বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াস’ এর প্রভাবে সীমান্ত নদী ইছামতি, উপকূলীয় নদী খোলপেটুয়া, চুনা, কপোতাক্ষসহ বিভিন্ন নদীর বাঁধ উপচে ও কয়েকটি স্থান ভেঙ্গে পানি ঢুকে এলাকার কয়েকটি মাছের ঘের প্লাবিত হয়। তবে, আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সামান্য।
সরেজমিনে জানা গেছে, গত ২৬ মে বুধবার কপোতাক্ষ নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে গাবুরা ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া, গাঁগড়ামারি ৩নং এলাকায় পাউবো বাঁধ ভেঙ্গে পানি ভিতরে প্রবেশ করে। খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের পানি পদ্মপুকুর ইউনিয়নের অধিকাংশ পাউবো বাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে। এসময় ঝাঁপা, সোনাখালী, পূর্ব ও পশ্চিম পাতাখালীসহ কামালকাটির মাছের ঘের তলিয়ে যায়। দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর গ্রামের বিজিবি ক্যাম্পের সামনে ইছামতি নদীর বেড়িবাঁধ উপচে পড়া পানিতে দুটি মাছের ঘের তলিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্যামনগরের গাবুরা, পদ্মপুকুর ও কৈখালি ইউনিয়নের কয়েকজন প্রভাবশালী ঘের ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় আঘাত না হানায় এলাকায় কোন ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়নি। জোয়ারের পানিতে কিছু টোংঘর ডুবেছিলো। আর ঝড়ের আগাম খবরে অনেক ঘের ব্যবসায়ী মাছ ধরে নেওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হয়েছে। সব মিলিয়ে কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে মাছের। এই ক্ষতি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলি, ফণি, আম্ফান, আইলার চেয়ে বহু অংশে কম। প্রতি বছর ঝড়ের মোকাবেলা করি আমরা উপকুলবাসী। আর পকেট ভরে সরকারের আমলারা। দুর্বল বাঁধগুলো স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে তা রক্ষা করার প্রাণপণ চেষ্টা করেন জনগণ। বেড়িবাঁধ সংস্কার আর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি দেখিয়ে সরকারের বরাদ্দের শতশত কোটি টাকা লুঠপাট করা হয়। চলে সীমাহীন দুর্নীতি। স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ সংস্কার করেন জনগণ, আর বিল তুলে নেয় সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
তারা বলেন, সরকার বিগত ৯ বছরে বেড়িবাঁধ সংস্কারে ১৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বাঁধা হয়নি উপকূলীয় বাঁধ। সাতক্ষীরার উপকূলীয় বেড়িবাঁধ সংস্কারে সরকার প্রতিবছর শতশত কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও অমলাদের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে সেই বাঁধ সংস্কার করা হয়নি। যেকারণে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ভেঙে বাড়িঘর ও সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেন দক্ষিণ জনপদের কয়েক লক্ষ মানুষ।
তারা বলেন, এবারও দুর্নিতিবাজরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি দেখিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ নেওয়ার পায়তারা করছেন। ইতোমধ্যে কোটি টাকার উপর পকেটে ভরেছে আমলারা,এমনই গোপন খবর পেয়েছেন বলে তারা জানিয়েছেন।
এব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের হিসেব নিকেশ চলছে। ৩০ মে রোববার মন্ত্রণালয় থেকে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এই টাকার মধ্যে আশাশুনির ১১ টি ইউনিয়ন ৩৩ লাখ, শ্যামনগরের ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৬ লাখ ও কালিগঞ্জ উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৬ লাখ টাকা বিতরণ করা হবে। জেলা প্রশাসক এস,এম মোস্তফা কামাল এসব টাকা এই তিন উপজেলার ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে বণ্টন করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।