মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : নিরাপত্তাহীন বিশ্ব-বাস্তবতায় বিভিন্ন দেশের মধ্যে সমন্বয় ও ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে চলমান জাতিসংঘের ৭১ তম সাধারণ অধিবেশনের বার্ষিক বিতর্কে গত মঙ্গলবার সকালের সেশনে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এই আহ্বান জানান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বর্তমান মেয়াদের শেষ প্রান্তে রয়েছেন বারাক ওবামা। এবারের অধিবেশনেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাধারণ পরিষদে বিদায়ী ভাষণ দেন। গত মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তাহীনতার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বৃহত্তর সমন্বয়ের আহ্বান জানান ওবামা। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক শরণার্থী সংকট এবং বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলায় একটি নতুন কর্মপদ্ধতি গ্রহণের ওপরও জোর দেন তিনি। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অগ্রগতি এবং এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন ওবামা। তবে এসময় তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিচ্যুতির কথাও স্বীকার করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ঠা-া যুদ্ধের অবসান হওয়ার পর আমরা একটি শতাব্দীর এক-চতুর্থাংশ সময় পেরিয়ে এসেছি। নানা দিক থেকে পৃথিবী এখন আগের তুলনায় কম সহিংস। আগের চেয়ে বেশি সমৃদ্ধ।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ঘোষণা করেছেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার শরণার্থী নিবে ৫০ টি দেশ। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক একটি সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এমন ঘোষণা দেন। প্রেসিডেন্ট বলেছেন, সম্মেলনে যোগ দেয়া ৫০টি দেশ এই শরণার্থী গ্রহণ করবে। এর মধ্যে জার্মানি ও কানাডার মত দেশ আসছে বছরে গত বছরের চাইতে দ্বিগুণ শরণার্থী গ্রহণ করবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও জানান ওবামা। আগামী মাসের ১লা দিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হচ্ছে ২০১৭ অর্থবছর। এই অর্থ বছরে দেশটি ১ লাখ ১০ হাজার শরণার্থী গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছে। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হতে যাওয়া বিদায়ী অর্থবছরে তাদের গৃহীত শরণার্থীর সংখ্যা হবে ৮৫ হাজার। বারাক ওবামা বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো এবং দেশ দুটির জনগণকে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ কখনও রাজনীতি খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু তারা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। আমি এই সম্মেলনে যোগ দেয়া ৫০ টি দেশকেও ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা বাস্তব সম্মত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন’। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আহবানে সাড়া দিয়ে এবার মানবিক সাহায্যের পরিমাণ সাড়ে ৪ বিলিয়ন বাড়ানোর ঘোষণাও দেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রই দেবে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন ডলার। প্রেসিডেন্ট হিসাবে অষ্টম ও শেষবারের মত জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন বারাক ওবামা। এমন সময় এসব ঘোষণা দিচ্ছিলেন ওবামা যখন একদিন আগে সিরয়ায় বিমান হামলায় জাতিসংঘের ত্রাণবাহী ১৮টি লরি ধ্বংস হয়ে যায়। নিহত হয় ২০ জন বেসামরিক মানুষ। জাতিসংঘের হিসাবে শিশ্বেজুড়ে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১০ লাখ শরণার্থী গৃহহীন হয়ে দেশ ছেড়েছে। এর মধ্যে ৯০ লাখই গৃহহীন হয়েছে গত ৬ বছর ধরে চলা সিরিয়া যুদ্ধের কারণে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রকে মানব-ইতিহাসের এক বিরল পরাশক্তি হিসেবে উল্লেখ করে নিরাপত্তা বিষয়ক বিতর্কে ওবামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজের সংকীর্ণ স্বার্থের বাইরে চিন্তা করতে সক্ষম হয়েছে। ভালো কিছুর জন্য বলপ্রয়োগ করেছে। এ মুহূর্তে বিশ্ব শান্তির হুমকি হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার এবং জিকা ভাইরাসের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ অঞ্চল নিয়েও কথা বলেন ওবামা। তিনি এ সংক্রান্ত তর্ক-বিতর্কের চেয়ে এর শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। রুশ জাতীয়তাবাদ এবং রাশিয়ার প্রতিবেশীদের বিষয়ে মস্কোর হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেন ওবামা। তিনি বলেন, এর ফলে রাশিয়ার মর্যাদা খর্ব হবে। তার সীমানা কম নিরাপদ হবে।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের এবারের অধিবেশনে বিভিন্ন দেশের ১৩৫ জন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এতে চলমান নানা বৈশ্বিক সংকট নিরসনে আলোচনা করবেন। এ বছর জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি, জাতিসংঘ ওয়েবসাইট, ও দ্য টেলিগ্রাফ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।