মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের শিক্ষাব্যবস্থা একমুখি করার উদ্যোগ নিয়েছে ইমরান খানের সরকার। তবে সমালোচকরা বলছেন, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এ পদক্ষেপে শিক্ষাব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
১৯৪৭ সালে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের কয়েক বছর পর থেকেই পাকিস্তানে শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলাম ধর্মকে বেশি গুরুত্ব দেয়ার উদ্যোগ শুরু হয়। এই প্রবণতা ১৯৫০-এর দশকে কিছুটা বেড়ে ১৯৬০ থেকে ১৯৭০-এর দশকে ক্রমান্বয়ে আরো বাড়তে থাকলেও ১৯৮০-র দশকে সামরিক শাসক জিয়াউল হকের সময়ে তা ব্যাপকতা পায়। ১৯৮৮ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত স্বৈরশাসক জিয়াউল হক পাঠক্রমের ‘ইসলামিকরণই’ শুধু করেননি, বেশ কিছু ক্ষেত্রে ইসলামি আইন কার্যকর করেছেন, বিচারবিভাগে, সরকারি চাকুরিতে ইসলামপন্থিদের নিয়োগ দিয়েছেন, সারা দেশে ইসলাম শিক্ষার প্রতিষ্ঠানও গড়েছেন কয়েক হাজার।
তবে শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়নের দাবিও বরাবরই উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার এই মুসলিম প্রধান দেশটিতে। বহুমুখী শিক্ষাব্যবস্থাকে একমুখি করার দাবিও উঠেছে বারবার। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই ইনসাফ ২০১৮ সালে শিক্ষাব্যবস্থাকে একমুখি করার অঙ্গীকার করে। আশা করা হয়েছিল, এর মাধ্যমে পাঠ্যসূচিতে বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্পকলার মতো চলতি বিশ্বের জন্য অধিকতর প্রযোজ্য বিষয়গুলোর গুরুত্ব বাড়বে। কিন্তু ২০১৯ সালে ইমরান খান সরকার যে পরিকল্পনা ঘোষণা করে, তাতে ধরা পড়ে উল্টোচিত্র। দেখা যায়, পাশ্চাত্যের শিক্ষায় শিক্ষিত সাবেক ক্রিকেটার ও ‘প্লেবয়’ ইমরান খান পাঠক্রমে ধর্মের প্রভাব আরো বাড়ানোর পথেই হাঁটছেন। করোনা সংকটের কারণে এতদিন নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষাব্যবস্থাকে ‘একমুখি’ করার কাজ দৃশ্যত শুরু হয়নি। তবে অচিরেই সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বই ছাপার কাজ শেষ। সেখানে ইংরেজি, উর্দু, সামাজিক শিক্ষাসহ সব বিষয়েই ইসলামিকরণের জোর প্রয়াস দেখতে পাচ্ছেন শিক্ষাবিদরা।
জানা গেছে, প্রথম ধাপে প্রাথমিক শিক্ষায় মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরান পুরোপুরি পাঠ করা বাধ্যতামূলক করা হবে। সঙ্গে নামাজ পড়া এবং বেশ কিছু হাদিস মুখস্থ করানোরও উদ্যোগ নেয়া হবে। এসব পরিকল্পনা কার্যকর করতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্তত দু’জন সনদপ্রাপ্ত হাফিজকে নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। ইসলামাবাদভিত্তিক শিক্ষাবিদ আব্দুল হামিদ নায়ার মনে করেন, ইমরান খান সরকারের শিক্ষাব্যবস্থাকে আরো ইসলামিকরণের এ উদ্যোগ সমাজে জাতিগত বিভেদ আরো বাড়াবে এবং এখনো বিদ্যমান জাতিগত বৈচিত্র্য আরো কমাবে।
ইসলামাবাদের নিউক্লিয়ার ফিজিসিস্ট পারভেজ হুদভয় বর্তমান সরকারের এ উদ্যোগকে ‘অভূতপূর্ব’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, এটা আসলে জেনারেল জিয়াউল হকের সময়কার ইসলামিকরণের প্রয়াসকেও ছাড়িয়ে যাবে। লাহোরের মানবাধিকার কর্মী পিটার জ্যাকব বলেন, ইমরান খান সরকার পাঠক্রমে শতকরা অন্তত ৩০ ভাগ ইসলামি ‘কন্টেন্ট’ রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করে অনেকে এর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সরকার দলীয় সাংসদ মুহাম্মদ বশির খান অবশ্য মনে করেন, ‘আদর্শগতভাবে পাকিস্তান একটি ইসলামি রাষ্ট্র আর তাই এখানে ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমাদের সিলেবাসকে এখনো পুরোপুরি ‘ইসলামি’ করা হয়নি। আমাদের পাঠক্রমের আরো ইসলামিকরণ প্রয়োজন।’ সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।