Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপকূলে অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাস

বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দি লাখো মানুষ : শিশুসহ মৃত্যু ৭

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০২১, ১২:০৪ এএম

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও ভরা পূর্ণিমা জোয়ের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাওয়া জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে উপক‚লের ২৭টি উপজেলা। এদের মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষীপুর জেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকায় প্রথম পর্যায়ে বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে। পরবর্তীতে নদী উত্তাল হয়ে উঠলে বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। সেখান থেকে লোকালয়ে নদীর নোনা পানি প্রবেশ করে। প্লাবিত হয় হাজারো গ্রাম। পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ । হুমকিতে বিভিন্ন শহর রক্ষা বাঁধও। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত শিশুসহ ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে পানিতে ডুবে বরিশালের বাকেরগঞ্জে দুই, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এক, বরগুনার বেতাগীতে তিন বছরের একটি শিশু, ভোলার লালমোহন উপজেলায় এক রিকশাচালক ও বড় ফেনী নদীতে এক জেলে।

প্রবল ঢেউয়ে শিমুলিয়ার ২নং ফেরি ঘাটের পল্টন ভেঙে দুই টুকরো হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যোগাযোগ। তলিয়ে যায় ফসলি জমিসহ মৎস্য খামারগুলো। এতে শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে খামারিরা জানিয়েছে। নিঃস্ব হয়ে লাখো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।
বরিশাল : বরিশালসহ উপক‚লে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় জোয়ারের প্লাবিত হয়েছে। বহু মানুষ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আশ্রয় কেন্দ্রে মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগেই আশ্রয় নিয়েছেন। সাগর কিছুটা উত্তাল রয়েছে। কুয়াকাটা সাগর সৈকতে গর্জনের সাথে ৫Ñ৭ ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়ছে। সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধের পাশাপাশি দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় প্রায় সব মাছধরা ট্রলার ও নৌকা নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। পায়রা বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদী বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
খুলনা : খুলনার কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপক‚লে বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। প্রবাহিত হয়েছে বহু গ্রাম। লবণপানি প্রবেশ করায় লোকালয়, ফসলি জমি ও মৎস্য ঘের হুমকির মধ্যে পড়েছে।
কক্সবাজার : সমুদ্রে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ। কুতুবদিয়া, টেকনাফের শহপরীর দ্বীপ, ৩/৪ ফুট জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় শত শত ঘরবাড়ি ও লবণ মাঠ। প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে চারপাশ। এতে শুটকি পল্লীসহ ব্যাপক জনবসতি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ঝালকাঠি : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ার উপজেলার বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ফুট বেড়ে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ৯ গ্রাম। তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের। এতে আতঙ্কে রয়েছেন বাঁধ ভাঙা এলাকার বাসিন্দারা।
ভোলা : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ভোলার লালমোহন উপজেলার চরসকিনা গ্রামে ভেঙে পড়া গাছের চাপা পড়ে মো. আবু তাহের (৪৮) নামে এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত ১২ টায় ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত আবু তাহের একই এলাকার পাটোয়ারী বাড়ির গফুর আলী পাটোয়ারীর ছেলে।
পটুয়াখালী : বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পটুয়াখালীতে প্রাথমিক হিসেবে কমপক্ষে ১৭৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে । প্লাবিত হয়েছে ফসলের ক্ষেতসহ মৎস সম্পদ। জেলা কন্ট্রোলরুম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, জেলার রাঙ্গাবালীতে ৩৮টি গ্রাম ,কলাপাড়ায় ৭৬ টি গ্রাম, দশমিনায় ১২টি গ্রাম, মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ১৫টি গ্রাম, গলাচিপায় কমপক্ষে ১০টি গ্রাম,বাউফলের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, দুমকী উপজেলায় ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মৎস বিভাগের হিসেবে পটুয়াখালীতে উচ্চ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে ৩২০০ পুকুর ও ঘের। যার মধ্যে ২৬০০ পুকুর ও ৬০০ ঘের। ক্ষতির পরিমান ৫০ কোটি টাকা।
ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের আড়মুখী গ্রামে হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছে অর্ধশত বাড়িঘর। উপড়ে গেছে শত শত গাছপালা। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সদর উপজেলার আড়মুখী গ্রামে এ ঝড় আঘাত হানে। এতে অর্ধ-শত কাচা-পাকা বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। উপড়ে যায় শতশত গাছপালা। ঝড়ের কবলে পড়ে নারী ও শিশুসহ ৩ জন আহত হয়েছে।
সাতক্ষীরা : শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জ, কেখালি ইউনিয়নের অধিকাংশ পাউবো’র বাঁধ উপচে নোনা পানি লোকালয়ে ঢুকেছে। এছাড়া, দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর গ্রামের বিজিবি ক্যাম্পের পাশে ইছামতি নদীর বেড়িবাঁধ উপচে পানি ঢুকে পড়ে গ্রামে। এতে প্লাবিত হয়েছে কয়েকটি চিংড়ি মাছের ঘের। এর কাছাকাছি সদর উপজেলার হাড়দ্দহা গ্রামের পুরনো ¯øুইচ গেটের পশ্চিম পাশে বাঁধের একটি অংশ ভেঙে গ্রামে পানি ঢুকছে।
বরগুনা : বরগুনায় সাগর ও নদীতে জোয়ারে পানি বৃদ্ধি ও ২০টি স্থানে বাঁধ ভেঙে দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুর্গত এলাকার লক্ষাধিক পরিবার। তলিয়ে গেছে শত শত গ্রাম, বাড়িঘর, নিম্নাঞ্চলের আবাসন প্রকল্প, ফসলি জমি, পুকুর ও ঘের। অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের দুটি ফেরির (আমতলী-পুরাকাটা ও বাইনচটকী-বড়ইতলা) পন্টুন তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নপ্রায়। এদিকে, বরগুনার বেতাগীতে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে ইমামুল হাসান নামের তিন বছরের একটি শিশু মায়ের কোল থেকে পানিতে পড়ে মারা গেছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে দক্ষিণ কালিকাবাড়ী এলাকার কালিকাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে। ইমামুল হাসান (৩)। সে বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ কালিকাবাড়ি এলাকার মো. স্বপনের ছেলে।
হিজলা (বরিশাল) : হিজলায় পানি ফসলের মাঠ ও বসত বাড়িতে ডুকে পড়েছে। এতে হরিনাথপুর বদরপুর বদরটুনি ছয়গাও লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা পুরাতন হিজলা বন্দর ও ভাউসিয়া এলাকায় ভাঙন সৃষ্টি হয়। মাছ ধরার নৌকা, খেয়া ও লঞ্চ নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে।
ইন্দুরকানী(পিরোজপুর) : ইন্দুরকানীতে বাঁধ ভেঙে বাজারসহ গ্রামের কাচা ঘর-বাড়ি, রবি শস্য, ধানের বীজপাতা তলিয়ে যায়। এ ছাড়াও মৎস্য খামারগুলো তলিয়ে চাষের মাছ বের হয়ে যায়। যার ফলে আতঙ্কে রয়েছে চাষির।
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অন্তত ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে দুই দফা পানিতে প্রবেশ করে তলিয়ে গেছে মাছের ঘের। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছে এলাকার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭৬টি গ্রাম। এছাড়া পুকুর,মৎস্য ঘের ও ঘর-বাড়ি প্লাবিত হয়েছে ১৪ হাজার ৭১০টি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাবনাবাদ নদীর পানি প্রবেশ করে লালুয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ধানখালী ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ভেঙে ৩ গ্রাম, মহিপুর ইউনেয়নের ৩ গ্রাম ও চম্পাপুর ইউনিয়নের ৪ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আরো কয়েকটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য উন্নয়ন কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ইতোমধ্যেই ১৬শ’ পুকুর ও দুইশত ৮২টি সাগরের পানিতে প্লাবিত হয়। এর জায়গার পরিমান ছয়শত ১৬ একর । যার আর্থিক ক্ষতির পরিমান প্রায় দুই কোটি টাকা।
কমলনগর (লক্ষীপুর) : জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে লক্ষীপুরের কমলনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চল। গতকাল বুধবার বিকেল থেকে অব্যাহত জোয়ারে উপজেলার নদীর তীরবর্তী এলাকা চর ফলকন, পাটারির হাট, সাহেবের হাট, চর কালকিনি ও চর লরেঞ্চ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক পরিমানে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অসংখ্য ঘর বাড়ি ধসে পড়ে, মৎস ঘের, পুকুরের মাছ ছেড়ে যাওয়া, গবাদি পশু ভেসে যাওয়া,গাছপালা বিনষ্ট হওয়া, ফসলের ক্ষতিসহ তীরবর্তী মানুষের চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) : প্রবল ঢেউয়ে শিমুলিয়ার ২নং ফেরি ঘাটের পল্টন ভেঙে দুই টুকরো হয়েছে। পরে ছোট টুকরো পল্টনটি বেধে রাখা হয়। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে একটি রো-রো ফেরি ছাড়া হলেও তারপর থেকেই শিমুলিয়া ঘাট থেকে আর কোন ফেরি ছাড়া হয়নি
মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) : ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে চরখালী বাজারের দক্ষিণ পাশের্^ প্রায় ৮০ ফুট ও বাসন্ডা গ্রামের হওলাদার বাড়ি সংলগ্ন পায়রা নদীর বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে চরখালী, মেন্দিয়াবাদ ও রানীপুর ও বাসন্ডা এই চারটি গ্রাম ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৬ ফুট পানি বেড়ে সুবিদখালী বাজার, পূর্ব-সুবিদখালী, কপালভেরা গ্রাম, মাজার এলাকা, কালিকাপড় ও রামপুরা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ওই সব গ্রামের প্রায় ৬ হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে প্রায় ১০০ একর জমির রোপা আউশ ধান। এতে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে চাষিরা।
মোরেলগঞ্জ(বাগেরহাট) : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পানিতে ডুবে জিনিয়া আক্তার(৪) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গতকাল ১১টার দিকে উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামে। শিশু জিনিয়া ওই গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক আবুল কালাম গাজীর মেয়ে।

নাজিরপুর (পিরোজপুর) : উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় কমপক্ষে ৩০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। শ্রীরামকাঠী ঐতিহ্যবাহী বন্দর, গাঁওখালী, দেউলবাড়ী দোবড়া, মালিখালী, দীর্ঘা,সেখমাটিয়া, নাজিরপুর সদর, কলারদোয়ানিয়াতে ইয়াসের প্রভাবে ব্যাপক ভাবে প্লাবিত হয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৬ ফুট পানি বেড়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘর বাড়ি তলিয়ে গেছে। এসব নি¤œাঞ্চলের প্রায় ৫ হাজারের বেশি পরিবার দূর্ভোগে পড়েছেন। রয়েছেন পানিবন্দি। পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে বন্দরের দোকানপাট। এতে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে ব্যবসায়ীরা। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়ায় কিছু কিছু এলাকায় যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) : বরিশালের বাকেরগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল উপজেলার পৃথক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। মৃত শিশুরা হলো- উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ঢালমারা গ্রামের হাফিজুর রহমানের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (৩) ও গারুরিয়া ইউনিয়নের রুনসী পশুরি গ্রামের আজগর আলীর মেয়ে আজওয়া আক্তার (৩)। সুমাইয়ার স্বজনরা জানান, জোয়ারের পানিতে বসতবাড়ির আশপাশ পানিতে প্লাবিত হয়। পরিবারের সদস্যদের অগোচরে সুমাইয়া ঘর থেকে বের হয়। তাকে না পেয়ে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে পুকুর পাড়ে পানিতে ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সোনাগাজী (ফেনী) সংবাদদাতা : মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বড় ফেনী নদীতে এক জেলের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফেনী প্রেরণ করেন।

বামনা (বরগুনা) : বরগুনার বামনায় নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এদিকে দক্ষিণ ডৌয়াতলা গ্রামের মতি জোমাদ্দারের পুত্র নান্না জোমাদ্দার (৩৫)মাছ শিকার করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এলাকা বাসী ও থানা সূত্রে জানা যায় নিহত নান্না গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বাড়ির পাশের হোতাখালে মাছ শিকার করতে গেলে হঠাৎ খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করে।



 

Show all comments
  • Muhammed Ejaj Chowdhury ২৭ মে, ২০২১, ১২:৪৫ এএম says : 0
    উন্নত বিশ্বে পরিবেশ,বায়ুমন্ডল দূষনের কারণে ব্যয়াপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সমুদ্র তীরবর্তি দেশ সমুহ! এর মধ্যে এই সমুদ্র তীরবর্তি দেশের মানুষেরা আরো ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে এই দেশগুলোকে,অবাদে বনভূমি উজাড় করে,বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের বৈর্য,কালোধুয়ো, বাতাসে কার্বনডাই-অক্সাইড নির্গমন,আরো কত কি! উন্নত বিশ্বে পরিবেশে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সমুদ্র তীরবর্তি দেশসমূহে টেকসই পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা মাধ্যমে প্রচুর অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে,বিশেষ করে আমাদের দেশে এর বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বাস্তবতা ভিন্ন! দুক্ষের বিষয় আমরা যেনো প্রতিনিয়ত মৃত্যর মিছিলে প্রতিযোগিতা করছি!
    Total Reply(0) Reply
  • Nasreen Hossain ২৭ মে, ২০২১, ১২:৪৫ এএম says : 0
    মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে নিরাপদ রাখুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Alamin Ahmed ২৭ মে, ২০২১, ১২:৪৬ এএম says : 0
    অনেকদিন যাবত প্রচন্ড রোদ, তাপদহন, ভ্যাপসা গরম, গ্রামীন এবং শহরের জন জীবনকে করে তুলেছে অতিষ্ঠ। এটাই হলো বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন। দিন দিন বায়ুতে কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিমান অনেক বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপর দিকে অক্সিজেন এর পরিমান কমছে। এসবের জন্যই আমরা নিজেরাই দায়ী এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন অবকাঠামো এবং রাষ্ট্র প্রধানদের দেয়া বিভিন্ন ভুল দিক নির্দেশনা দায়ী। আমরা এখনো অনেকে এ বিষয়ে অবগত নই আমরা ভাবি এমনিতেই রোদ ও গরম এবং আবহাওয়া এরকম। একটু লক্ষ্য করে দেখুনতো আমাদের দেশে ছয়টি ঋতু ছিলো কিনা। হুম ছয়টি ঋতুতে আমরা ছয় রকমের পরিবেশের সাথে অভ্যস্ত ছিলাম। কতোই না মনোমুগ্ধকর পরিবেশ ছিলো। এখন কোথায় গেলো সেদিন। এখন বাংলাদেশে কেবল দুইটি ঋতু,হুম এটাই বাস্তব। এভাবে চলতে থাকলে সামনে আরো পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাবে। যার মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলো অন্যতম। এথেকেই ধীরেধীরে সাগরে নিম্ব চাপের সৃষ্টি হয়ে ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো,জলোচ্ছ্বাসে পরিণত হয়। বিজ্ঞান গবেষণায় ধারনা করা হচ্ছে বাংলাদেশে ৪০/৫০ বছরের মধ্যে যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে সাগরের উপকূলীয় এলাকাসহ বাংলাদেশের অনেক জেলাসমূহ পানির নিচে তলিয়ে যাবে। প্রতিনিয়ত এখন মেরুঅঞ্চল এর বরফ গলছে। যেটা কিনা সাগর, মহাসাগরের পানি অনেক বেশি বৃদ্ধি করবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর মুখোমুখি হতে হবে। আমরা মানুষ হিসেবে এতটাই বোকা যে সবাই অনায়াসে বলি নিজে বাঁচলে নিজের বাপের নাম। এদেশকে যদি আমরা রক্ষা করতে না পারি তাহলে আমাদের কোন অধিকারই নেই এদেশ ও পরিবেশকে ধ্বংস করার। এই সমাজে জম্ন নিয়ে প্রতিনিয়ত সমাজের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছি। কিন্তু কি দিলাম এই সমাজকে আমরা? প্রশ্ন রয়ে গেলো আপনাদের কাছে??
    Total Reply(0) Reply
  • Shahid M S Zaman ২৭ মে, ২০২১, ১২:৪৬ এএম says : 0
    আল্লাহ মাপ করো আমাদের রাষ্ট্র আছে কিন্তু অভিভাবক নেই তারা শুধু শোষণের জন্যই জন্ম নিছে এই দেশে
    Total Reply(0) Reply
  • আহমাদ নকীব ২৭ মে, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
    আল্লাহ তায়ালা আমাদের দেশকে সকল বিপদ থেকে রক্ষা করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Maruf Billa ২৭ মে, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
    বাংলাদেশ থেকে কি চলে গেছে, সারাদিন তো তেমন বৃষ্টি হইনি
    Total Reply(0) Reply
  • Ahmed Jubayer ২৭ মে, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
    এগুলো আল্লাহর গযব । আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দাও এবং হেফাজত করুন । আমিন
    Total Reply(0) Reply
  • Rofique Khan ২৭ মে, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
    আল্লাহ হেফাজতের মালিক যে আল্লাহ সেকেন্ডে পৃথিবী ধ্বংস করতে পারে সে আল্লাহ সাগরের সবকিছু তুলে জমিনে নিক্ষেপ করতে পারে। নিশ্চয়ই আমার আল্লাহ সর্বশক্তিমান
    Total Reply(0) Reply
  • Shahid Gazi ২৭ মে, ২০২১, ১২:৪৮ এএম says : 0
    আল্লাহ সবাইকে ধৈর্য ধরার ক্ষমতা দেও
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ নাসির উদ্দীন ২৭ মে, ২০২১, ১০:৫১ এএম says : 0
    আল্লাহ তুমি বাংলাদেশ থেকে দূযোর্গ ও করনা হতে রক্ষা কর। আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ