Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরগুনার ২০ জায়গায় বেড়িবাঁধ ভেঙে দু শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০২১, ২:১০ পিএম

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের চাপে বরগুনার বিভিন্ন এলাকার অন্তত ২০টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বুধবার (২৬ মে) সকালের জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে এসব গ্রাম প্লাবিত হয়।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দিন ও রাতের জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে ও উপচে পড়ে প্লাবিত হয় বরগুনার শতাধিক গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুর্গত এলাকার লক্ষাধিক পরিবার।

বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, জেলার প্রধান তিনটি নদী পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালীতে আজ ৩.৫৮ মিটার উচ্চতায় বিপদসীমার ১২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার সকালে বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ও রাতে বিপদসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে।

বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের লতাবাড়িয়া এলাকার গোলাম সরোয়ার বলেন, মঙ্গলবার রাতের জোয়ারের চাপে আমাদের এলাকার বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয় পানি প্রবেশ করে। আর আজ সকালে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে আমাদের এলাকার পাঁচ হাজারের বেশি পবিরার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এছাড়াও তলিয়ে গেছে আউশ ধানের বীজতলাসহ বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠ।

একই এলাকার নুরজাহান বেগম বলেন, রাতে ঝড়ে ঘরের সব মালামাল ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। রাতে যে বাড়ি থেকে বের হয়েছে এরপর এখন পর্যন্ত আর ঘরে প্রবেশ করতে পারিনি। সকালের জোয়ারের পানি ছিল রাতের চেয়েও বেশি। গত পাঁচ বছরে আমাদের এখানে বেড়িবাঁধের উপর এক ইঞ্চি মাটি কেউ দেয়নি। এজন্যই আমাদের এই দুর্ভোগ।

বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবনগোলা এলাকার বাসিন্দা সানু মৃধা বলেন, আমাদের এলাকার বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয় পানি প্রবেশ করেছে। এতে অন্তত পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তাই পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্লাবিত হয়েছে সহস্রাধিক পরিবার।

সদর উপজেলার আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা দুলাল বলেন, পায়রার নদীর জোয়ারের চাপে মঙ্গলবার সকালে আমাদের এলাকার অন্তত ৩০ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। সেই থেকে দিনে দুইবার এ এলাকার ১২ প্লাবিত হচ্ছে।

বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়ছার আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আগেই বরগুনায় ২৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের চাপে এসব বাঁধ দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আমরা এসব ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের জন্য কাজ শুরু করেছি।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। এছাড়াও দূর্গত এলাকার মানুষের জন্য পর্যাপ্ত সহায়তা মজুদ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবং পরিবারের তালিকা প্রস্তুতের কাজও শুরু করেছিলেন। এটা সম্পন্ন হলে তাদেরকে সহায়তা প্রদান করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ