বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সকল জটিলতার অবসান ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো ভৈরব সেতুর নির্মাণ কাজ। ২৫নং পিলারের টেস্ট পাইলিংয়ের মধ্য দিয়ে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে খুলনাবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এবং বহু আকাঙ্খিত ভৈরব সেতুর কাজ। দুপুর সোয়া ১২টায় সেতুর পূর্ব সাইড দিঘলিয়া উপজেলার দেয়ারা ইউনাইটেড ক্লাব সংলগ্ন ঈদগাহের মাঠে ২৫নং পিলারের টেস্ট পাইলিংয়ের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে ভৈরব সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাশন লিমিটেড। টেস্ট পাইলিং কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেতু বাস্তবায়নকারী সংস্থা খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ, উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী সড়ক বিভাগ-২ মো. বেলায়েত হোসেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী সড়ক বিভাগ-২ মো. রাশিদুর রেজা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী অসিত কুমার হালদার, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের প্রতিনিধি মাহাফুজা শাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এমএ রিয়াজ কচি ও মো. হাফিজুর রহমান, স্থানীয় এমপির প্রতিনিধি সৈয়দ জামিল মোর্শেদ মাসুম প্রমুখ।
২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর ‘ভৈরব সেতু’ নামে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। এরপর ২০২০ সালের ২৭ জুলাই খুলনা সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) এর খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ভৈরব নদীর উপর সেতু নির্মাণ কাজের দরপত্র আহবান করেন। প্রক্রিয়া শেষে ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (করিম গ্রুপ) নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভৈরব সেতুর নির্মাণ কাজ দেয়ার বিষয়ে অনুমোদন দেয়া হয়। এর ১৩ দিন পর ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। কার্যাদেশ পাওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুর পূর্ব সাইড দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনাইটেড ক্লাব মাঠে অফিস বেজ ক্যাম্প ও স্টক ইয়ার্ড তৈরি করে সেতুর ইকুইপমেন্ট স্টক করতে শুরু করে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের ছাড়পত্র, কেডিএ, পরিবেশ অধিদফতর, নগর উন্নয়ন অধিদফতরের ছাড়পত্র এবং সেতুর এলাইমেন্ট (লে আউট) না পাওয়ার কারণে কার্যাদেশ পাওয়ার পরও সেতুর তৈরির কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৬ মাস অপেক্ষা করতে হয়। ইতোমধ্যে উপরোক্ত সকল দফতরের (এনওসি) ছাড়পত্র মিলেছে। বাকি রয়েছে শুধু জমি অধিগ্রহণের ছাড়পত্র যা খুলনা জেলা প্রশাসকের (এল এ) শাখায় প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
সওজ সূত্রে জানা যায়, ভৈরব সেতুর পিলার বসবে মোট ৩০টি। এর মধ্যে নদীর পশ্চিম সাইড অর্থাৎ নগরীর কুলি বাগান থেকে রেলিগেট ফেরিঘাট পর্যন্ত ১ থেকে ১৪নং পিলার বসবে। এই অংশের প্রথম পিলারটি বসবে নগরীর কুলিবাগান আকাক্সক্ষা পাট গোডাউনের কর্নারে। ৫ এবং ৬নং পিলারের মাঝখান দিয়ে রেললাইন ক্রস করবে। এরপর পর্যায়ক্রমে ৭ এবং ৮নং পিলার বসবে। ৯ থেকে ১৩নং এই ৫টি পিলার বসবে নগরীর রেলিগেট ঢাকা ট্রেডিং হাউজ লিমিটেডের অভ্যন্তরে। এর ফলে রফতানিকারক এ প্রতিষ্ঠানটি ভাঙ্গা পড়বে। ১৭ থেকে ২৮নং পিলার বসবে ভৈরব নদীর পূর্ব সাইড অর্থাৎ দিঘলিয়া উপজেলার নগর ঘাট এবং বানিয়াঘাট ফেরিঘাট সংলগ্ন মধ্যবর্তী স্থান থেকে উপজেলা সদরের কাছে কুকুরমারা পর্যন্ত। পশ্চিম পাশের নদীর পাড় থেকে ৪২ মিটার ভিতরে ১৫নং পিলার এবং পূর্ব পাশে নদীর পাড় থেকে ১৮ মিটার ভিতরে ১৬নং পিলার বসবে।
এছাড়া নদীর উভয় দিকে যেখান থেকে সেতুর স্লব শুরু হবে সেখানে দুটি এবাটমেন্ট বসবে। নদীর ভেতর কোন পিলার বসবে না। ১৫ এবং ১৬নং পিলারের উপর ১০০ মিটার স্টিলের সিটে বসবে নদীর উপর মূল সেতুটি। নেভিগেশনের জন্য সেতুর নীচ দিয়ে যাতে অনায়াসে কার্গো এবং জাহাজ চলাচল করতে পারে সেজন্য মূল ব্রিজের স্নব বটম জোয়ারের পানি থেকে ৬০ ফুট উঁচু হবে। কুকুরমারা থেকে উপজেলা সদর পর্যন্ত ৩৩ ফুট চওড়া অ্যাপ্রোচ রোড হবে। এছাড়া খুলনা যশোর রোড থেকে ব্রিজে ওঠার জন্য নগরীর মহসিন মোড়ে একটি ইন্টারসেকশন বা (জংশন) তৈরি করা হবে।
২০২২ সালের ২৫ নভেম্বরের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য হবে ১ দশমিক ৩১৬ কিলোমিটার। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৩ কোটি টাকা। দিঘলিয়া মহেশ্বরপাশা এবং দেবনগর মৌজার ১৭ দশমিক ৪৯ একর ৭ দশমিক ০৮ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮১ কোটি টাকা। বাকি টাকা সেতু সংক্রান্ত অন্যান্য কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।