Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

অরক্ষিত চাপাই সীমান্ত, করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, শনাক্ত হয়েছে ভারতীয় ধরন

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৩ মে, ২০২১, ১:৪২ পিএম

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইবাবগঞ্জ থেকে আসা করোনা রোগী বেড়েই চলেছে। বর্তমানে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর অর্ধেকেরও বেশি এখন চাঁপাইনাববগঞ্জের। শংকার কথা হলো এ জেলায় করোনার ভারতীয় ধরণ শনাক্ত হয়েছে। এমন ভয়ানক পরিস্থিতিতে শনিবার জরুরি সভা করেছে রামেক হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদ।
সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, ভারত থেকে মানুষ পদ্মা ও মহানন্দা নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এর মধ্যে মহানন্দা প্রায় শুকিয়ে গেছে। এই দিক দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা এখন খুব সহজ। আর শিবগঞ্জ উপজেলা সীমান্ত পুরোটা সুরক্ষিত নয়। এ ব্যাপারে তারা বিজিবি এবং পুলিশকে নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। আর চাঁপাইনাববগঞ্জে লকডাউনের বিকল্প নেই। এছাড়া বৈধভাবে যে মানুষগুলো চাপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত হয়ে দেশে ঢুকছে, তাদের পরীক্ষারও কোনো ব্যবস্থা নেই। এটা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোগীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া এবং সীমান্ত বন্ধ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া রাজশাহী সদর হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও রামেক হাসপাতালে আরও এক হাজার শয্যা বৃদ্ধিরও প্রস্তাব করা হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। সভায় হাসপাতালে করোনা রোগীর বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়।
তাতে দেখা যায়, শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত হাসপাতালে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ১৪৬ জন। এর মধ্যে শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোগীই ছিলেন ৭৭ জন। গত শুক্রবার রাতে দুইজন রোগী হাসপাতালে মারা গেছেন। আগের দিন হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ছিল ১৩৭ জন।
সভায় এমপি ফজলে হোসেন বাদশা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংলগ্ন ভারতীয় সীমান্ত বন্ধ রাখার প্রস্তাব করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন হয়। এ নিয়ে হাসাপাতালের পরিচালক রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারকে একটি চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউন করার প্রস্তাব করা হয়। সেখানকার রোগীর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া হাসপাতালে আরও এক হাজার শয্যা বৃদ্ধির জন্য নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। আর রামেক হাসপাতাল থেকে সাধারণ রোগীদের রাজশাহীর সাবেক সদর হাপসপাতালে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই হাসপাতালে অক্সিজেন সাপোর্ট নেই বলে সেখানে অর্থপেডিকসহ দুইটি সাধারণ ওয়ার্ডের রোগী স্থানান্তর করা হবে। রামেক হাসপাতালে সেই জায়গা করোনা রোগীদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। এতে করোনার শয্যা বাড়বে।
রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ মে এই হাসপাতালে করোনা রোগীর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৫৭ জন। কিন্তু ঈদের আগে ও পরে থেকেই আবার রোগী বাড়তে শুরু করে। ঈদের আগে ১২ মে রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয় ৭৭ জন। ঈদের পর থেকে রোগী বাড়তে শুরু করে প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন করে রোগী ভর্তি হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোগী সবচেয়ে বেশি আসছেন। গত মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১১ জনকে পজিটিভ পাওয়া গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সবচেয়ে ভারতীয় সীমান্তবর্তী উপজেলা শিবগঞ্জের রোগী বেশি। সেদিন এই উপজেলার ৩১ জন করোনা রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।
সভা শেষে এমপি ফজলে হোসনে বাদশা বলেন, তিনি সদ্য করোনা থেকে উঠেছেন। এখন অন্যদের বাঁচানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। এই হাসপাতালে আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোগীর চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। তাদের জন্য একটা বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানো হচ্ছে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম ইয়াজদানী জানান, সভায় গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি দ্রুত প্রস্তাবনাগুলো চিঠি আকারে পাঠাবেন। সভায় হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগর সিনিয়র সহসভাপতি শাহীন আক্তার রেণী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ