরকারী দলও এসেছে প্রীতি ফুটবল খেলতে। আমাদের বিব্রতকর অবস্থা দেখে ওরা ওদের ক’জন মেয়েকে দিয়ে দিল আমাদের দলে।’
২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলের গল্প এর চেয়ে বেশি জানা নেই কামরুন নাহার ডানার। প্রতিটি দেশের ফুটবল ফেডারেশনকে নারী ফুটবলে কাজ করতে হবেÑ বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা এবং এশিয় ফুটবলের শাসক সংস্থা এএফসি’র বাধ্যতামূলক শর্ত ছিল এটাই। তার বিপরীতে উন্নয়নে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার কাছ থেকে প্রতি বছর ১০ হাজার মার্কিন ডলার অনুদানের পুরোটাই যেতো ছেলেদের ফুটবলে! বাফুফে সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। ২০০৩ সালে বাফুফের কার্যনির্বাহী সভায় নারী ফুটবল প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মরহুম সিরাজুল ইসলাম বাচ্চুকে সভাপতি এবং কামরুন নাহার ডানাকে সম্পাদিকা করে গঠিত হয় কমিটি। নারী ফুটবল সংগঠনের দায়িত্বটা অর্পিত হয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থার উপর। ২০০৪ সালে মির্জাপুরের শফিপুরে আনসার একাডেমীতে শুরু হয় আগ্রহী নারী ফুটবলারদের ট্রেনিং। ভলিবল, হ্যান্ডবল, কাবাডি, সাইক্লিং, সাঁতারের মেয়েদের জড়ো করে তাদের পায়ে তুলে দেয়া হয় ফুটবল! পাহাড়ী মেয়েদের স্ট্যামিনা বেশি বলে সেখান থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মেয়েকে ফুটবলার বানানোর পদক্ষেপও নেয় বাফুফের ওম্যান উইংস। তবে ভেস্তে যেতে বসেছিল এই উদ্যোগ। ২০০৪ সালে আমন্ত্রণমূলক টূর্নামেন্ট দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নারী ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে যেয়ে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়েছিল ওম্যান উইংসকে। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মুস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আমন্ত্রণমূলক নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধ করার দাবিতে একদল উগ্র মৌলবাদি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ভবন পর্যন্ত করেছে ঘেরাও। অথচ, এখন দৃশ্যপটে সে কি পরিবর্তনÑবাংলাদেশের কিশোরীদের ফুটবল শৈলী দেখতে এখন টিকিট কেটে দর্শক আসেন স্টেডিয়ামে, তাদের সমর্থনে চাঙ্গা হয় মেয়েরা!
বাংলাদেশের কিশোরী ফুটবলারদের সাফল্যের এই গল্পটা রচনার প্রেক্ষাপট তৈরি করে দিয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসাকে নিয়ে প্রবর্তিত বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট। ২০১১ সালে টূর্নামেন্টটি শুরুর আগে বাংলাদেশে মেয়েদের ফুটবল মূলত ছিল সীমিত পরিসরে। এই টুর্নামেন্ট থেকেই আলোচনায় এসেছে ময়মনসিংহের প্রত্যন্ত অঞ্চল ধোবাউড়ার কলসিন্দুর গ্রাম। যে গ্রামের ৯ কিশোরী ফুটবলার সানজিদা, তহুরা, তাসলিমা, মারিয়া, মার্জিয়া, শিউলি, রোখসানা, আনুচিং, আনাই এখন মাতাচ্ছে বাংলাদেশ, দিচ্ছে উৎসবের উপলক্ষ। ১৩-তে পা রেখে খেলেছে তারা ২০১৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবলের বাছাইপর্ব। ২০১৫ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ রিজিওনাল ওম্যান্স চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের শিরোপা জয়ের নেপথ্যে এই ৯ কিশোরী! আবার সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের ব্রোঞ্জ জয়ী দলেরও প্রতিনিধি এই কিশোরীরা! যে দলটি এক বছর আগে খেলেছে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ রিজিওনাল ওম্যান্স ফুটবলে, সেই দলটিই এবার খেলেছে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে! তাদের সাফল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে কলসিন্দুরের সাধারণ মানুষ, কলসিন্দুরে আলো জ্বালিয়ে এখন সেই আলোর ঝলকানি পুরো দেশে।
কলসিন্দুর থেকে নারী  ফুটবল তৈরি হওয়ার গল্পটা শুনিয়েছেন স্পট কিকে অসাধারণ হয়ে ওঠা সানজিদাÑ‘২০১১ সালে যখন বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়, তখন মফিজ স্যার (শরীরচর্চা শিক্ষক) আমাদের  স্কুলের নাম এন্ট্রি করেন। তখন ফুটবল পায়ে পেয়ে সে কি আনন্দ! একসাথে ১৫-১৬ জন স্যারের কথায় নেমে পড়লাম। সেখান থেকে এখনো ৯ জন আমরা একসঙ্গে আছি। কে কতক্ষন বল পায়ে রাখতে পারে, বল পায়ে কসরত রপ্ত করিয়েছেন মফিজ স্যার। প্রথম টুর্নামেন্টে আমরা হেরে গেলাম। তারপরও হাল ছাড়িনি। পরের বছরই চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।’
পরবর্তী ধাপটাই এগিয়ে দিয়েছে মেয়েদের। বাড়িয়ে দিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ২০১২ সালে বেসরকারী এনজিও প্রতিষ্ঠান প্লান ইন্টারন্যাশনালের আয়োজনে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১২ ওম্যান্স ফুটবল টুর্নামেন্ট বদলে দিয়েছে দৃশ্যপট। সেই চিত্রটাই তুলে এনেছেন অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনÑ‘ওই টুর্নামেন্ট থেকে আমরা ২১০ জন মেয়েকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করেছি। বাফুফে থেকে ১৪ জন কোচকে পাঠানো হয়েছিল তাদেরকে ট্রেনিং দিতে। তাদের বাছাইকৃত ৪৬ জন মেয়েকে নিয়েই শুরু হয় আমাদের পথচলা। ২০১৪ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাইপর্বে জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে দিয়েছে মেয়েরা, শক্তিশালী ভারত এবং ইরানের কাছে হেরে যাই। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। নেপাল এবং তাজিকস্তানের পরের ২টি টুর্নামেন্টে তো রীতিমতো ইতিহাস।’
মাত্র ক’বছরের মধ্যে কিশোরীরা যে সাফল্যের গল্প রচনা করেছে, এতোটা উচ্চাশা কিন্তু ছিল না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের। তবে নিবিড় অনুশীলন এবং পরিচর্যা পেলে যে অসম্ভবকে সম্ভবে পরিনত করা যায়, কৃষ্ণা, সানজিদা, তহুরাদের সাফল্যে তা জেনে গেছেন বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগÑ‘স্বপ্নটা এতো বড় ছিল না। পরিকল্পনাও ছিল না সুদুরপ্রসারী। একটার পর একটা ধাপ যখন পেরুচ্ছে মেয়েরা, তখন তাদেরকে চোখে চোখে রাখার চিন্তা আসে। নেপালের টুর্নামেন্ট খেলতে যেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প দেখেছে মেয়েরা, কাঠমান্ডুতে আতঙ্কে কাটিয়েছে রাত। বিভীষিকাময় ওই রাতে ভয়ে মেয়েরা হোটেলের বাইরে কাটিয়েছে। পরদিন বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে জরুরীভাবে ঢাকায় আনা হয়েছে মেয়েদের। জানেন, এই মেয়েদের চাওয়া পাওয়া বলতে কিছুই নেই, সারাক্ষন দেশের কথাই ভাবে তারা। ঈদ এর ছুটি দেইনি যখন, তখনো টুঁ শব্দ করেনি।’
২০০৫ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবলে নিজেদের অভিষেক ম্যাচে জাপানের কাছে ২৪ গোল খেয়েছে বাংলাদেশ নারী দল। সেই স্মৃতি এখনো আবছা হয়ে যায়নি নারী ফুটবল দলের ম্যানেজার কামরুন নাহার ডানা’রÑ‘বিশ্বাস করুন এতো বড় ব্যবধানে হেরেও লজ্জা পাইনি। আমরা যে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহন করতে পেরেছি, এটাই তখন অনেক বড় খবর। জানেন, ওই ম্যাচে আমি প্রতিটি গোলের মুহূর্ত নোট করেছি। বিশ্বাস করতাম একদিন বাংলাদেশের মেয়েরা নতুন ইতিহাস রচনা করবে।’
কিশোরীদের এই সাফল্যে একটু বেশিই গর্বিত বাফুফের কার্য নির্বাহী সদস্য এবং ওম্যান উইংসের চেয়ারপার্সন মাহফুজা আক্তার কিরণÑ‘এক দিনে কিন্তু মারিয়া, মার্জিয়া, কৃষ্ণা, সানজিদা তৈরি হয়নি। ৪ বছর ধরে তাদের পেছনে লেগে আছি। টার্গেট ছিল এশিয়ার সেরা ১০ এ নিয়ে যাব মেয়েদেরকে, তা পেরেছি। এখন স্বপ্ন দেখছি অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের। আগামী বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে সেরা তিন-এ থাকতে পারলেই তা সম্ভব হবে।’
যে মেয়েদেরকে নিয়ে স্বপ্নের পরিধি ছুঁয়েছে আকাশ, সেই মেয়েদের কেউ কিন্তু সচ্ছল পরিবারের নয়। দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের সংস্থান করাই তাদের জন্য কষ্টকর। সানজিদার বাবা লিয়াকত আলী পেশায় কৃষক, বর্গাচাষী। তাসলিমার বাবা সবুজ মিয়া কাঁচামরিচ, পিঁয়াজ বিক্রেতা। মরিয়ম মান্দ্রার মা এন্তা মান্দ্রা কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীতে গ্রামের রাস্তায় রাস্তায় কাটেন মাটি! মার্জিয়ার বাবা আবদুল মোতালেব ইজিবাইক চালক। স্বপ্নার বাবা মোকছার মিয়া দিনমজুর, কৃষ্ণা রানীর বাবা বাসুদেব চন্দ্র সরকার দর্জির কাজ করেন। মাসুরার বাবা রজব মিয়া দিনমজুর। মৌসুমি জাহানের পরিবার চলে গার্মেন্টস কর্মী বড় বোন কুলসুমের আয়ে!
এই সব অভিভাবকের কাছে রাজধানী ঢাকায় পা রাখা ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। অথচ, মেয়েদের সাফল্যে আরামবাগের ফুটবল ভবনে মেয়েদের আবাসন সুবিধা দেখেছেন তারা, অভিভূত চোখে দেখেছেন পাঁচতারা হোটেল সোনারগাঁ। বাফুফের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে এইসব কৃতী মেয়েদের গর্বিত বাবা-মাও হয়েছেন সম্বর্ধিত। যে মেয়েকে ফুটবলার বানানোর স্বপ্ন দেখতে চাননি, চেয়েছেন মায়ের কাজের সহযোগিতা করুক মেয়েÑ সেই মেয়েরাই এখন দেখাচ্ছে দেশকে অবিশ্বাস্য স্বপ্ন। স্বপ্নার বাবা রংপুরের কৃষক মোকছার আলী তাই মেয়েকে তুলে দিয়েছেন বাফুফের হাতেÑ ‘ছোটবেলায় মেয়ে যখন ওর মামাত ভাই এর সঙ্গে বল খেলতো, তখন হাসতাম। হারু নামের এক কোচ যখন চাইল মেয়েকে, বললেন ওর ভাত-কাপড়ের দায়িত্ব নিতে চান তিনি। সঙ্গে রতœা, মৌসুমীর দায়িত্বটাও নিতে চান। বিনিময়ে মেয়েকে ফুটবলার বানানোর পরিকল্পনা তার।  পলিছাড়া প্রাইমারি স্কুলের হয়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবলে খেলানোর কথা ভাবছেন, তখন আপত্তি করিনি। এখন মেয়ের জন্য আমাকেও চিনছে বাংলাদেশ। তাই মেয়েকে বাফুফের হাতে তুলে দিলাম। স্বপ্না এখন আর আমার একার মেয়ে নয়, পুরো বাংলাদেশের মেয়ে সে।’
স্বপ্নার বাবা’র মতো একই প্রতিজ্ঞা কৃষ্ণা, মার্জিয়া, তহুরা, তাসলিমা, সানজিদা, মাসুরার অভিভাবকদেরও। মেয়েরা যেদিন কিরগিজস্তানকে গুনে গুনে দিয়েছে ১০ গোল, তার পর দিনই ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে ৫-০ গোলে হেরে দেশকে লজ্জায় ডুবিয়েছে পুরুষ জাতীয় ফুটবল দল! তাই ছেলেদের লজ্জা ঢেকে দেয়া এইসব মেয়েদের নিয়ে স্বপ্ন দেখাটাই যে স্বাভাবিক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষ্ণাদের বিস্ময়কর সাফল্যে স্বপ্ন ছুঁয়েছে আকাশ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ