Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের সিনোভ্যাকে অনুমোদন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

পাকিস্তানে স্থানীয়ভাবে তৈরি টিকা চালু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম

চীনের দ্বিতীয় করোনার টিকা হিসেবে সিনোভ্যাক কোম্পানির টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মঙ্গলবার রাতে এই খবর জানিয়ে বিবিসি বলেছে, এই অনুমোদনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে টিকা বিতরণের উদ্যোগ কোভ্যাক্সে চীনের এই টিকা ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হলো। এদিকে, স্থানীয়ভাবে তৈরি করোনা ভ্যাকসিনটি ‘পাকভ্যাক’ চালু করেছে পাকিস্তান। চীনের ক্যানসিনো বায়ো’র সহায়তায় সফলভাবে এটি বিকাশ করার এক সপ্তাহ পরে এটি সবার জন্য উন্মোচন করে দেয়া হলো। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে সিনোভ্যাকের টিকা। ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের দুই ডোজের এই টিকা দেয়া হয়। প্রথম ডোজের চার সপ্তাহ পর এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়ে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার অর্থ হলো টিকাটি নিরাপত্তা, কার্যকারিতা ও প্রক্রিয়াজাতকরণে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, সিনোভ্যাকের টিকাগ্রহীতাদের অর্ধেকের বেশি মানুষ উপসর্গযুক্ত করোনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। আর শতভাগ গুরুতর অসুস্থতা ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো অবস্থা হওয়া থেকে মুক্ত হয়েছেন। এর আগে গত ৭ মে চীনের আরেক কোম্পানি সিনোফার্মের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পশ্চিমা দেশগুলোর বাইরে উদ্ভাবিত করোনার টিকাগুলোর মধ্যে ওই টিকাই প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছিল। তার আগে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না ও জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনার টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল ডব্লিউএইচও।

চীনের এই টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন কোভ্যাক্স উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারত সরকার সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা কোভিশিল্ডের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় মুখ থুবড়ে পড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স। সিনোভ্যাক বলছে, মে মাসের শেষ নাগাদ তারা দেশ–বিদেশে ৬০ কোটি ডোজের বেশি টিকা সরবরাহ করেছে। তার মধ্যে ৪৩ কোটির বেশি ডোজ টিকা দেয়া হয়ে গেছে। সিনোভ্যাকের টিকার প্রধান সুবিধাগুলোর একটি হচ্ছে, এটি ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যায়। এর অর্থ সিনোভ্যাকের টিকাটি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ব্যবহারের জন্য বেশি উপযোগী।

এদিকে, স্থানীয়ভাবে তৈরি করোনা ভ্যাকসিনটি ‘পাকভ্যাক’ চালু করেছে পাকিস্তান। চীনের ক্যানসিনো বায়ো’র সহায়তায় সফলভাবে এটি বিকাশ করার এক সপ্তাহ পরে এটি সবার জন্য উন্মোচন করে দেয়া হলো। ‘পাকভ্যাক’ উন্মোচনের সাথে সাথে, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের (পিআইএ) একটি বিশেষ ফ্লাইট বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসলামাবাদে সিনোফর্ম ভ্যাকসিনের ৫ লাখ ডোজ পরিবহন করে নিয়ে আসে। কারণ কর্তৃপক্ষ দেশটির সকল প্রাপ্তবয়স্ককে টিকা দেয়ার জন্য বিশাল কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘পাকভ্যাক’ চালু করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আসাদ উমর, যিনি জাতীয় কমান্ড ও অপারেশন সেন্টারেরও (এনসিওসি) প্রধান, জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ডক্টর ফয়সাল সুলতানসহ অন্যান্যরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উমর বলেন, দিনটি দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ভ্যাকসিনটি যারা তৈরি করেছেন তাদেরকে নিয়ে গোটা জাতি গর্বিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে আমরা আমাদের চোখের সামনে এ দেশে বিশাল বিপ্লব প্রত্যক্ষ করেছি।’

প্যাকভ্যাক তৈরি করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় ওষুধ সংস্থা ক্যানসিনো বায়ো। এটি একটি ঘনীভূত আকারে পাকিস্তানে আনা হয়েছিল, যেখানে এটি ইসলামাবাদের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে (এনআইএইচ) প্যাকেজ করা হয়েছে। ক্যানসিনোই ছিল প্রথম চীনা টিকা যারা পাকিস্তানে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালিয়েছে। সংস্থার অন্তর্র্বতীকালীন কার্যকারিতার ফলাফলগুলি দেখায় যে, লক্ষণীয় করোনভাইরাস কেস প্রতিরোধে এই ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা ছিল ৬৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং গুরুতর সংক্রমণ রোধে সাফল্যের হার ছিল ৯০ দশমিক ৯৮ শতাংশ। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ