পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘একের ভেতর দুই’ চাষাবাদ দিন দিন বাড়ছে। এই দুই হচ্ছে মাছের সাথে সবজি চাষ। মৎস্য ঘেরের আইলে সবজি চাষে লাভের মুখ দেখার পর চাষিরা সামনের দিকেই হাঁটছেন। এমন দৃশ্য বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার চারদিকে। কালিগঞ্জের অধিকাংশ মৎস্য ঘেরে সবজির চাষাবাদ বাড়ছে। এতে করে স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলা-উপজেলায়ও যাচ্ছে কালিগঞ্জের সবজি।
এক সময় মৌসুমি ধান ও মাছ চাষ করে যাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটত। এখন লাভজনক সমন্বিত সবজি চাষে তাদের মুখে শুধুই প্রশান্তির হাসি। ‘অল্প পুঁজিতে অনেক লাভ’ ফলে উৎসাহিত হয়ে সমন্বিত চাষের দিকে ঝুঁঁকছেন অনেকেই।
কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের অধিকাংশ মৎস্য ঘেরগুলোতে যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজের হাতছানি। ঘেরের আইলে ও ঘেরের আইলের উপরে নির্মিত সারি সারি মাচায় ঝুলছে করলা, ঢেঁড়শ, পুঁইশাক, লাউ, কুমড়া, ঝিঙে আর শসা। বর্ষাকালীন সবজির পাশাপাশি আগাম শীতকালীন সবজি চাষও শুরু করেছেন অনেকে।
উপজেলার নরহরকাটি মৌজায় ছোট-বড় ৯৫টি মৎস্য ঘের রয়েছে। ঘেরের আইলে চাষিরা সবজি চাষ করেছেন। পানিয়া, ঝড়–খামার, রাণীতলা, নেবুখালী, চাতরাসহ বিভিন্ন বিলে শত শত বিঘা জমির মৎস্য ঘেরে মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষাবাদ করা হয়েছে। একই সাথে ঘেরের পাড়ে লাগানো হয়েছে পুঁইশাক, ঢেঁড়স, কুলগাছ ও কলাকচু।
উপজেলার পশ্চিম মৌতলা গ্রামের শাহিনুর রহমান, নরহরকাটি গ্রামের শেখ রায়হান হোসেন, আবু তালেব, পানিয়া গ্রামের অনিক মেহেদী ও খাজাবাড়িয়া গ্রামের মাছুম বিল্লাহ জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য ঘেরে শুধু মাছ চাষ করে আসছিলেন। মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী ইউনিয়নের ঘের ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করে মৎস্য চাষের পাশাপাশি ঘেরের আইলে সবজি চাষের আহŸান জানান।
ওই আহŸানের পর থেকে দুই একজন করে শুরু করে বর্তমানে ইউনিয়নের ৭৮ শতাংশ ঘেরের আইলে সবজি চাষ করে চাষিরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। তাছাড়া রাসায়নিক সার ও কীটনাশকমুক্ত সবজির চাহিদা বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিন ট্রাক ও পিকআপের মাধ্যমে জেলার বাইরের ক্রেতারা সবজি নিয়ে যাচ্ছেন।
মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফেরদাউস মোড়ল জানান, ইউনিয়নে একসময় জলাবদ্ধতার কারণে ঠিকমত ফসল উৎপাদন করা কঠিন বিষয় ছিল। উপজেলা পরিষদের কৃষিবান্ধব চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর নেতৃত্বে ঘেরের আউটড্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। এতে করে পানি নিস্কাশন হওয়ায় পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় এসেছে। ফলে ইউনিয়নে ব্যাপক ফসল উৎপাদন হচ্ছে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলার ৮৭৫ হেক্টর জমির আইলে বিভিন্ন প্রকারের সবজি চাষ হয়েছে। কালিগঞ্জ উপজেলায় ১৩৫ হেক্টর জমির আইলে সবজির চাষ হচ্ছে। আগামীতে এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘেরের আইলে আরও বেশি বেশি সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ হবেন চাষিরা।
কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, উপজেলায় আরও অনেক ইউনিয়নের চাষিরা ঘেরের আইলে সবজি চাষ শুরু করেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে সকলকে আরও আন্তরিকতার সাথে আইলে সবজি চাষের আহŸান করেই চলেছি। আগামীতে মৎস্য ঘেরের আইলে সবজির চাষ আরও বাড়বে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।