Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পিছিয়ে যাচ্ছে টোল আদায়

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে : শেষ হয়নি অবকাঠামো নির্মাণকাজ : নিয়োগ হয়নি অপারেটর

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

দেশের মহাসড়কগুলোতে টোল আদায়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই অংশ হিসেবে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে আগামী ১ জুলাই থেকে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। তবে টোল প্লাজার নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় টোল আদায় শুরুর কার্যক্রম পিছিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সেপ্টেম্বরের আগে টোল প্লাজার নির্মাণকাজ শেষ হবে না। নির্মাণকাজ শেষ করার পাশাপাশি অপারেটর চূড়ান্ত করতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে।

গত বছরের মার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মহাসড়কটিতে বর্তমানে যাতায়াতের জন্য কোনো যানবাহনকে টোল দিতে হচ্ছে না। তবে এক্সপ্রেসওয়ের মধ্যে থাকা ধলেশ্বরী সেতু-১, ধলেশ্বরী সেতু-২ ও আড়িয়াল খাঁ সেতু থেকে টোল আদায় করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।

এদিকে, সরকারের রাজস্ব বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহাসড়কগুলোতে টোল আদায়ের নির্দেশ দেন। তার নির্দেশনার অংশ হিসেবে দেশের প্রথম ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে মহাসড়কে টোল চালুর করার সিদ্ধান্ত নেয় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। প্রাথমিকভাবে ঘোষণা দেয়া হয়, চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে এই এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় শুরু হবে। কিন্তু এখনও টোল আদায়ের জন্য টোল প্লাজা ও অপারেটর নিয়োগ না হওয়ায় জুলাই থেকে এটি কার্যকর করা যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১১ মে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে এক্সপ্রেসওয়েটির টোল অবকাঠামো নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা ও টোল অপারেটর নিয়োগের বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, এক্সপ্রেসওয়েটির ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের জন্য টোল প্লাজা নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু পদ্মা সেতুর পর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত অংশটির জন্য টোল প্লাজার নির্মাণকাজ এখনো চলমান। কাজ শেষ করতে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। টোল প্লাজার নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় ১ জুলাই থেকে টোল আদায় কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে সংশয়ের কথা জানান প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

তবে টোল আদায় কার্যক্রম শুরুর দিনক্ষণ পিছিয়ে গেলেও এক্সপ্রেসওয়েটির জন্য টোলহার চূড়ান্ত করে ফেলেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। প্রতি কিলোমিটার যাতায়াতের জন্য ভিত্তি টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। যদিও শুরুতে কিলোমিটারপ্রতি ২০ টাকা ১৮ পয়সা টোল আদায়ের প্রস্তাব দিয়েছিল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত সাময়িক সময়ের জন্য কিলোমিটারপ্রতি ৯ টাকা ৯০ পয়সা ভিত্তি টোল আদায়ের প্রস্তাব দেয় সংস্থাটি। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কিলোমিটারপ্রতি ভিত্তি টোল ১০ টাকা চূড়ান্ত করেছে মহাসড়ক বিভাগ।

চূড়ান্ত করা টোলহার অনুযায়ী, পুরো এক্সপ্রেসওয়েটিতে যাতায়াতের জন্য একটি ট্রেইলারকে টোল দিতে হবে ১ হাজার ৩৭৫ টাকা। একইভাবে ভারী ট্রাক থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, মাঝারি ট্রাক থেকে ৫৫০, বড় বাস থেকে ৪৯৫, ছোট ট্রাক থেকে ৪১২, মিনিবাস থেকে ২৭৫, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ থেকে ২২০, সেডান কার থেকে ১৩৭ টাকা ৫০ পয়সা ও মোটরসাইকেল থেকে ২৭ টাকা ৫০ পয়সা টোল আদায় করা হবে।
এক্সপ্রেসওয়েটি থেকে টোল আদায়ের জন্য এরই মধ্যে একটি দরপত্র আহ্বান করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। তবে দরপত্র আহ্বান করা হলেও টোল আদায়ের জন্য কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনকে নিযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। কর্মকর্তারা জানান, পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনকে। একই প্রতিষ্ঠানকে যদি এক্সপ্রেসওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের দায়িত্ব দেয়া হয়, তাহলে টোল আদায়ের কাজটি ভালোভাবে সমন্বয় করা সম্ভব হবে। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে একাধিক সভাও করেছেন মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, এক্সপ্রেসওয়েটিতে টোল আদায়ের পাশাপাশি সেটির রক্ষণাবেক্ষণ ও আইটিএস (ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম) গড়ে তোলা হবে। এজন্য অভিজ্ঞ ও উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে নিযুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আবদুস সবুর বলেন, টোল আদায় করা হবে শুধু চার লেনের এক্সপ্রেসওয়েতে। ধীরগতির লেন ব্যবহারের জন্য কোনো যানবাহনকে টোল দিতে হবে না। তবে মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের টোল প্লাজার কাজ এখনো শেষ হয়নি। আমরা আশা করছি আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এ কাজ শেষ হয়ে যাবে। এর পরই টোল আদায় শুরু করা হবে।



 

Show all comments
  • Md Akram Babu ২৭ মে, ২০২১, ১১:৪৬ এএম says : 0
    ঢাকা থেকে সব বিভাগীয় শহর ১০ লেনে উন্নতি করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া দরকার সরকারের ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nasir Uddin ২৭ মে, ২০২১, ১১:৪৮ এএম says : 0
    bah...ki sundor...INDIA free transit subidha pabe..r amr desher manush tk diye gari chalabe. Oshadharon.
    Total Reply(0) Reply
  • A HM Shahrier ২৭ মে, ২০২১, ১১:৪৯ এএম says : 0
    আমরা যে শহরে আছি সেখানের বাসাবাড়ির গলির ও টোল আদায় শুরু করে দেন।হিরক রাজার দেশ।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Mannan ২৭ মে, ২০২১, ১১:৪৯ এএম says : 0
    মহাসড়কে টোল নেয়ার মানে হলো জনগণের উপর আরেকটা বোঝা চাপিয়ে দেওয়া।টোলের কারণে দ্রব্য মুল্য বৃদ্ধি পাবে। ভাড়া বৃদ্ধি পাবে, জনগণের সরকার হলে অবশ্যই জনগণের কথা চিন্তা করতো।
    Total Reply(0) Reply
  • Shadek Hossain ২৭ মে, ২০২১, ১১:৫১ এএম says : 0
    এরপরে দেশে বসবাস করতে হলে দিতে হবে টোল
    Total Reply(0) Reply
  • Jubayer Alam Maruf ২৭ মে, ২০২১, ১১:৫৭ এএম says : 0
    কিছুদিন পর প্রাকৃতিক কর্ম সম্পাদন করলেও বোধহয় ট্যাক্স দেওয়া লাগতে পারে!
    Total Reply(0) Reply
  • Amirul Khan ২৭ মে, ২০২১, ১১:৫৮ এএম says : 0
    জনগণের টাকায় সড়ক বানিয়ে সেই সড়কে আবার জনগণের কাছ থেকে শোষণ করা এটা মারাত্মক অন্যায় হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টোল আদায়

১৩ জুলাই, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ