Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

বাগেরহাটে এখনো পানিবন্দী ৪ হাজার মানুষ

বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০২১, ৮:৩২ পিএম

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বাগেরহাটের বলেশ্বর, পশুর, পানগুছি, দড়াটানা, ভৈরবসহ নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় শুক্রবারও নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে ডুবে গেছে মাছের খামার, পানের বরজ ও শাকসবজির ক্ষেত। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্থ বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী ৪টি উপজেলা শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপালে এখনো এখনো পানিবন্দী হয়ে রয়েছে প্রায় ৪ হাজার মানুষ। শুক্রবার জোয়ারের পানিতে নতুন করে পশুর নদী তীরবর্তী মোংলা উপজেলার কানাইনগর, চিলা, জয়মনি, বিদ্যারবাহন, শেলাবুনিয়াসহ ১০ থেকে ১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

মোরেলগঞ্জের ছোলমবাড়ীয়া ফেরিঘাট ৪ ফুট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাইনবোর্ড-শরণখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কের যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। এই উপজেলা পানগুছি নদীর দুই তীরের গ্রামগুলোতে এখনো প্রায় ২ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক হিসেবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলার ৩৯ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ২৪ হাজার ৯১৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বাড়িঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৬৯০টি। জেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে শুকনা খাবারসহ ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে জেলা, উপজেলা প্রশাসনসহ কোষ্টগার্ড ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি। এদিকে শরণখোলা উপজেলায় বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা লোকজন রিং বেড়িবাঁধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে। শুক্রবার সকালে রায়েন্দা রাজৈর কলেজ রোডে রাজৈর গ্রামবাসী ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এসময় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারে প্লাবিত পানিবন্দী হয়ে থাকা বেড়িবাঁধের বাহিরের শতশত নারী, পুরুষ ও শিশুরা এসে মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানববন্ধনে খোন্তাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খাঁন মহিউদ্দিন, যুবলীগ নেতা হাসিব বিল্লাহসহ অন্যরা বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে রাজৈর মারকাজ মসজিদ থেকে বান্দাঘাটা পর্যন্ত প্রায় ৮শ পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। এসব পরিবারের লোকজন পারছেনা ঘর থেকে বের হতে, না পারছে রান্নবান্না করে খেতে। বর্তমানে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে তারা। তাই রায়েন্দা খালের মার্কাজ মসজিদ থেকে বান্দাঘাটা পর্যন্ত একটি রিং বাঁধের দাবি জানান তারা।

পানিতে ডুবে থাকছে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র-

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ফুঁসে ওঠা জোয়ারের পানিতে গত ৪ দিন ধরে অথৈই পানিতে ডুবে থাকছে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ‘করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র’। করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রটি মঙ্গলবার থেকে দুই থেকে আড়াই ফুট পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় হরিণ, কুমির ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বাটাগুল বাচকা কচ্ছপের সেডের ‘প্রতিরক্ষা দেয়াল’ (বাইন্ডারি ওয়াল) পানির চাপে ভেঙ্গে পড়লে এই প্রজনন কেন্দ্রের ৬৫৬ টি বন্যপ্রাণী ভেসে যাবার আশংকা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে এই প্রজনন কেন্দ্রে ৭টি শাবকসহ ৪৫ টি হরিণ, ৪টি বাচ্চাসহ ১৮৪টি কুমির ও ৭৯টি বাচ্চাসহ ৪২৭ টি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বাটাগুল বাচকা কচ্ছপ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এই কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাগেরহাট

১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ