পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও বৃষ্টির প্রভাবে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে মাদারীপুরের কালকিনির আড়িয়াল খাঁ নদের পানি। এতে করে নতুন করে শুরু হয়েছে ভাঙন। এ ভাঙনের কবলে পরে বিলীন হয়ে গেছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাইক্লোন শেল্টার, একটি মসজিদ ও ফসলি জমি। এছাড়া বিগত দিনে ভাঙনে প্রায় কয়েকশ’ পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে এ নদের ভয়ঙ্কর তাণ্ডব।
অপরদিকে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ওই এলাকার দুই শতাধিক পরিবার। আড়িয়াল খাঁ ভাঙন কবলিত অনেক মানুষ কোনো প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দ্রুত ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। অপরদিকে চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এ পর্যন্ত তিনবার বিলীন হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি ভেঙে পড়ে নদে চলে যাওয়ায় নির্মাণ কাজে রডের বদলে বাঁশের চটি ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ভবন ভেঙে বাঁশের চটি বের হওয়ায় এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
গতকাল দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আলীনগর এলাকার চরহোগলপাতিয়া গ্রাম। এ গ্রামের ওপর দিয়েই বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদ। গ্রামটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত হয়ে পড়ে রয়েছে। নেই কোনো আধুনিক সুযোগ-সুবিধাও। বিগত দিনেও বিলীন হয়েছে এ গ্রামের অনেক বাড়িঘর, কয়েকশ’ একর ফসলি জমি ও চরহোগলপাতিয়া জামে মসজিদ। কিন্তু তখন কেউ এগিয়ে আসেনি এ গ্রামের মানুষের পাশে। দুই দিন আগে আড়িয়াল খাঁ নদে চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি কাম সাইক্লোন শেল্টার, প্রায় ১ কিলোমিটার জমির ধান, আখ ও পাটসহ বিভিন্ন প্রকার ফসলি জমি চলে গেছে। এছাড়া বর্তমানে একের পর এক আড়িয়াল খাঁর পেটে চলে গেছে- চরহোগলপাতিয়া গ্রামের আসাদুল বেপারি, এমদাদুল হাওলাদার, শিপন বেপারী, শহীদ বেপারী, তালেব বেপারী, চুন্নু তালুকদার, অমর হোসেন, সোবহান তালুকদার, কামাল তালুকদার, রুবেল, বেনু বেগম ও আসমা আক্তারসহ অন্তত ৫০ জনের বসতবাড়ি।
ভাঙন আতঙ্কে কুদ্দুস তালুকদার, সামাদ বেপারী, হামেদ বেপারী, শহীদ বেপারী, আজগর বেপারী ও জলিল আকনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার তাদের বসতবাড়ি দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে হোগলপাতিয়াসহ ৫টি গ্রামের মানুষ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বলেন, চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ পর্যন্ত তিনবার বিলীন হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি ভেঙে পড়ে বিলীন হওয়ায় দেখা গেছে নির্মাণ কাজে রডের বদলে বাঁশের চটি ব্যবহার করা হয়েছিল। গত বছর ভাঙনরোধে নামমাত্র কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। তা নিয়ে রয়েছে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ।
ভুক্তভোগী ময়না ও রেনু খানমসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ‘আড়িয়াল খাঁ নদ আমাগো ঘড়বাড়ি, জায়গা জমি সব কেড়ে নিয়ে গেছে। ভাঙন রোধ না করা হলে আমাগো বাকি যা আছে সব চলে যাবে। আমরা গ্রামবাসী ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে চাই। এছাড়া আমরা কোন সাহায্য-সহযোগিতাও পাইনি’। বেশ কয়েকজন কৃষক বলেন, ‘আমাগো ফসলের সকল জমি বিলীন হয়ে গেছে। আমরা এখন কীভাবে বাঁচব। আমাগো কৃষকের কান্নায় কারও কিছু আসে যায় না’।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভাঙনে চরহোগলপাতিয়া গ্রামের সব শেষে হয়ে গেছে। আমি চেষ্টা করছি ভাঙনকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আলীনগর ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান মিলন বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদ ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছি। তবে দুঃখের বিষয় এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করা হবে। আর বিদ্যালয় আবার নতুন জায়গায় নির্মাণ করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।