পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাস্তবিক প্রয়োগের জন্য নয়-শুধুমাত্র ভয় দেখানোর লক্ষ্যেই ব্যবহৃত হচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ১৯(৩) ধারাটি। আইনটি প্রণয়নের পর ব্যবহৃত হওয়ার দৃষ্টান্ত খুবই কম। তবে তথ্য ও রেকর্ডপত্র প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ধারাটির উদ্ধৃতি চলে সবচেয়ে বেশি। আইনজ্ঞরা বলছেন, যে আইনের প্রয়োগ নেই সে আইন না করাই ভালো। অভিজ্ঞ দুদক কর্মকর্তারা জানান, অনুসন্ধান ও তদন্তের ক্ষেত্রে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। প্রধান প্রতিবন্ধকতাটি হচ্ছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অসহযোগিতা। বিশেষ করে অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় সন্দেহভাজন ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হলে তারা নানা চাতুর্যের আশ্রয় নেন। এছাড়া ‘সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজ’ কারো বিষয়ে রেকর্ডপত্র চাইলে বিশেষত; ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ভূমি অফিস, রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো দুদককে সেটি সরবরাহে গড়িমসি করে।
এতে অপরাধলব্ধ অর্থ পাচার, জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জন, অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপন, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে লাভবান হওয়া এবং জালিয়াতি অভিযোগের অনুসন্ধান বিলম্বিত হয়। এতে মাসের পর মাস অতিবাহিত হলেও অনুসন্ধান কর্মকর্তারা নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেন না। ফলে একদিকে যেমন দুর্নীতি উদ্ঘাটন কঠিন হয়ে পড়ে, অন্যদিকে দুর্নীতির আলামত কিংবা প্রমাণ বিনষ্টের আশঙ্কা দেখা দেয়। কালক্ষেপণের কৌশল নিয়ে ‘সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজ’ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার মওকা পেয়ে যান। এমনকি বাদী, বিবাদী ও সাক্ষী অবসরে চলে যান। অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবা মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। এসব কারণে একটি সফল অনুসন্ধানের দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল কঠিন হয়ে পড়ে। অথচ দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান এবং মামলা তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রেকর্ডপত্র হাতে পাওয়া।
কর্মকর্তারা আরো জানান, অভিযোগে উল্লেখিত বিষয়ে রেকর্ডপত্র চাওয়া হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রথমত দুদক কর্মকর্তার চিঠিকে গুরুত্ব দিতে চান না। কখনো বা আইনজীবীর পরামর্শে কালক্ষেপণের কৌশল হিসেবে রেকর্ডপত্র সরবরাহে গড়িমসি করেন। হয়তো বা ভাবেন যে, রেকর্ডপত্র সরবরাহ না করলে দুদক তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান-তদন্ত চালাতে পারবে না। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারবে না। একইভাবে মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে আসামির জবানবন্দী ও সাক্ষীর বক্তব্য নেয়ার জন্য (কমিশন আইনের ১৯ ও ২০ ধারা এবং কমিশন বিধিমালার ২০ বিধিসহ ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬০ ধারা মতে) দুদক কর্মকর্তা তলবি নোটিশ দেন। এতেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সাড়া দেন না। তারা হয়তো ভাবেন যে, রেকর্ডপত্র না দিলে কিংবা তলবে সাড়া না দিলে মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে যাবেন। এসব ক্ষেত্রে দুদক কর্মকর্তারা দুদক আইনের ১৯ (৩) ধারাটি উল্লেখ করে সেটির কার্যকরিতা উল্লেখ করে ভয় দেখান। দুদক আইনের ১৯(৩) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোন কমিশনার বা কমিশন হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাকে উপ-ধারা (১) অধীন ক্ষমতা প্রয়োগে কোনো ব্যক্তি বাধা প্রদান করিলে বা উক্ত উপ-ধারার অধীন প্রদত্ত কোনো নির্দেশ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ব্যক্তি অমান্য করিলে উহা দণ্ডনীয় অপরাধ হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের কারাদণ্ডে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।’ অর্থাৎ তথ্য ও রেকর্ডপত্র না দেয়া কিংবা তলবে হাজির না হওয়াকে দুদকের অনুসন্ধান-তদন্তে ‘বাধা প্রদান’, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে অমান্য করা’ উল্লেখ করে দুদক কর্মকর্তা মামলা ঠুঁকে দিতে পারেন। কিন্তু মামলা ঠুঁকে দেয়ার প্রশ্নে দুদক দ্বিধাগ্রস্ত। রেকর্ডপত্র না দেয়া কিংবা অসহযোগিতাতো দূরের বিষয় হুমকি-ধামকি, উড়োচিঠি, প্রভাবশালীদের টেলিফোন হুমকির মতো সরাসরি বাধা দেয়া হলেও দুদক এ ধারাটি প্রয়োগ করে না। কেউ সরাসরি হুমকি দিলেও দুদক কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে সাধারণ ডায়েরি করে ঘটনা ধামাচাপা দেন। কমিশন এ ধারায় মামলা অনুমোদন করে না।
অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে একজন পরিচালক জানান, অভিযুক্তের পক্ষ থেকে সরাসরি বাধা পাওয়ার পরও ১৯(৩) ধারায় মামলার প্রস্তাব অতীতের কোনো কমিশন অনুমোদন দেয়নি। উল্টো নানা রকম যুক্তি তুলে ধরে মামলার সুপারিশ নাকচ করে দেয় কমিশন। এই কর্মকর্তা আরও জানান, দুদক প্রতিষ্ঠার পর ১৯ (৩) ধারাটি মাত্র দু’বার ব্যবহার করা হয়েছে। রেকর্ডপত্র না দেয়ার অভিযোগে কয়েক বছর আগে দক্ষিণবঙ্গের একজন নারী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এ ধারায় একটি মামলা হয়। আরেকটি মামলার প্রস্তাব দেয়া হলে কমিশন সেটি নাকচ করে দেয়।
দুদকের সাবেক আইনজীবী ব্যারিস্টার আকবর আমীন বাবুল বলেন, ‘যে আইনের প্রয়োগ নেই সেই আইন না করাই ভালো। একটি ধারা আইনে থাকবে অথচ প্রয়োগ হবে না-কারণ বোধগম্য নয়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।